For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

খোলা আকাশের নিচে প্রতিবন্ধী ছেলে, নাতী ও স্বামীকে নিয়ে আছিয়ার বসবাস

Published : Tuesday, 29 August, 2023 at 10:50 AM Count : 107


খোলা আকাশে নিচে আছিয়া বেগম (৭০) চুলার উপর ভাত রান্না করছেন। পাশে বসে আছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্বামী মইরুলদ্দিন (৭৫), প্রতিবন্ধী ছেলে মনিরুল ইসলাম (৪৫) ও প্রতিবন্ধী নাতী মিনারুল ইসলাম (২০) তাদের থাকার জায়গা নেই। 

কোথাও জায়গা না পেয়ে চার সদস্যের পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন আছিয়া বেগম।

সোমবার বেলা ৩টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে দেখা যায় অসহায় আছিয়া বেগমের জীবনচিত্র।
জানা যায়, ভূমিহীন-গৃহহীন আছিয়া বেগম। বাস করছিলেন অন্যের জমিতে। সেখান থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়া হয় তাকে। এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

আড়ানী রুস্তরপুর ভারতীয়পাড়া গ্রামের মইরুলদ্দিনের সাথে ৫০ বছর আগে আছিয়া বেগমের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে জন্ম নেয় ৬টি সন্তান। এ গ্রামে তারা বসবাস করতেন। সন্তান মানুষ করতে গিয়ে যতোটুকু জমি ছিল, তা বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে যায়।

সেখানে স্বামী মইরুলদ্দিনের পরিবার থেকে লাঞ্চিত হয়ে ৫ বছর আগে চলে যান খুর্দ্দোবাউসা গ্রামে আছিয়া বেগমের মা ফুলজান বেগমের বাড়িতে।

ফুলজান বেগম মারা যাওয়ার পর এখানকার জমি নিয়ে ইনছার আলীর সাথে আদালতে মামলা চলছে। এখান থেকেও সে লাঞ্চিত হয়ে চলে যান বাউসা ইউনিয়নের টাইরীপাড়া বাউসা গ্রামে। সেখানে আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির কাছে মাসে ভাড়া হিসেবে ছোট একটি কুড়েঘরে বসবাস করতেন। 

আলাউদ্দিন প্রয়োজনের তাগিদে সেখান থেকে বুধবার (২৩ আগষ্ট) উচ্ছেদ করে দেন। ফলে নিরুপায় হয়ে পড়েন আছিয়া বেগম। কোন উপায় না পেয়ে আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে চারটি ছাগল ও কয়েকটি মুরগি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।

এ বিষয়ে আছিয়া বেগম বলেন, নিরুপায় হয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্বামী, প্রতিবন্ধী ছেলে ও প্রতিবন্ধী নাতীকে নিয়ে ছয়দিন থেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। খাওয়ার কিছুই নেই। ক্ষুদা লেগেছে তাই বাজার থেকে এক কেজি চাল ও আধা কেজি পটল নিয়ে এসেছি। এগুলো এখন রান্না করছি। 

কোথায় যাবো, কি করবো, কিছুই বুঝতে পারছিনা। তবে আছিয়া বেগম দাবি করেন সরকার ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ঘর দিচ্ছেন। সরকারিভাবে গুচ্ছ গ্রাম বা কথায় একটু ব্যবস্থা করে দিলে প্রতিবন্ধী স্বামী, সন্তান ও নাতীকে নিয়ে বাঁকি জীবনে কিছুটা হলেও সুখ মনে করতাম।

এদিকে আছিয়া বেগমের মেয়ে ঝর্না বেগমের বিয়ে হয়ে স্বামীর সাথে সংসার করছেন। ছেলে ইকবাল হোসেন স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করছেন। আরিফ হোসেন নামের আরেক ছেলেকে ২০১৮ সালে কে বা কারা হত্যা করে মাঠের মধ্যে লাশ ফেলে রাখা হয়েছিল। আতাউল হোসেন নামের আরেক সন্তান কয়েক বছর থেকে নিঁখোজ রয়েছে। তার সন্ধান আজও পায়নি। এ কথাগুলো বলতে বলতে আছিয়া বেগম হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন।

এ বিষয়ে আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, হটাৎ দেখছি ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে আছিয়া বেগম তার পরিবার নিয়ে বসে আছেন। তাদের সাথে কখা বলেছি, তাদের থাকার কোন জায়না নেই। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিব।

এএইচ/এমবি

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,