যশোর জেলা ছাত্রলীগের বিশেষ প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত না থাকায় ১১ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত নোটিশের জবাব স্বশরীরে দিতে বলা হয়েছে।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া ১১ নেতা হলেন– জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইমরান হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন রনি হাওলাদার, কায়েস আহমেদ রিমু, আব্দুর রউফ পিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিফাতুজ্জামান রিফাত, আসাদুজ্জামান আসাদ, আশিকুর রহমান হৃদয়, মাসুদ হাসান কৌশিক, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, রাকিবুল আলম, ফাহমিদ হুদা বিজয়।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ১লা সেপ্টেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ স্মরণকালের ছাত্রসমাবেশ করবে। এ উপলক্ষে শুক্রবার বিকালে যশোর শহরের গাড়িখানাস্থ জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। এতে জেলার আট উপজেলাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কলেজের ২৮টি ইউনিটের মধ্যে বেশির ভাগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন না জেলা ছাত্রলীগের ১১ জন পদধারী নেতা। ফলে সেই ১১ জনকে নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।
শোকজ হওয়া ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, ২০২১ সালের ৫ জুলাই থেকে জেলার সভাপতি পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক পল্লব দায়িত্ব পালনকালে পদে পদে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে নিয়েছেন সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত। কমিটি গঠন থেকে শুরু করে সংগঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সব প্রক্রিয়ায় কমিটিকে যুক্ত করার পরিবর্তে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন দু’জন মিলে। সংগঠন পরিচালনায় তাদের চরম স্বেচ্ছাচারিতায় ২৩ সদস্যের কমিটিকে একসাথে করতে পারেনি এই সভাপতি-সম্পাদক। তাদের সাংগঠনিক অক্ষমতায় ইতোমধ্যে অনেকগুলো উপগ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। ফলে সংগঠনে বিরাজ করছে চরম বিশৃঙ্খলা। আবার অনেকেই কাঙ্খিত পদে বসতে না পারায় পদ ব্যবহারও করেন না; একই সাথে দলীয় কর্মসূচি অংশও নেন না।
এই বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, বর্ধিত সভার কোন চিঠি পায়নি। জেলার সভাপতি সম্পাদক সাংগঠনিক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমন্বয় নেই। তাদের দুইজনের একক সিন্ধান্তে প্রেস রিলিস কমিটি দেয় আবার তুলেও নেই। সভাপতি সম্পাদক স্বেচ্ছাচারিতায় সাংগঠনিক কোন কার্যক্রম নেই। এই দুইজন যে কয়েকটা কমিটি দিয়েছে সাংগঠনিক কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেনি অছাত্র জামাত বিএনপি পরিবারের লোকদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। কোন সাংগঠনিক কাজে কাউকে ডাকে না। তার পরেও শুনেছিলাম বর্ধিত সভা সম্পর্কে; তবে যায়নি তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় কারণে।
তিনি বলেন, শোকজ করেছে, শোকজের জবাব দিবো কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। জেলার সভাপতি সম্পাদক কাছে দিবো না।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান হৃদয় বলেন, প্রেস রিলিস ফেসবুকে ঘুরছে, ওটা দেখেছি। জেলা ছাত্রলীগ তো প্রেস রিলিস নির্ভর। ওনারা তো কমিটির অন্যনেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন না। সভাপতি সম্পাদক দুজনে আলোচনা করে কমিটি দেওয়া থেকে শুরু করে যা কার্যক্রম করে সেটা রাতের আধারে প্রেসরিলিজের মাধ্যমে করে। এখন শোকজ করেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে আমার জবাব দিবো।
আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, অসুস্থ ছিলাম বর্ধিত সভার বিষয়টি জানি না। তাছাড়া এদিন সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে বের হতে না পারার কারণে যেতে পারেনি।
এই বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের মুঠোফোনে কয়েক দফায় ফোন দিলেও তারা দুজনেই ফোন রিসিভ করেনি। ফলে এই বিষয়ে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত তরুণ বলেন, বিশেষ প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত না থাকায় ১১ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। তাদের সবাই লিখিত আকারে সভাপতি সম্পাদক কাছে স্বশরীরে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এসকেআর/এসআর