ধনবাড়ীতে সরিষার ফলন ভালো হয়েছে
Published : Saturday, 31 December, 2022 at 4:45 PM Count : 194
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে সরিষার ফলন ভালো হয়েছে। উপজেলার দিগন্তজোড়া মাঠে সরিষা ক্ষেত। মাঠে সরিষা ফুলের মনোরম দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়। রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হয়েছে এবার। কৃষকরা আশা করছেন এবারের ফলনে লাভবান হবেন।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ করায় ফলন কম হতো এবং উৎপাদনে সময়ও বেশি লাগতো, কৃষকরা লাভবান হতেন না। বর্তমানে উচ্চ ফলনশীল জাত আসায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। কম জীবনকালের বারি-১৪ জাতের সরিষা ৮০-৮৫ দিনেই ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় দেড় মেট্রিক টন। সরিষা চাষ করে ওই জমিতে নির্বিঘ্নে বোরো আবাদ করেন চাষিরা। সরিষা ক্ষেতে বোরো চাষে সারও কম লাগে এবং ফলন ভালো হয়।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের যে দিকে চোখ যাচ্ছে সে দিকেই হলুদের সমারোহ। যেন হলুদ রঙের গালিচা সাজিয়ে রেখেছে প্রকৃতি। মাঠে দুলছে সরিষা ফুল। দেখলেই মনটা জুড়িয়ে যায়। চারিদিকে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত পুরো দিগন্ত, যেন বিস্তীর্ণ হলুদের রাজ্য। ভালো ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখে মুখে স্বস্তির আভাস।
বাজারে সরিষার চাহিদা থাকায় চাষিদের আগ্রহ বেড়ে গেছে। কৃষিসমৃদ্ধ এলাকা হওয়ায় দুই ফসলি জমিতে চাষ হচ্ছে তিন ফসল। দেশি জাতের পরিবর্তে আবাদ করেছেন উচ্চফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১০ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করছেন চাষিরা। ধান চাষের পর জমি পতিত থাকে। পতিত জমিতে এ মৌসুমে সরিষা আবাদে ৫০০ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও ৫৬৩ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করেছেন কৃষকরা। গতবার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি। সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে দেয়া হয়েছে পরামর্শ ও সরকারি ভাবে প্রণোদনায় বীজ-সার।
মুশুদ্দি কামার পাড়া গ্রামের কৃষক আনছার আলী বলেন, ‘আগে একটি জমিতে শুধু ধান আবাদ করতাম। ধান আবাদ শেষে জমি পতিত থাকতো। ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় ধান আবাদের পাশাপাশি মাঝখানের সময়টা সরিষা চাষ হচ্ছে। সাড়ে চার বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছি।’
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। দুই ফসলি জমিতে এখন তিন ফসল আবাদ করছেন কৃষকরা।’
দরিচন্দ্রবাড়ীর কৃষক আরিফুর রহমান বলেন, ‘সরিষায় ভালো ফলন আশা করছি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া, পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ হয়নি। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ১১ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের আবাদ করেছি। কোন ধরনের ক্ষতি না হলে লাভবান হতে পারবো।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘এ অঞ্চলের মাটি সরিষা চাষে উপযোগী। এতে করে এ এলাকায় আবাদ বাড়ছে। অন্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভবান হওয়ায় কৃষকরাও আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষকদের নানা ভাবে সহযোগীতা করা হচ্ছে। আগামী বছর আবাদ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
-এইচআর/এমএ