মাস পেরোলেও এক ছটাক ধানও কিনতে পারেনি খাদ্যগুদাম
Published : Tuesday, 27 December, 2022 at 6:11 PM Count : 125
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে চলতি আমন মৌসুমে সরকার ঘোষিত ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষকদের থেকে ধান-চাল সংগ্রহ প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ের এক মাস ১০ দিন অতিবাহিত হলেও এক ছটাক ধানও ক্রয় করতে পারেনি খাদ্যগুদাম।
কৃষকদের অভিযোগ- গুদামে ধান দিতে গেলে নানাবিধ হয়রানির শিকার হতে হয়। সরকারি মূল্যের সঙ্গে বাজার দরের সামঞ্জস্য না থাকায় এ সংগ্রহ অভিযান মুখ থুবড়ে পড়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্র ও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকার কর্তৃক ঘোষিত এ উপজেলায় চলতি বছরে সরকারি নির্ধারিত ২৮ টাকা কেজি দরে এক হাজার ৩৭৪ মেট্রিক টন আমন ধান কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করার কথা। গত ১৭ নভেম্বর থেকে আগামী ০২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা থাকলেও এ কার্যক্রমের এক মাস ১০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কোন ধান সংগ্রহ করতে পারেনি। ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ কৃষকরা সরকার নির্ধারিত এ মূল্যে ধান দিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন দিন দিন।
একাধিক কৃষক বলছেন, সরকারি মূল্য এক হাজার ১২০ টাকা করে প্রতি মণ ধান ক্রয় করছে খাদ্যগুদাম। সেখানে রয়েছে ধানের আর্দ্রতা পরিমাপে জটিলতা, অনেক দূর থেকে কেরিং দিয়ে পুনরায় ধান নিয়ে ফিরে আসতে হয়। বিভিন্ন প্রকারের হয়রানির শিকার হতে হয়। অথচ বাড়ি থেকে বেপারীরা মাঠের সদ্য কাটা ধান কিনেছে হাজার টাকা দরে প্রতি মণ। এ সামান্য ব্যবধানে পরতা হয়না কৃষকদের।
এদিকে, ধান চাল সংগ্রহ উপজেলায় নামেমাত্র কমিটি থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ে সংগ্রহে নেই কোন প্রচার-প্রচারণা। অনেকেই জানেন না ধান দেওয়ার নির্ধারিত সময়। বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে ধান ক্রয়ে লক্ষ্য ছিল ৬০৭ মেট্রিক টন, সেখানে ধান ক্রয় হয়েছে মাত্র ৬১ টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে লক্ষ্য ছিল ৯১৬ মেট্রিক টন। সেখানে খাদ্যগুদাম ক্রয় করেছে মাত্র ২৭ টন।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ও খাদ্যশস্য সংগ্রহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহের প্রতিবন্ধকতায় বাজার ও সংগ্রহ মূল্য কাছাকাছি থাকায় এর প্রভাব পড়েছে সংগ্রহের ক্ষেত্রে। খাদ্যগুদামের ক্রয়ের ক্ষেত্রে ময়েশচার, চিটামুক্ত, পরিস্কার এ ধরনের বিধিনিষেধ থাকায় অনেক কৃষকই ধান দিতে পারছেন না। হয়রানির বিষয়টি সঠিক নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংগ্রহ কমিটির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ধান ক্রয়ে বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় ধান ক্রয়ে সমস্যা হচ্ছে। তবে, সংগ্রহের ক্ষেত্রে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
-এসআই/এমএ