স্বপ্নের নার্সারিতে শত্রুর হানা
Published : Monday, 26 December, 2022 at 1:52 PM Count : 95
নিভৃত পল্লী গ্রামের যুবক আসাদ মন্ডল (২৯)। নিজস্ব ৩৫ শতক জমিতে গড়ে তুলেছিলেন নার্সারি। এখান থেকে দিনবদলের স্বপ্নে রোপণ করছিলেন নানা প্রজাতির গাছের চারা। ধীরে ধীরে এ গাছগুলো বড় হয়ে ফল দেওয়ার সময় হয়েছিল। এর মধ্যে শত্রু হানা দিয়ে মুহূর্তে প্রায় দেড় হাজার গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলেছে। যেন চোখের সামনে নিমিষে চুরমার হয়ে গেছে আসাদের সেই স্বপ্ন।
সোমবার সকালে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের মহেশপুর-কৃষ্ণপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ‘আসাদ-রওশন’ নামের ওই নার্সারির গাছ কর্তনের অমানবিক দৃশ্য। এ সময় কাটা গাছের ডালে বসে অঝরে কাঁদছিলেন নার্সারি মালিক আসাদ।
জানা যায়, ওই গ্রামের মৃত শামছুল হক মন্ডল জীবদ্দশায় মহেশপুর-কৃষ্ণপুর মৌজায় বাণিজ্যিকভাবে নার্সারি দিয়ে সংসার পরিচালনা করে আসছিলেন। তার মৃত্যুতে ছেলে আসাদ মন্ডল ওই নার্সারী অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে একই গ্রামের এন্তাজ আলীর ছেলে হালিম মিয়া, আয়েন উদ্দিনের ছেলে মুধু মিয়া ও রফিকুল মিয়া গংরা ওই নার্সারির জমিটি নিজেদের বলে দাবি করে আসছিলেন। এ নিয়ে আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে এবং ওই জমিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। কিন্ত এই নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে প্রতিপক্ষ হালিম মিয়ারা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আসাদের নার্সারিতে ঢুকে প্রায় দেড় হাজার ছোট-বড় গাছ কেটে ফেলে। এ সময় স্থানীয় কাইছুল মন্ডল ও সোহেল মন্ডল বাধা দিতে গিলে তাদের কুপিয়ে হাত ভেঙে দেওয়া হয়। আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে কাইছুল ও সোহেলকে উদ্ধার করে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। হালিম গংরা সন্ত্রাসী কায়দায় এমন কাণ্ড ঘটানোর পরও আসাদ মন্ডল ও তার পরিবারকে প্রাণ নাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আসাদ মন্ডল জানান, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে ওই জমির নার্সারী ব্যবসা করে আসছেন। এরই মধ্যে হালিম, মধু ও রফিুকুল গংরা জোরপুর্বক জমিটি দখলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পাঁয়তারা করে আসছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে গত শনিবার প্রতিপক্ষরা আকস্মিকভাবে হামলা চালিয়ে নার্সার গাছগুলো কেটে ফেলেছে। এর প্রতিকার চেয়ে রোববার সন্ধ্যায় সাদুল্লাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
এদিকে অভিযুক্ত হালিম মিয়া বলেন, কাগজপত্র অনুযায়ী ওই জমির মালিক আমরা। কিন্তু আসাদ গংরা আমাদের দখল দিচ্ছেন না। আর ওই গাছগুলো কে বা কারা কেটেছে সেটি জানা নেই।
এ ব্যাপারে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় জানান, ওইসব গাছ কাটার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী আসাদ মন্ডলের একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
টিএইচ/এনএন