For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

গরীবের শীতবস্ত্র মার্কেট ধনীদের দখলে

Published : Sunday, 25 December, 2022 at 3:06 PM Count : 131

গাইবান্ধা শহরের পি.কে বিশ্বাস রোডের দুইধারে সারি সারি বস্ত্রের দোকান সাজিয়ে বসেছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এটি গাউন পট্টি  হিসেবে খ্যাত। এখানকার দোকানগুলোতে কম দামে শীতবস্ত্রসহ অন্যান্য বস্ত্রাদি পাওয়া যায়। কয়েক যুগ ধরে এই পট্টিতে অল্প দামে কেনাকাটা করেন নিম্নআয়ের মানুষ। ফলে এটি গরীবের মার্কেট হিসেবেও পরিচিত লাভ করেছে। কিন্তু সেই মার্কেট এখন ধনীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠেছে। শীত বাড়ার সঙ্গে তারা হুমড়ি খেয়ে কিনছেন গরম কাপড়।   
   
সম্প্রতি গাইবান্ধ শহরের পি.কে বিশ্বাস রোড ও টেনিস ক্লাব চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, শীতার্ত মানুষদের গরম কাপড় কেনার দৃশ্য। ফুটপাতের গাউন পট্টিটি গরীবের মার্কেট হিসেবে পরিচিত থাকলেও সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে সকল পেশা-শ্রেণির মানুষ। আর বেকায়দায় পড়ছে ছিন্নমূল পরিবারের সদস্যরা। তাদের গরম কাপড় কেনার সামর্থ না থাকায় যবুথবু অবস্থায় পড়েছে। 

এদিকে পৌষের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে গাইবান্ধা জেলায় জেঁকে বসতে শুরু করছে শীতের তীব্রতা। গত কয়েকদিন ধরে মধ্যরাত থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘনকুয়াশায় ঢাকা থাকে প্রত্যন্ত অঞ্চল। কনকনে এই শীত নিবারণে সকল পেশা-শ্রেণির মানুষ ঝুঁকে পড়েছে গরম কাপড়ের দিকে। ওই পট্টিতে কেউ কিনছেন লেপ-তোশক। আবার কেউ কেউ সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার ও মোজাসহ বিভিন্ন ধরণের বস্ত্রাদি কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। এখানকার অধিকাংশ ক্রেতা ছিন্নমূলের হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত্বদের আনাগোনা লক্ষ্যণীয়।  

জানা যায়, নদীবেষ্টি গাইবান্ধার প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস চরাঞ্চলে। জেলার অন্যান্য এলাকার চেয়ে এই অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেশি। এখানকার অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস। প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ পেরিয়ে কোনমেতে বেঁচে থাকা তাদের। এরই মধ্যে শীতে কাবু মানুষগুলো। ছিন্নমূল পরিবারের এইসব মানুষরা শীত নিবারণে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সামর্থ না থাকায় সেই গরীবের মার্কেটেও কিনতে পাচ্ছেন না শীতের কাপড়। অন্যান্য বছরে এই সময়ে সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ দেখা গেলেও এ বছরে তা ব্যর্তয় ঘটেছে বলে অভিযোগ দুস্থ শীতার্তদের। এদিকে, শীতের তৗব্রতা বেড়ে যাওয়া চরম বেকায়দায় পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষেরা। তাদের শীতের কবলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম বেশীর পাশাপাশি গরম কাপড় কেনার ব্যাপারটিও সমস্যায় যোগ হয়েছে তাদের।  
 
গাইবান্ধ শহরের পি.কে বিশ্বাস রোড়ের গাউন পট্টিতে গরম কাপড় কিনতে আসা  নজরুল ইসলাম নামের এক রিকশাচালক বলেন, শীতের কারণে একদিকে কমেছে রোজগার, অন্যদিকে ছেলে-মেয়েদের শীতবস্ত্র কিনতে হিমশিম খাচ্ছি। তাও আবার গরীবের মার্কেটে ধনীদের ঠেলায় কাপড়াদি কেনা দায় হয়ে পড়েছে।  

চরাঞ্চলের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক নামের এক শ্রমজীবি ব্যক্তি বলেন, হামার জাগাদ এ্লা খুব জার (শীত) নাগে বাহে। বাড়ির একনা চড়াই বেচে ছোট ছইলের জন্নে গাউন পট্টিতে একনা নিলামী ছুইট্যার কিনব্যার আসছোম। সেটে এলা বড়োলোক মানসের জন্নে পাও দেওয়া যায় না বাবা। 
মেরিনা আক্তার নামের এক স্কুল শিক্ষিকা জানান, হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। বড় বড় মার্কেটে গরম কাপড়ের দাম বেশি। তাই গাউন পট্রির ফুটপাতের দোকানগুলোতে কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে এসেছেনে। এখানে বিভিন্ন মোটা কাপড়ের ডিপি থেকে বেছে বেছে সোয়েটার-জ্যাকেট ও মোজা কিনেছেন তিনি। 

পি.কে বিশ্বাস রোডের গরম কাপড় বিক্রেতা লুৎফর রহমান বলেন, আমরা অনেকে আছি বিশেষ করে শীতকালে এখানে অস্থায়ী দোকান বসাই। এখানে কম দামে ভালো মানের শীতবস্ত্র পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, আগে শুধু গরীব মানুষের এখানে কাপড় কিনতেন। ইদানিং সকল পেশা-শ্রেণির পরিবারেরা নানা ধরণের বস্ত্রাদি কিনতে ব্যস্ত।

টিএইচ/এনএন  

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,