চলতি মৌসুমে খেজুরের গুড় থেকে ২৫ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা
Published : Thursday, 22 December, 2022 at 2:46 PM Count : 106
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় চলতি মৌসুমে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চলছে খেজুরের গুড় উৎপাদনে ব্যস্ততা। উপজেলার খেজুরের গুড়ের খ্যাতি দেশজুড়ে। এই শীত মৌসুমে খেজুরের গুড় থেকে সরকারি ভাবে ২৫ কোটি টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সরকারের সহায়তা পেলে বাঘার খেজুরের গুড় বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।
উপজেলায় দুটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে ৩০ হাজার ৩৮৯ জন কৃষি পরিবার রয়েছে। খেজুরের বাগান রয়েছে চার হাজার। এছাড়া সড়কপথ, পতিত জমি ও বাড়ির আঙিনা মিলে দেড় লক্ষাধিক খেজুরের গাছ আছে। একজন গাছি প্রতিদিন ৫০ থেকে ৫৫টি খেজুরের গাছের রস আহরণ করতে পারেন। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চার হাজার গাছি রস সংগ্রহে ব্যস্ত রয়েছে। প্রতি মৌসুমে তারা খেজুরের গাছের ওপর নির্ভরশীল হয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একজন কৃষক তাদের গাছের সংখ্যার অনুপাতে গাছি নিয়োগ করেন। তারা মৌসুম জুড়ে রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত থাকেন। উপজেলার আমের যেমন দেশ ও বিদেশ জুড়ে খ্যাতি, তেমনি সুমিষ্ট খেজুরের গুড়ের খ্যাতিও রয়েছে। উপজেলায় গুড়ের প্রধান হাট বাঘা ও আড়ানী হাট। এরপর রয়েছে মনিগ্রাম ও দিঘাসহ অন্যান্য হাট।
সপ্তাহে রোববার ও বৃহস্পতিবার বাঘারহাট বসে। এ হাটেই সবচেয়ে বেশি গুড় বেচাকেনা হয়। উপজেলার বাঘা ও আড়ানী পৌরসভা ছাড়াও বাজুবাঘা, গড়গড়ি, পাকুড়িয়া, মনিগ্রাম, আড়ানী, বাউসা ও চকরাজাপুর ইউনিয়নের অন্যান্য হাটেও যথেষ্ট পরিমাণ গুড় বেচাকেনা হয়। তবে বেশি দাম পাওয়ার আশায় অনেকেই বাঘারহাটে গুড় বিক্রি করতে আসেন। বাঘার হাটে রোববার প্রতি কেজি খেজুরের গুড় ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হয়। মৌসুমের একেবারে শুরুতে এ গুড়ের দাম প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। প্রতি বছরই মৌসুমের শুরুতে বেশি দামে গুড় বিক্রি হলেও ভরা মৌসুমে দাম কিছুটা কমে যায়।
বাঘা বাজারের ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার এনামুল হক বলেন, চলতি শীত মৌসুমে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ কোটি টাকার গুড় বেচা কেনা হবে। ফলে উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার টাকা আয় করবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরকারি হিসেবে চলতি মৌসুমে মানুষ খেজুরের গুড় থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা আয় করবেন। উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে খেজুরের গাছ রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বাণিজ্যিক ভাবে খেজুরের গুড় উৎপাদনে সহায়তা দেয়া হলে এই গুড়কে আরও লাভজনক করা সম্ভব। ফলে বিদেশেও গুড় রপ্তানি করা যেতে পারে। বিদেশে রপ্তানি করা হলে এই গুড় থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে।
-এএইচ/এমএ