মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চাটখিল পৌরসভার স্কাইভিউ চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত দিলরুবা আক্তার সেনবাগ উপজেলা ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের চিলাদী গ্রামের বাসিন্দা।
এর আগে কিশোরী গৃহকর্মী ও তার মা দিলরুবা আক্তারের বিরুদ্ধে নোয়াখালী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দিলরুবা আক্তার তুহিনকে আটক করে। ওই কিশোরী বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে থানায় একটি মামলা দয়ের করলে আটক দিলরুবা আক্তার তুহিনকে বুধবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী গৃহকর্মী জানায়, তারা স্বপরিবারে সোনাইমুড়ী উপজেলায় ভাড়া থাকেন। কয়েক মাস আগে ছোট বোনের জন্য চিপস কিনতে সে পাশের দোকানে গেলে রুবেল নামে এক সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই সুবাদে সে দিলরুবা আক্তার তুহিনের বাসায় গৃহকর্মীর কাজের প্রস্তাব দেয়। মাসিক পাঁচ হাজার টাকা চুক্তিতে সে দিলরুবা আক্তারের ভাড়া বাসায় কাজে যোগ দেয়। এর কিছু দিন পর সে বুঝতে পারে বাসায় বিভিন্ন অপরিচিত লোকজন এনে অসামাজিক কাজ করা হয়। কিছু দিন পরে তাকে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে রাখে। পরে ওই ভিডিও দেখিয়ে দৈহিক মিলনে বাধ্য করে। প্রতিবাদ করলে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করতো।
গত ০৩ ডিসেম্বর সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন থাকায় দিলরুবা আক্তার ও তার মা বাসায় না থাকার সুবাদে চাটখিল বদল কোর্ট ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্যের সহায়তায় সে পালিয়ে যায়। এসব অনৈতিক বিষয় লোক জানাজানি হওয়ার ভয়ে কিশোরী গৃহকর্মী চুপ থাকে। সম্প্রতি তাকে আবার দেহ ব্যবসায় লিপ্ত করানোর জন্য বার বার চাপ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় সে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী নাদিয়া নারগিছ চৌধুরী ও চাটখিল উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী পারভিন আক্তারের সহায়তায় নোয়াখালী পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ করে।
সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের ছিলাদি ওয়ার্ড মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম অবজারভারকে বলেন, 'দিলরুবা আক্তার তুহিন একজন প্রতারক নারী। তিনি এ পর্যন্ত একাধিক ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। স্থানীয় নাজিম হোসেন নামে এক ইতালি প্রবাসীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে মর্মে জাল কাবিননামা সৃষ্টি করে আদালতে মামলা করে টাকা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় আদালতে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা চলমান ও গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে স্বামী পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেন।'
আওয়ামী লীগ নেত্রী নাদিয়া নারগিছ চৌধুরী অবজারভারকে বলেন, 'সেনবাগ উপজেলা কমিটিতে এ ধরনের কোন নেতা নেই। তারা প্রতারক, দেহ ব্যবসায়ী ও মাদক কারবারী। তাদের কারণে দলের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। তাদের বিচার হওয়া উচিৎ।'
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াইল হক অবজারভারকে বলেন, 'কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে দিলরুবা আক্তার তুহিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আদালতে একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এছাড়া কিশোরী গৃহকর্মী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগীর জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হবে।'
-এনইউ/এনএন/এমএ