কক্সবাজারের টেকনাফে প্রথম দফায় আত্মসমর্পণকারী ১০১ জন ইয়াবা কারবারীকে এক বছর ছয় মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অস্ত্র মামলা থেকে খালাসের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুর ১ টা ৫০ মিনিটের দিকে এ রায় ঘোষণা করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে বিচারক রায় পাঠ শুরু করেন। রায় পাঠ শেষে ১০১ জনকে ইয়াবা মামলায় এক বছর ছয় মাস করে কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অবশ্যই প্রদান করার নিদের্শ দেন আদালত। একইসঙ্গে পুলিশের দায়ের করা অস্ত্র মামলায় সকলকে খালাসের আদেশ দিয়েছেন।
রায় ঘোষণাকালে ১৭ জন আসামি আদালতে উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন ৮৪ জন।
এজাহারের বিবরণ মতে, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) টেকনাফ সদরের টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের উপস্থিতিতে ১০২ জন আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারী ও গডফাদার সাড়ে তিন লাখ ইয়াবা, ৩০টি দেশিয় তৈরি বন্দুক ও ৭০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিনই আত্মসমর্পণকারী ১০২ জনকে আসামি করে টেকনাফ মডেল থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়। টেকনাফ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম বাদি হয়ে মামলাটি করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয় পরিদর্শক এ বি এম এস দোহাকে। মামলা দায়েরের দিনই আদালতের মাধ্যমে সকল আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
১০২ জন আসামির মধ্যে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে ২০০৯ সালের ৭ অগাস্ট মোহাম্মদ রাসেল নামে এক আসামি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহ এর আদালত ১০১ আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করা হয়। একই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সকল আসামির উপস্থিতিতে শুনানী শেষে মামলার চার্জ গঠন করেন। বিচার শেষে ১৫ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণার জন্য ২৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
উপস্থিত ১৭ আসামি
নুরুল হুদা, শাহ আলম, আব্দুর রহমান, ফরিদ আলম, মাহবুব আলম, রশিদ আহমেদ, মোহাম্মদ তৈয়ব, জাফর আলম, মোহাম্মদ হাশেম ওরফে আংকু, আবু তৈয়ব, আলী নেওয়াজ, মোহাম্মদ আইয়ুব, কামাল হোসেন, নুরুল বশর ওরফে কালাভাই, আব্দুল
করিম ওরফে করিম মাঝি, দিল মোহাম্মদ ও মো. সাকের মিয়া ওরফে সাকের মাঝি।
অনুপস্থিত ৮৪ আসামি
সাবেক এমপি বদির ভাই আব্দুর শুক্কুর, বদির ভাই আমিনুর রহমান ওরফে আব্দুল আমিন, শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক, ফয়সাল রহমান, দিদার মিয়া, বদির ভাগনে মো. সাহেদ রহমান নিপু, আব্দুল আমিন, নুরুল আমিন, বদির বেয়াই সাহেদ কামাল ওরফে সাহেদ, ফুফাত ভাই কামরুল হাসান রাসেল, খালাত ভাই মং অং থেইন ওরফে মমচি, এনামুল হক ওরফে এনাম মেম্বার, একরাম হোসেন, ছৈয়দ হোসেন, মৌলভী বশির আহমদ, মোজাম্মেল হক, জোবাইর হোসেন, নুরুল বশর ওরফে কাউন্সিলার নুরশাদ, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ওরফে জিহাদ, মোহাম্মদ শাহ, নুরুল কবির, মারুফ বিন খলিল ওরফে বাবু, মোহাম্মদ ইউনুচ, ছৈয়দ হোসেন ওরফে ছৈয়দু, মোহাম্মদ জামাল ওরফে জামাল মেম্বার, মো. হাসান আব্দুল্লাহ, রেজাউল করিম ওরফে রেজাউল মেম্বার, মো. আবু তাহের, রমজান আলী, মোহাম্মদ আফছার, হাবিবুর রহমান ওরফে নুর হাবিব, শামসুল আলম ওরফে শামশু মেম্বার, মোহাম্মদ ইসমাঈল, আব্দুল গনি, মোহাম্মদ আলী, জামাল হোসেন, আব্দুল হামিদ, নজরুল ইসলাম, মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে দানু, মোহাম্মদ সিরাজ, মোহাম্মদ আলম, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, হোসেন আলী, নুরুল কবির মিঝি, শাহ আজম, জাফর আহমেদ ওরফে জাফর, রুস্তম আলী, মোহাম্মদ হোছাইন, নুরুল আলম, শফি উল্লাহ, মো. জহুর আলম, মোহাম্মদ হুসাইন, মোহাম্মদ সিদ্দিক, রবিউল আলম, মঞ্জুর আলী, হামিদ হোসেন, মোহাম্মদ আলম, মোহাম্মদ রাসেল (ইতিমধ্যে মারা গেছেন), নুরুল আমিন, বোরহান উদ্দিন, ইমান হোসেন, মোহাম্মদ হারুন, শওকত আলম, হোছাইন আহম্মদ, মো. আবু ছৈয়দ, মো. রহিম উল্লাহ, মোহাম্মদ রফিক, মোহাম্মদ সেলিম, নুর মোহাম্মদ, মোহাম্মদ হেলাল, বদিউর রহমান ওরফে বদুরান, আব্দুল করিম ওরফে করিম মাঝি, ছৈয়দ আলী, মোহাম্মদ হাছন, নুরুল আলম, আব্দুল কুদ্দুস, আলী আহম্মেদ, আলমগীর ফয়সাল ওরফে লিটন, জাহাঙ্গীর আলম, নুরুল আলম, সামছুল আলম শামীম, মোহাম্মদ ইউনুচ, নুরুল আফসার ওরফে আফসার উদ্দিন, মোহাম্মদ শাহজাহান আনছারী।
-এফআই/এমএ