মামলায় আটকে আছে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের ১১ কিলোমিটার রাস্তার কাজ
Published : Wednesday, 16 November, 2022 at 10:57 PM Count : 79
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের ১১ কিলোমিটার রাস্তা মামলাসহ নানা জটিলতার কারণে গত এক যুগ ধরে উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে পর্যটকসহ স্থানীয় জনসাধারণের চলাচলে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলাপাড়া উপজেলার পাখিমাড়া বাজার থেকে মহিপুর পর্যন্ত সড়কটিতে বহু খানাখন্দে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। মহাসড়কে ওই অংশটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন কুয়াকাটায় ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক ও স্থানীয় জনগণ। এ সড়কে সব চেয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে মোটরসাইকেল এবং তিন চাকার যানবাহন। বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্ত থাকায় এসব যানবাহনকে গর্ত এড়িয়ে চলতে হয়। মাঝে মাঝে যাত্রীসহ অটোরিকশা উল্টে যায়। ঘটেছে অটোরিকশা থেকে যাত্রীদের ছিটকে পড়ার ঘটনাও।
পটুয়াখালী জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন মৃধা জানান, পাখিমাড়া থেকে মহিপুর পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়কে দীর্ঘদিন ধরে রুটিন মেরামতে বিটুমিন ও ইট-পাথরের খোয়ার পট্টি দিয়ে চলাচলের উপযোগী রাখার কারণে পুরো রাস্তা দেবে গিয়ে উঁচু নিচু হয়ে আছে। এ পথে চলতে গিয়ে গাড়ির যাত্রীদের প্রচন্ড ঝাঁকুনি সহ্য করতে হয়। যা পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে চরম পীড়াদায়ক। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় বেড়েছে পর্যটকদের আনাগোনা, তার সঙ্গে বেড়েছে গাড়ির চাপ। আর এসব কিছুর প্রভাব পড়েছে রাস্তার উপর।
তিনি জানান, একদিকে সরু অমসৃণ উঁচু-নিচু রাস্তা অন্যদিকে নতুন রাস্তা তৈরি না হওয়ায় প্রতিদিন ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। যা পর্যটন শিল্পের বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘসূত্রতার অবসান ঘটিয়ে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করে নতুন রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে কলাপাড়া পৌর শহর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়ক নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সওজ কর্তৃপক্ষ। ২২ কিলোমিটার সড়কের ১১ কিলোমিটার অংশের নির্মাণ কাজ করে রুপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের কাজের কারণে বিল নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। আর তা পৌঁছায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। মামলাটি এখনও হাইকোর্টে চলমান রয়েছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে সওজ কর্তৃপক্ষ নতুন করে সড়কটির নির্মাণে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। শুধুমাত্র বছর বছর রুটিন মেরামতের মাধ্যমে জোড়া তালি দিয়ে সড়কটি সচল রাখার চেষ্টা করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাসুদ খান জানান, সমস্যা সমাধানে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। দ্রুত ঠিকাদার ও অধিদপ্তরের মধ্যে বিরোধ আদালতের মাধ্যমে নিস্পত্তি হবে বলে আমরা মনে করি। বৃষ্টিতে সড়কে যেসব খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে তা শিঘ্রই মেরামত করা হবে।
পদ্মা সেতু চালুর পর ফেরিবিহীন যাত্রাপথের জন্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে কুয়াকাটা যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ঢাকা থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব ২৭০ কিলোমিটার, পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। রাজধানী থেকে ২৭০ কিলোমিটার সড়কে মাত্র ১১ কিলোমিটার ছাড়া বাকি সব পথটুকুই আরামদায়ক।
-টিএইচ/এমএ