পাহাড়ে জুম চাষিদের ধান কাটা শুরু
Published : Thursday, 13 October, 2022 at 12:39 PM Count : 182
পাহাড়ে জুম চাষি বা জুমিয়ারা ধান কাটা শুরু করেছেন। জুম চাষ পাহাড়িদের একটি আদি প্রথা। এটি তাদের ঐতিহ্য। পাহাড়ের ঢালে যুগ যুগ ধরে পাহাড়িরা বসবাস করে পিরামিড পদ্ধতিতে জুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। সেটা এখনো ধরে রেখেছেন জুমিয়ারা।
তারা মাঘ-ফাল্গুন মাসে জঙ্গল কাটে। সে জঙ্গল চৈত্র মাসে শুরু থেকে আগুনে পুড়ে আগাছা পরিষ্কার করে। বৈশাখে সাধারণ ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের সুগন্ধিযুক্ত ধানসহ নানা শাক-সবজি, ফলমূল ও মসল্লা জাতীয় শস্য বা ফসলের বীজ বপন বা রোপন করে থাকে এবং ভাদ্র-আশ্বিন মাসে ধান পাকা শুরু হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জুমে পাকা ধান বা ফসল তোলার মৌসুম বলে জানান জুমিয়ারা।
সমূদ্রপৃষ্ট থেকে প্রায় দুই হাজার ফুট উচ্চতার তাগলকছড়া মৌন এলাকায় বসবাস করা ফাক্কো চাকমা নামক এক জুমিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এ বছর তাদের জুমে বেশ ভালো ফলন হয়েছে। এ জন্য জুমিয়াদের এই সময়ে খুশির খবরটা একটু আলাদা হয়। তাই তাদের ঘরে ঘরে প্রতিটি মুহূর্ত আনন্দে কাটে। প্রায় প্রতিদিনই আপ্যায়ন থাকে যা নবান্ন (নয়া ভাত) বলে।
আরও বেশ কয়েকজন জুমিয়ার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এবারে জুমে বেশ ফলন হয়েছে। ধানের অবস্থা খুবই ভালো। ধান ছাড়াও মারফা, চিনাল, বেগুন, তুলা, করলা, ডেঁঢ়স, কুমড়া, ধনিয়া, আদা, হলুদ, শুকুর, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টা, লাউ, শিম, কাউন, তিল, মরিচ কচু, জুমের আলু, কলা ও জুমের বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ও ফলমূল হয়েছে।
তাই জুমকে একটি বাজার ও অর্থনৈতিক আয়ের উৎসও বলে থাকেন। এক কথায় বলতে গেলে জুুুুমে কি না হয়। জুমে উৎপাদিত ফলমূল ও শস্য বিক্রয় করে অর্থনৈতিক চাকাকে সচল করে জুমিয়ারা। তাই পাহাড়িরা কৃষি কাজে এগিয়ে রয়েছেন বলা যায় বা পাহাড়ে জুমিয়ারা কৃষিকে ধরে রেখেছেন বলা হয়ে থাকে। একটু দেরিতে আসবে তিল, আদা, হলুদ ও মসল্লা জাতীয়সহ অন্যান্য ফসল ও ফলন। তাই জুমে উৎপাদিত আদা, হলুদ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে।
-এসআই/এমএ