ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই ভরসা
Published : Monday, 26 September, 2022 at 5:19 PM Count : 174
যশোরের শার্শা উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের সাড়াতলা বেলতা সড়কের পন্ডিতপুর-বেলতা গ্রামের মধ্যবর্তী মৌতার বাঁওড়। বাওড়ের দু'পাড়ের ৩০০ ফুট দূরত্বের মধ্যে রয়েছে পাকা রাস্তা। ডিহির বেলতা গ্রামের পর ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়ন। এই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের সহজ ও দু'পাড়ের স্থানীয় কৃষকদের মাঠের উৎপাদিত ফসল আনা নেওয়ার একমাত্র মাধ্যম এ বাঁওড়।
দীর্ঘদিনেও এ বাঁওড়ে ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় চলাচলে কয়েক বছর আগে স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় একটি বাঁশ-কাঠের সাঁকো তৈরি করা হয়। বর্তমানে সেটিও ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে মানুষ ও যানবাহন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বেড়েছে জনদূর্ভোগ।
সরেজমিনে জানা যায়, জনগুরুত্বপূর্ণ মৌতার বাওড়ের উপর স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় যাতায়াত ও ফসল আনা নেওয়া সহজীকরণে ৪/৫ বছর আগে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে একটি সাঁকো নির্মাণ করা হয়। প্রতিদিন শত শত মানুষ ও যানবাহন চলাচলের ফলে সাঁকোটি ভেঙ্গে পড়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ছোট ছোট যানবাহন নিয়ে মানুষ ঝুঁকিতে চলাচল করছে। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষ।
পন্ডিতপুর গ্রামের সুজাউদ্দীন বলেন, 'জনপ্রতিনিধির যথোপযুক্ত কোন পদক্ষেপ না থাকায় এলাকার মানুষের প্রচেষ্টায় নিজেরাই সাঁকোটি তৈরি করেছি। সাঁকোটি এখন দুর্বল কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে আছে। অতি প্রয়োজনের সময় ঝুঁকি
নিয়েই পার হতে হয় আমাদের। যেকোনো সময় সাঁকোটি ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।'
স্থানীয় কৃষক উজ্জ্বল বলেন, 'দীর্ঘদিন সাঁকোটি বেহাল অবস্থায় থাকলেও কারোর কোন মাথা ব্যাথা নেই। ওপার থেকে কৃষি পণ্য আমাদের অনেক কষ্ট করে ৪/৫ কিলোমিটার ঘুরে নিয়ে আসতে হয়। একটি ব্রিজ হলে আমাদের কষ্ট লাঘব হতো।'
কয়েকজন পথচারী বলেন, 'শার্শার সাড়াতলা হয়ে বেলতার ঝুঁকিপূর্ণ এই বাঁশ-কাঠের সাঁকো দিয়ে যেতে খুব কষ্ট হয়। সহজভাবে যাতায়াতের জন্য এই পথে আসি। না জানি কখন কি হয়। বর্তমান সরকারের এতো বড় বড় উন্নয়নের অর্জন হচ্ছে অথচ আমাদের এলাকার একটি ছোট ব্রিজ নির্মাণে দূর্দশা লাঘবে কেউ এগিয়ে আসছে না। এটা খুবই দূঃখজনক।'
স্থানীয় সমাজসেবক ডা. নুর ইসলাম তরফদার বলেন, 'সাড়াতলা বেলতা সড়কের পন্ডিতপুর-বেলতা গ্রামের মধ্যবর্তী মৌতার বাওড়। কোনো মতে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। একটা ব্রিজ দ্রুত নির্মাণ হলে দুই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এর সুফল ভোগ করবে।'
এ জন্য শার্শার সংসদ সদস্যসহ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ও ডিহি ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জজ মিয়া বলেন, 'স্থানীয়দের সকলের সহযোগিতায় আমরা চলাচলের জন্য বাঁশ, কাঠ দিয়ে একটি সাঁকো নির্মাণ করি। সেটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ। উপজেলা
প্রকৌশলী অফিসে বার বার যোগাযোগ করেও আশানুরূপ কিছু হচ্ছেনা। এই বাওড়ের উপর দ্রুত একটা ব্রিজ নির্মাণ জরুরী হয়ে পড়েছে।'
এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি মৌতার বাওড়ে ব্রিজ নির্মাণের। ব্রিজটি নির্মিত হলে শিক্ষার পাশাপাশি অর্থনেতিক উন্নয়ন ও হাজারো মানুষের দুর্ভোগ কমবে বলে জানান স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে স্থানীয় এলাকাবাসী কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
-ওয়াইআর/এমএ