For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

বাউফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

Published : Tuesday, 16 August, 2022 at 12:39 PM Count : 470

পটুয়াখালীর বাউফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত, স্লিপ ও রুটিনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে নামমাত্র কাজ করেই বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলণ করে নেোয়া হয়েছে। বিল তুলে নেোয়ার ক্ষেত্রে প্রকৌশলী ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উঠেছে উৎকোচের অভিযোগ। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি অর্থ বছর উপজেলার ২৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটিতে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য ১০ হাজার টাকা, স্লিপ প্রকল্পের জন্য ৫০ হাজার টাকা, ১২০টি বিদ্যালয়ে রুটিন মেরামতের জন্য ৪০ হাজার টাকা, ৭০টি বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটিতে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লাখ টাকা ও ৩১টি বিদ্যালয়ে ওয়াশব্লকের জন্য ২০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত ৩০ জুন কোনো কাজ না করেই অগ্রিম বিল-ভাউচার তৈরি করে বরাদ্দকৃত সব অর্থ উত্তোলন করে নেওয়া হয়। এর মধ্যে বামনীকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লাখ টাকা, স্লিপ প্রকল্পের জন্য ৫০ হাজার টাকা, রুটিন মেরামতের জন্য ৪০ হাজার টাকা ও প্রাক প্রাথমিক শ্রেীণ সজ্জিতকরণের জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ওই বিদ্যালয়ে ৪টি প্রকল্পের জন্য মোট ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও সিকি পরিমাণ কাজ করা হয়নি। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সব কাজই করা হয়েছে। 

৯নং শহীদ জালাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রুটিন মেরামতের জন্য ৪০ হাজার টাকা, স্লিপ প্রকল্পের জন্য ৫০ হাজার টাকা ও প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই বিদ্যালয়ে অপ্রয়োজনীয় একটি পুরোনো ভবনের পলেস্তরা মেরামত করছেন দুজন মিস্ত্রী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক বলেন, শহীদ জালাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকবছর আগে একটি অত্যাধুনিক সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে এই পুরোনো ভবনটি ব্যবহার হচ্ছে না। শুধু শুধু সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের অপচয় করা হচ্ছে। এসব বরাদ্দ কেন প্রয়োজন ছিল এমন প্রশ্নে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীল চন্দ্র শীল কোন উত্তর দিতে পারেননি।
১৬৬ নং ব্রাহ্মণেরবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লাখ টাকা, স্লিপ প্রকল্পের জন্য ৫০ হাজার টাকা ও প্রাক প্রাথমিকের জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ওই বিদ্যালয়ে একটি পুরোনো মেরামতযোগ্য ভবন থাকলেও তা মেরামত করা হয়নি। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঞ্চিতা রানী বলেন, পরবর্তীতে পুরানো ভবনটি আমরা মেরামত করবো। এবার ক্ষুদ্র মেরামতের অর্থ দিয়ে মাঠের উন্নয়ন করেছি।

কাছিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও অবস্থা একই। সেখানেও ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেওয়া ২ লাখ টাকার কোনো দৃশ্যমান কাজ করা হয়নি। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীল চন্দ্র দাস বলেন, আমাদের মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে।

বীরপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লাখ টাকা,  স্লিপ প্রকল্পের জন্য ৫০ হাজার টাকা ও প্রাক প্রাথমিকের জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এখানেও ৩টি প্রকল্পের কোনোকাজ শুরু করা হয়নি। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল লতিফ বলেন, খুব শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে।

আনারশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩টি প্রকল্পের জন্য মোট ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই বিদ্যালয়ে শুধু একটি পুরোনো ভবন রঙ করেই সমুদয় টাকা উত্তোলন করে নেওয়া হয়। বজলুর রহমান ফাউন্ডেশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ লাখ টাকা ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। অথচ ওই বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামতের কোনো কাজই নেই। 

সূত্রমতে, এভাবেই অধিকাংশ বিদ্যালয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলন করে নেওয়া হয়েছে। অপর একটি সূত্র জানায়, প্রতিটি বিদ্যালয়ের বিল উত্তোলনের ক্ষেত্রে এলজিইডি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলীকে ৫ হাজার টাকা, উপজেলা প্রকৌশলীকে ৫ হাজার, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে ৫ হাজার টাকা উৎকোচ দিতে হয়। উৎকোচের টাকা দিলেই শতভাগ কাজ করার প্রত্যয়ন দেওয়া হয়। অবশ্য উৎকোচ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান হোসেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশীষ ঘোষ বলেন, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের উৎকোচ নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। তিনি বলেন, কোনৈা বিদ্যালয়ে প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ না হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এএস/এনএন

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,