১২ ঘণ্টাও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন। সেখানে একের পর এক কনটেইনার বিস্ফোরণ হচ্ছে। দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুনের লেলিহান শিখা। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে ৪৫০ জনের বেশি মানুষ।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের পর এ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা। এ ছাড়া আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শাহজাহান শিকদার জানান, নিরাপদ দূরত্বে থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। বর্তমানে কাজ করছেন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনীর মোট ২৫টি ইউনিটের কর্মীরা।
আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা ফায়ার ফাইটার রাবিক হাসান বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) রাত থেকে টানা কাজ করছি। কোনোভাবেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।’
জেলা পুলিশের এস আই আলাউদ্দিন জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে পাঁচজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রয়েছেন। দগ্ধ ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা ৪৫০’র বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪৩ জন এবং পুলিশের ১৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে আগুন লাগার পর কনটেইনারের সামনে সরাসরি পানির পাইপ ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা হতাহত হন। এজন্য ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পাইপ হাতে না ধরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে পানি দিচ্ছেন।
জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো কর্মচঞ্চল এ কনটেইনার ডিপোটিতে হঠাৎ গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে। কেমিক্যালের কয়েকটি কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই আশপাশের চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার এলাকার অনেক বাসা-বাড়ির জানালার কাঁচও ভেঙে পড়ে এ বিকট শব্দে। এর মধ্যে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু, ডিপোটিতে থাকা কিছু কনটেইনারে রাসায়নিক পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্টদের।
এনএন