For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

কৃষি জমিতে চলছে পুকুর খনন

Published : Sunday, 17 April, 2022 at 7:15 PM Count : 123

নাটোরেবড়াইগ্রামে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি জমিতে অবাধে চলছে পুকুর খনন। সরকারি অফিসের অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই কৃষি জমিতে এমন ধ্বংসযজ্ঞ চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু অভিযান চললেও কৃষি জমিসহ নদী ও খাস জমি দখল করে চলছে পুকুর খনন। এতে করে শুধু কৃষি জমিই নষ্ট হচ্ছে না, পরিবেশের ওপরও বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা রয়েছে। 

এছাড়া, মাটি বহনকারী ট্রাক্টর চলাচলের কারণে সড়ক-মহাসড়কেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত এর অবসান না হলে জলাবদ্ধতাসহ পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়ারও আশঙ্কা করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়নের রামাগাড়ি বিলে আবুল কালাম আজাদ নামে এক ব্যক্তির পাঁচ বিঘা জমিতে অবৈধ ভাবে এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে অবাধে পুকুর খনন চলছে। চন্ডীপুর গ্রামে সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রি করছেন মাটি ব্যবসায়ী মানিক। আটুয়া গ্রামের বজলুর রহমান ও দুলাল হোসেন বিল দোবিলায় প্রায় আট বিঘা খাস জমি দখল করে জোরপূর্বক পুকুর খনন করছেন। গোপালপুর ইউনিয়নের পুর্ণকলস কুমিল্লাপাড়ায় শ্রী নিপুণ কুমারের আট বিঘা জমিতে পুকুর খনন করছেন মাটি ব্যবসায়ী কবির হোসেন। গোপালপুর ঘোপপাড়ায় চার বিঘা জমিতে পুকুর খনন করছেন আরেক মাটি ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম। 
এছাড়া, একই ইউনিয়নের গড়মাটি খাঁ পাড়ায় জামাত আলীর চার বিঘা জমিতে, মাঝগাঁও ইউনিয়নের বড়দেহা গ্রামে আবাদি জমির সঙ্গে পাশের বড়াল নদীর অর্ধেকটা দখল করে নিয়ে পুকুর খনন করা হচ্ছে। বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মেদপুর, মেরিগাছা, মামুদপুর, কচুগাড়ি, কামারদহ, রাজাপুর, চান্দাই ও নওদাজোয়াড়ীসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে অবাধে পুকুর খনন। এসব পুকুরের মাটি বিক্রি হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটায়। সেই সঙ্গে পাকা-কাঁচা ও মহাসড়ক ব্যবহার করছে মাটি বহনকারী ট্রাক্টর। এতে ক্ষতি হচ্ছে রাস্তাঘাটের। ঘটছে দুর্ঘটনা, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।

ট্রাক্টর মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি গাড়ির মাটি বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকায়। সেই সঙ্গে গাড়িগুলোর চালক বেশির ভাগই অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক। তাদের বয়স ১৫-১৮ বছরের মধ্যে। তাদের কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স বা গাড়ি চালানোর কোন বৈধ কাগজপত্র নেই।

এলাকাবাসী জানান, মাঝে মধ্যে প্রশাসনের দু’একটি অভিযান চললেও কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না কৃষিজমিতে পুকুর খনন। এর সাথে উপজেলা প্রশাসনের কিছু অসৎ কর্মকর্তারা জড়িত থাকায় কোনো পদক্ষেপই কার্যকর হচ্ছে না বলে জানান তারা। ইতিমধ্যেই ইউএনও’র অফিস সহকারী শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে উৎকোচের বিনিময়ে বিভিন্ন স্থানে পুকুর খননে সহায়তার অভিযোগে কমপক্ষে পাঁচজন ব্যক্তি পৃথক লিখিত আবেদন করেছেন। কিন্তু গত আড়াই মাসেও প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। 

রামাগাড়ি এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, রাতভর রাস্তা দিয়ে মাটি বোঝাই ট্রাক্টর চলে, ট্রাক্টরের বিকট শব্দে ঘুমাতে পারি না। মাটি খেকোদের কারণে সারা দিন রোজা রেখে রাতে একটু শান্তিতে ঘুমাবো, সে উপায় নেই। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, কৃষি জমি বিনষ্ট করে পুকুর খনন একটি বড় অপরাধ। 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারিয়াম খাতুন বলেন, কৃষি জমিতে পুকুর খননের অভিযোগে জেল-জরিমানাসহ গাড়ির ব্যাটারি জব্দ করা হচ্ছে। অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগ তদন্তে এসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

-এএইচ/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,