কাজ শেষ হলেও বেতন পাননি কর্মসৃজন প্রকল্পের কর্মীরা
Published : Sunday, 17 April, 2022 at 6:56 PM Count : 116
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চারটি ইউনিয়নের কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে দেড় মাস আগে। কিন্তু অদ্যাবধি তারা পূর্ণাঙ্গ বেতন পাননি। সামনে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর থাকায় বেতন না পেয়ে ক্ষোভ ও হতাশা জানিয়েছেন প্রকল্পের শ্রমিকরা।
এ সমস্ত অসহায় ও দরিদ্র শ্রমিকরা আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের আগেই তাদের বকেয়া সমুদয় বেতন পরিশোধে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে গোয়ালন্দে গত ০৮ জানুয়ারি ৪০ দিন মেয়াদী কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় গত ০২ মার্চ। উপজেলার চারটি ইউনিয়নে তিনটি করে প্রকল্প নিয়ে মোট ১২টি প্রকল্পে ৫০৮ জন শ্রমিক কাজ করেন। তাদের জন্য নির্ধারিত দৈনিক পারিশ্রমিক ছিল চারশ টাকা করে। এ হিসেবে প্রত্যেকে ১৬ হাজার টাকা করে পাওয়ার কথা। তবে অনুপস্থিতির জন্য কারো কারো টাকার অংক কিছুটা কম হবে।
এদিকে, প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে ইতিমধ্যে দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও হতদরিদ্র কর্মীরা তাদের বেতন না পেয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে পড়েছেন।
প্রকল্পের কর্মী রুমা খাতুন, আফরোজা বেগম, বাচ্চু খান,খলিল মোল্লা, পান্নু ফকিরসহ অনেকেই জানান, তারা অত্যন্ত গরীব মানুষ। খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে রাস্তায় কাজ করেছেন। রোজার মাস চলছে। টাকার অভাবে ঠিকমতো সেহরি ও ইফতারি করতে পারছেন না। এর মধ্যেই আসছে ঈদ। সময় মতো টাকা না পেলে ছেলে-মেয়ে ও নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয় নতুন জামা-কাপড় কেনা হবে না। এমতাবস্থাতেও আমাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হচ্ছে না। আমরা দ্রুত আমাদের সমুদয় বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি।
উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য লিয়াকত হোসেন লিপু জানান, তার ওয়ার্ডে প্রকল্পের একটি রাস্তার কাজ হয়েছে।কর্মীরা বেতনের খোঁজ খবর নেয়ার জন্য প্রতিদিনই আমার বাড়িতে আসেন। তারা খুবই কষ্টে আছেন। দ্রুত বেতন পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল বলেন, বিকাশ সংক্রান্ত কিছু সমস্যা ছিল যা অনেক আগেই সংশোধন করে দিয়েছি। কর্মীরা বেতন না পেয়ে প্রতিদিনই আমাদের কার্যালয়ে এসে ভিড় করেন। ঈদের আগেই তাদের পুরো বেতন পরিশোধ হওয়া দরকার।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু সাঈদ মন্ডল জানান, এ বছর কর্মসৃজন প্রকল্পের কর্মীদের বেতন বিকাশের মাধ্যমে দেয়া হবে। প্রত্যেকে ঘরে বসেই তাদের নিজ নিজ মোবাইলের মাধ্যমে বেতন পেয়ে যাবেন। এ জন্য আমরা অনেক আগেই যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করেছি। ৫০৮ জন শ্রমিকের জন্য ৭৯ লক্ষ ৬ হাজার টাকার একটি বিলও প্রস্তুত করে যথাযথ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিয়েছি। তবে এর মধ্যে ২২০ জন কর্মীর বিকাশ নাম্বার তাদের নিজ নিজ জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে খোলা না থাকায় সেগুলো ঠিক করে দেয়ার জন্য আমাদের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। আমরা সে কাজও ইতিমধ্যে শেষ করে পুনরায় পাঠিয়েছি। আশা করি ঈদের আগেই তারা সমুদয় বকেয়া বেতন পেয়ে যাবেন। অপর ২৮৮ জনের অনেকেই কিছু পরিমাণ টাকা পেয়েছেন বলে শুনেছি। ঈদের আগে সবাই পুরো টাকা পেয়ে যাবেন বলে আশা করি।
-এসআই/এমএ