For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

কমলগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গাছ বিক্রির অভিযোগ

Published : Friday, 18 March, 2022 at 4:30 PM Count : 152

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বন বিভাগের অনুমতি না নিয়ে অবৈধভাবে ইউনিয়ন পরিষদের ১১টি গামাই গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমেদের বিরুদ্ধে। 

গাছ বিক্রির ৪ দিন পর বিকেলে পরিষদের সভা ডেকে গাছ কাটার বৈধতা দিতে কার্যবিরণী তৈরির উদ্যোগ নিয়ে এক পরিষদ সদস্যের তোপের মুখে পড়েন ইউপি চেয়ারম্যান। গত ১৪ মার্চ শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় ১১টি গামাই গাছ কেটে নেন ব্যবসায়ী হুমায়ূন কবীর। 

জানা যায়, উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবনের পাশেই পুরোনো ইউনিয়ন পরিষদ ভবন দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পরিত্যক্ত ভবন এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২৫/৩০টি গামাই গাছসহ নানা জাতের গাছ সৃজিত আছে। এমতাবস্থায় কোনো প্রকার পূর্ব অনুমতি বা নিলাম ছাড়াই সম্প্রতি শমশেরনগর এলাকার গাছ ব্যবসায়ী হুমাইয়ূন কবিরে কাছে বিক্রি করে দেন। ওই ব্যবসায়ী গাছ কাটতে গেলে স্থানীয় এলাকাবাসী বাধা দিলে গাছ কাটা বন্ধ করে দেন। এর মধ্যে পরিত্যক্ত পরিষদ ভবন এলাকায় সৃজিত ১০টি গাছ ঢালপালাসহ কেটে নিয়ে যায় এবং ১টি গাছের কিছু অংশ কেটে ফেলে রাখেন। কেটে নেওয়া গাছের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা।

১৭ মার্চ সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ী হুমাইয়ূন কবীর শশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের পুরানো ভবন এলাকার মধ্যে সৃজিত ১০টি গামাই গাছ ঢালপালাসহ কেটে নিয়ে যায় এবং ১টি গাছের কিছু অংশ কেটে ফেলে রাখেন। ওই দিনই বিকাল ৫ টায় পরিষদের বৈঠকে পরিষদের সদস্য তাজুদ আলী ও ইজ্জাদুর রহমান গাছ কিভাবে এবং কত টাকায় বিক্রি করা হয়েছে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ বলেন, গাছগুলো বিক্রি করা হয়নি। স্থানীয় একটি শ্মশান ঘাটের উন্নয়ন কাজের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। এখন যখন প্রশ্ন উঠেছে, সেহেতু দাঁড়ানো গাছসমূহ নিলাম দেওয়া হবে ও কার্যবিবরণীতে লিপিবদ্ধ করা হবে।
শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড সদস্য তাজুদ আলী ও ৩নং ওয়ার্ড সদস্য মো. ইজ্জাদুর বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান গাছ হোক বা অন্য কিছু বিক্রি করতে হলে বিধি মোতাবেক কার্যবিরণী লিপিবদ্ধ করে নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে করতে হয়। আর গাছ বিক্রি করতে হলে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে নিলাম দিয়ে গাছ কাটতে বা বিক্রি করতে হয়। গত ১৪ মার্চ শমশেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ ধরনের কোন অনুমতি না নিয়ে অবৈধভাবে গাছ কেটে তার নিজস্ব এক ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেছেন। তিনি এখন এ গাছ কাটার কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধ করতে চাইছেন।

গাছ কেনা ও কাটার বিষয়ে ব্যবসায়ী হুমায়ূন কবির বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব বলেছিলেন গাছগুলো কেটে দেওয়ার জন্য তাই আমি কেটে দিয়েছি এ ছাড়া আমি আর কিছুই জানি না।
 
সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কেটে বিক্রির পূর্বানুমতি সম্পর্কে জানতে চেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক ও রাজকান্দি বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তারা রিসিভ করেননি।

তবে শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.জুয়েল আহমদ বলেন, বেশ কিছু দিন আগে পরিষদের পুরাতন ভবন এলাকার কয়েকটি গাছের মাথা ভেঙে যায়। সেগুলো তিনি বিক্রি না করে একটি শ্মশান ঘাটের উন্নয়ন কাজের জন্য দান করেছেন। দান করা ছোট আকারের এসব গাছ কাটা হয়েছে। আর পরিষদের বৈঠকে গাছ বিক্রি করার জন্য কার্যবিবরণীতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

কমলগঞ্জের রাজকান্দি বন কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কোনো ইউনিয়ন পরিষদের গাছ বিক্রি করতে হলে আগে গাছ কাটার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ্য করে পরিষদে সভা করে কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধ করতে হয়। পরে এ কার্যবিবরণী কপিসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করলে তিনি বন কর্মকর্তার মাধ্যমে উল্লিখিত গাছের মূল্য নির্ধারণ করাবেন। তারপরও নিলামে এ গাছগুলো বিক্রি করে কাটা যায়। তার আগে নয়। এ ক্ষেত্রে শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদে অবৈধভাবে গাছ বিক্রি করে কাটা হয় বলে তিনি মনে করেন।

-এসএস/এনএন

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,