নোয়াখালীতে জামাইকে হত্যা করে লাশ বাড়ি পাঠালেন শ্বশুর
Published : Sunday, 13 March, 2022 at 6:54 PM Count : 94
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মেয়ের জামাইকে তুলে নেওয়ার ৩ ঘন্টা পর হত্যা করে লাশ ছেলের বাড়িতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরের বিরুদ্ধে। তবে তাৎক্ষণিক পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি।
নিহত যুবকের নাম মো. মোবারক হোসেন শাওন (১৮)। তিনি উপজেলার ১৪নং হাজীপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর গ্রামের চিরাম বাড়ির শাহাব উদ্দিনের ছেলে।
শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলের দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে একই দিন রাত ১০টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের চাচাতো ভাই মাস্টার সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, শাওন উপজেলার চৌমুহনী বাজারের হকার্স মার্কেটের তাহেরা ট্রেডার্সের মালিক হাজী আব্দুল মালেকের দোকানে চাকরি করত। দুই মাস আগে আমরা জানতে পারি শাওনের সাথে মালেক তার পালক মেয়েকে বিয়ে দেন। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শাওনের শ্বশুর তার বাড়িতে এসে তাকে খোঁজ করতে থাকে। এ সময় শাওনের মা তাকে জানায় শাওন এখন ঘরে নেই। এপর্যায়ে শাওন গোসল করে ঘরে এলে তার শ্বশুর তাকে বলে সুন্দর দেখে পাঞ্জাবি ও লুঙ্গি পরে নাও। শাওন ঘর থেকে বের হয়ে এলে শ্বশুর তাকে বলে তোমার মাকে একটু সালাম দিয়ে নাও, দোয়া নাও এবং মাফ চেয়ে নাও।
তিনি আরও জানান, রাতে শাওনের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তার স্ত্রী পুলিশকে জানায়, শাওনকে বিকেলে তার বাবা তাদের সামনে মারধর করে। তারপর সেখান থেকে তাকে কোথায় নিয়ে যায়, সেটা জানি না।
নিহতের মা শামসুন্নাহার অভিযোগ করেন, দুপুরের দিকে মতিন আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। সন্ধ্যার দিকে আমি ঘরে একা ছিলাম। ওই সময় মতিনের দোকানের দুজন কর্মচারি কৌশলে আমার ছেলের মরদেহ ঘরে দিয়ে দ্রুত চলে যায়। মতিন গোপনে তার পালক মেয়েকে আমার ছেলের কাছে বিয়ে দেয়। তিনি আমার ছেলেকে আমাদের কাছে আসতে দিতেন না। আসলে সাথে সাথে লোক পাঠিয়ে, না হয় নিজে এসে নিয়ে যেত। আমার ছেলে এসব বিষয়ে কখনো আমার কাছে মুখ খুলতো না। আমার ছেলে কোরআনে হাফেজ ছিল। মনে হয় এ জন্য তিনি আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছেন।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক বলেন, খবর পেয়ে নিহতের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় এনে রাখা হয়েছে। এর আগে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন করা হয়। শরীরে বড় কোনো আঘাতের চিহৃ নেই। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, দুপুরে শ্বশুর তাকে নিয়ে যায়। এরপর হত্যা করে সন্ধ্যায় লাশ পাঠিয়ে দেয়।
এসআই এনামুল হক আরও বলেন, রোববার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আইইউ/এনএন