গাজীপুরে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা
Published : Sunday, 27 February, 2022 at 4:49 PM Count : 410
গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে সোহেল আহম্মদ (৩৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় রোববার সকালে নিহতের ছোট ভাই মো. সোহাগ (৩৪) বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে ৫ নারীসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়।
অভিযুক্তরা হলো জেরিন (২৫) ও তার স্বামী মামুন (৩৫) উপজেলার জামালপুর গ্রামের বাসিন্দা, বন্যা (২২), তার স্বামী শুকুর আলী হিমেল (২৮), ভাই জুবায়ের (২০) ও মা জুলেখা (৫৫) উপজেলার দক্ষিণবাগ গ্রামের বাসিন্দা, শরীফ (৩২) ও তার স্ত্রী জেমি (৩০) উপজেলার বাহাদুরসাদী গ্রামের বাসিন্দা, সাগর (৩৬) ও তার স্ত্রী মাকসুদা (২৮) বেগম। তবে তাদের গ্রামের নাম জানা যায়নি। অন্যদিকে নিহত সোহেল উপজেলার বাহাদুরসাদী মধ্যপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত আব্দুল সালামের ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিন্টু মিয়া বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। পরে দুপুরে সেখান থেকে প্রাথমিক সুরতহাল সম্পন্ন করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এতে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের ব্যাপারে পুলিশের অভিযান আব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
নিহতের ছোট ভাই মামলার বাদী মো. সোহাগ বলেন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে জেরিন নামের ওই নারী মোবাইল ফোনে সোহেলকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেরিনের স্বামী মামুন ফোন দিয়ে জানায় সোহেলকে জেরিনদের বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। এরপর মামুন আরো ২ বার ফোন দেন। কিন্তু বেশি রাত হওয়ায় আমি সেখানে আর যাইনি। তবে বিষয়টি ফোনে স্থানীয় ইউপি সদস্য পনিরকে জানাই। পরে মেম্বার জেরিনদের বাড়িতে গিয়ে সোহেলকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে হাসপাতালের বিষয়টি জানতে পেরে শনিবার সকালে যাই। সেখানে গিয়ে সোহেলের বাম পায়ে গুরুতর আঘাতের চিহ্নসহ ডান পায়ে ও শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের আলামত পাওয়া যায়। এর কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, ওইদিন জেরিনদের বাড়ির উঠানে বরই গাছের সাথে সোহেলকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বাঁশ, কাঠের টুকরা ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে উঠানে ফেলে রাখে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) অভিজিৎ দাস জানান, ২৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে আহত অবস্থায় প্রতিবেশী পরিচয়ে জুবায়ের ও পনির নামে দুইজন লোক সোহেলকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জান্নাতুল ঢাকায় প্রেরণের পরামর্শ দেন। কিন্তু এরইমধ্যে সোহেলকে হাসপাতালে নিয়ে আসা ওই দুইজন লোক পালিয়ে যায়। সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে থানায় খবর দিলে থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
-আরএইচ/এনএন