For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

রোহিঙ্গাক্যাম্পে চাকরির দাবিতে কাফনের কাপড় পরে স্থানীয়দের বিক্ষোভ

Published : Sunday, 27 December, 2020 at 6:34 PM Count : 58

রোহিঙ্গাদের বাদ দিয়ে চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে কয়েকশ স্থানীয় বাসিন্দা ‘কাফনের কাপড়’ পড়ে দীর্ঘ সাত ঘন্টা ধরে বিক্ষোভ করেছে কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি। এসময় বিক্ষোভকারীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে শরণার্থী ক্যাম্পে চাকরিরত এনজিও কর্মীদের প্রবেশে বাধা দেয়।

পরে উপজেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় আন্দোলনকারী ও এনজিও প্রতিনিধিদের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী বৈঠকের পর আগামী ১০ জানুয়ারি আবারো আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ কর্মসূচী ওইদিন পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা দেয়।

রোববার সকাল ৭টা থেকে শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের (কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক) উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী স্টেশনে স্থানীয়রা ‘পালংখালী অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির’ ব্যানারে এ বিক্ষোভ কর্মসূচী শুরু করে।

বিক্ষোভ কর্মসূচীতে পালংখালীর কয়েক শত বেকার যুবক কাফনের কাপড় পরে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। একপর্যায়ে গাড়ী তল্লাশী করে ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও কর্মীদের ফিরিয়ে দিয়ে বাধা প্রদান করে। এতে অন্তত ৩ শতাধিক এনজিও কর্মী ক্যাম্পে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে যায়।
পরে দুপুর ২টায় উখিয়ার ইউএনও’র মধ্যস্থতায় আন্দোলনকারী ও এনজিও প্রতিনিধিদের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী সমঝোতা বৈঠকের পর বিক্ষোভ কর্মসূচী আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

পালংখালী অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক রবিউল ইসলাম রবি বলেন, উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নে অবস্থিত বিভিন্ন ক্যাম্পে এনজিও সংস্থাগুলোতে অসংখ্য রোহিঙ্গাদের চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অথচ যোগ্যতা থাকা স্বত্ত্বেও স্থানীয় বেকার যুবকদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। উপরন্ত স্থানীয়দের মধ্যে অনেককে চাকরিচ্যুতও করা হয়েছে।

‘শুধুমাত্র পালংখালীস্থ ১৪ নম্বর ও ১৭ নম্বর ক্যাম্পে ২৮৬ জন রোহিঙ্গাকে চাকরি দিয়ে এমএসএফ নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। যাদের কারো কারো বেতন ২৪ হাজার থেকে ৭৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। অথচ পালংখালীতে অসংখ্য যুবক বেকার থাকা সত্ত্বেও এনজিও সংস্থাটি স্থানীয়দের চাকরিতে নিয়োগ দিচ্ছে না। “

এ নিয়ে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে এনজিও সংস্থা এমএসএফ প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি বলে অভিযোগ করেন রবিউল।

আন্দোলনকারি সংগঠনটির সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, এনজিও সংস্থাগুলোতে কর্মরত রোহিঙ্গাদের বাদ দিয়ে স্থানীয়দের নিয়োগের দাবি গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে তারা দাবি জানিয়ে আসছিল। স্থানীয়রা এ নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচী দিলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও এনজিও সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা বৈঠকের মাধ্যমে দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছিল।

‘অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার, উখিয়ার ইউএনও, এনজিও ও আন্দোলনকারিদের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে স্থানীয়দের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে চাকুরি প্রত্যাশীদের একটি তালিকাও জমা দেয়া হয়েছিল।’ কিন্তু দীর্ঘ ৪/৫ মাস পরও দাবি পূরণ না হওয়া স্থানীয়রা বিক্ষোভ কমূসূচী পালন করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানান আন্দোলনকারিদের এ সমন্বয়ক।

পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার কারণে স্থানীয় শ্রমবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্যাম্পে কর্মরত এনজিওগুলোতে রোহিঙ্গাদের চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হলেও স্থানীয় অসংখ্য যুবক বেকার রয়েছে। তাই স্থানীয়রা তাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলনে নেমেছে।

এনজিও সংস্থাগুলো স্থানীয়দের চাকরি না দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়োগ দেয়ার কারণে তাদের (রোহিঙ্গা) স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা চলছে বলেও মন্তব্য করেন স্থানীয় এ ইউপি চেয়ারম্যান।

এদিকে উদ্ভুদ পরিস্থিতিতে উখিয়ার ইউএনও’র মধ্যস্থতায় আন্দোলনকারী ও এনজিও প্রতিনিধিদের মধ্যে দুপুর ২টায় উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে এক সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীরা আগামী ১০ জানুয়ারি  পর্যন্ত বিক্ষোভ কর্মসূচী স্থগিত করার ঘোষণা দেন।

এনিয়ে উখিয়ার ইউএনও নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্থানীয়দের এনজিও সংস্থাগুলোতে নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের খবর পেয়ে প্রশাসন উভয়পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক সমঝোতা বৈঠকের আয়োজন করে। এতে উভয়পক্ষ সমস্যা সমাধানে আলাপ-আলোচনার জন্য আগামী ১০ জানুয়ারী দিন ধার্য করেছে। এর প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারিরা আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচী স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে বলে জানান ইউএনও।

এ ব্যাপারে পালংখালী অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক রবিউল ইসলাম রবি জানান, সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারিরা আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরও অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে সমাধান না এলে তারা (আন্দোলনকারী) আবারো দাবি আদায়ের কর্মসূচী ঘোষণা দেবে।

এসআই/এইচএস


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,