কলাপাড়া উপজেলার সবজির ভান্ডার খ্যাত নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামের শত শত কৃষক সবজি চাষে সফল হয়েছেন। করোনাকলে তারা সবজি চাষ ও চারা উৎপাদন করে অর্থ সংকট কাটিয়ে পটুয়াখালী জেলার সবজির চাহিদা পূরন করছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা, নাওভাঙা, নেয়ামতপুর, মজিদপুর, এলেমপুর, বাইন তলা, ফরিদগঞ্জ ও ছোট কুমিরমারা গ্রামের কৃষকরা ২’শ একর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করছে। এছাড়া বাড়ির আঙিনা ও সামান্য খালি যায়গায় তারা শীতকালীন সবজি চাষ করেন। আমন ধান কাটার পর পরই তারা বিভিন্ন এসব সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে পরেন। এবছর আমনের বাম্পার ফলন এবং তুলনা মূলক বাজর দর বেশি পেয়ে এলাকার কৃষকরা আনন্দিত। আগাম শীতের সবজি উৎপাদন করে বাজারে তুলে ভাল দাম পেয়ে করোনাকালীন আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠেছেন ওই এলাকার কৃষকরা। তাদের সাফল্যে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে সবজি চাষে এগিয়ে আসছেন। এলাকার বেকার যুবকরা সারা বছর সবজি উৎপাদন করার জন্য খেত তৈরি করে রাখেন। এর ফলে বেকারত্ব আর দারিদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছেন বেশ কয়েকজন বেকার যুবক।
তারা আরও জানান, নিজেদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিষমুক্ত সবজি চাষ করে স্থানীয় বাজারে অধিক মূল্যে বিক্রি করে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গেছে, কুমিরমারা, সোনাতলা, বাইনতলার গ্রামের ১ হাজার কৃষক ২ হাজার একরের বেশি জমিতে শীতকালীন সবজি উৎপাদন করে নিজেদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। তারা ফুল কপি, বাধাকপি, টমেটো, ওল কপি, গাজর, লাউ, বেগুন, করলা, লাল শাক, মিষ্টিকুমরা, শষা, কলমি শাক, ডাঁটাশাক, ধনিয়াপাতা, সিম, বরবটিসহ প্রায় সব ধরনের সবজি চাষ করেন।
নাওভাঙা গ্রামের সবজি চাষি মো.আবুল হোসেন (৪০) জানান, ২০ বছরের বেশি সময় ধরে আমি কৃষি কাজের সাথে যুক্ত আছি তবে সবজি চাষে বেশি পরিশ্রম হলেও আমার কাছে বেশি লাভজনক মনে হয়। আমি ৩ বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেছি। সবজি চাষ করে বছরে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা আয় করি।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাড. নাসির উদ্দিন মাহমুদ জানান, সবজি ভান্ডার খ্যাত নীলগঞ্জের কৃষকদের উৎপাদিত সবজি জেলার চাহিদা মেটায়। কৃষকদের উৎসাহ দিতে আমি সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি। কৃষকদের সরকারী ভাবে আরও উন্নত প্রশিক্ষন ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা করে দিলে এলাকার কৃষি উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুলল্লাহ আল মামুন বলেন, নীলগঞ্জের আগ্রহী সবজি চাষিদের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষন প্রদান, বালাই দমন, স্থানীয় বাজার ছাড়াও জেলার বিভিন্ন বাজার সবজি বাজারজাতসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদানসহ সাধ্যমত সাহায়তা প্রদান করে যাচ্ছি।
টিএইচ/এসআর