For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

নওগাঁয় দিনে ও রাতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পাহারা দিচ্ছে প্রকৌশলীরা

Published : Saturday, 3 October, 2020 at 10:51 AM Count : 271

নওগাঁয় দ্বিতীয় দফার বন্যা ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। প্রথম দফা বন্যার ঘা শুকাতে না শুকাতেই আরেক দফার বন্যা হানা দিয়েছে নওগাঁর রাণীনগর, আত্রাই ও মান্দা উপজেলাতে। দ্বিতীয় দফার বন্যার হাত থেকে নদীর তীরবর্তি ঝুঁকিপূর্ন গ্রামগুলোকে রক্ষা করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরাও দিনে ও রাতে পাহারা দিচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধগুলো। কোথাও কোন সমস্যা দেখা দিলেই স্থানীয়দের সহায়তায় তা রক্ষা করার চেস্টা চালিয়ে আসছেন প্রকৌশলীরা। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে প্রথম দফার বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই গত মাসের শেষে দিকে প্রবল বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলের কারণে নওগাঁর দুটি প্রধান নদীসহ ৭টি নদীতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকে পানি। পরবর্তিতে দ্বিতীয় দফার ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয় নওগাঁ জেলা। বর্তমানে আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগ্রাসি রূপ ধারন করেছে আত্রাই নদী। ফুলে-ফেপে উঠেছে আত্রাই নদীর প্রতিটি অংশ। আত্রাই উপজেলার আত্রাই নদীর তীরে অবস্থিত একটি গ্রাম রসুলপুর। 

সম্প্রতি নওগাঁ-আত্রাই-নাটোর মহাসড়কের পাশে রসুলপুর গ্রামের সিপেজের ফলে সৃষ্ট স্ল্যাপ ধসের সূচনা হয়। খবর পেয়ে সেই সৃষ্ট ধসে তাৎক্ষণিক ভাবে স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে পানি উন্নয়নের বোর্ডের প্রকৌশলীসহ অন্যান্য কর্মচারীরা মেরামত করেন। যার ফলে নওগাঁ-আত্রাই মহাসড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ার হাত থেকে যেমন রক্ষা পায় তেমনি ভাবে বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেলো অর্ধশতাধিক গ্রাম ও কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। 

অপরদিকে বাপাউবোর সার্বিক সহায়তায় রক্ষা পেলো আত্রাই নদীর তীরবর্তি আকেটি গ্রাম দর্শন। দর্শন হচ্ছে আত্রাই নদীর বাম তীরে নাগর ভ্যালি প্রকল্পের অধীনস্থ বাপাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন গ্রাম। আত্রাই নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে বাঁধের বিভিন্ন অংশ দিয়ে গ্রামের ভিতর পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। বিষয়টি জানার পর বাপাউবোর কর্মচারী-কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থেকে ওভারটপিং নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। বৃহস্পতিবার সকলের অজান্তে দর্শন গ্রামের এক বাড়ির নীচ দিয়ে সিপেজ হওয়া শুরু করে এবং বাড়িটিতে ফাটল দেখা দেয়। পরবর্তিতে বাপাউবোর তত্ত্বাবধানে দেড়শতাধিক মানুষের চেষ্টায় গ্রামটিকে বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়। দর্শন গ্রামসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক হেক্টর জমির ফসল ও শতাধিক পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়।
দর্শন গ্রামের বাসিন্দা সেলিম মাস্টার বলেন, আমার জন্মের পর থেকে দেখা বন্যার মধ্য এই রকম বন্যা কখনো দেখিনি। আমার গ্রামের বেশির ভাগ লোকজনই কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি যে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনরা স্থানীয়দের সহায়তা নিয়ে গ্রামটিকে বন্যার ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পেরেছে। রক্ষা পেয়েছে শত শত হেক্টর জমির আমন ধান ও শতাধিক পুকুরের মাছ। তাৎক্ষনিক ভাবে যদি পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনরা পদক্ষেপ না নিতো তাহলে আমরা গ্রামবাসীরা পানির সঙ্গে ভেসে চলে যেতাম।  

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি নদীর ঝুঁকিপূর্ন বেড়িবাঁধের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন অংশগুলো মেরামত করতে। রাত-দিন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধগুলোর ঝুঁকিপূর্ন অংশগুলো পর্যবেক্ষন করছি আর নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে তাৎক্ষনিক ভাবে তা রক্ষা করার চেষ্টা করছি। এছাড়া আমার নির্বাহী প্রকৌশলী পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে টহল জোরদার করার জন্য এলাকা ভাগ করে দিয়েছেন। সেই অনুপাতে আমরা যার যার অংশের ঝুঁকিপূর্ন অংশগুলো কঠোর নজরদারীতে রেখেছি। আশা করছি এতে অনেক গ্রাম ও জমির ফসল বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে। দিনে কিংবা রাতে বাঁধের কোথাও কোনো সমস্যা হলে স্থানীয়দের সহায়তা নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এআরআর/এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,