বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার ৫টি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে বন্যায় বগুড়ার চরাঞ্চল এখন বিরান ভূমি। রেখে গেছে ধংসলীলা।
চরাঞ্চলের অনেকের ঘরবাড়ি ভেসে গেছে বন্যার স্রোতে। ফসলের পলি মাটির মাঠ বালুর মোটা আস্তরণে ঢেকে গেছে। তৃতীয় দফায় দেড় মাসের বন্যায় বগুড়ার ৫টি উপজেলায় ৭ হাজার ৩৬২ হেক্টর ফসলের জমি বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এই জমির প্রায় ৮০ কোটি টাকার ফসল হানি হওয়ায় বগুড়ার বন্যা কবলিত অঞ্চলের ৪৯ হাজার ৩৭৮ জন কৃষক চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
সরকারি সহায়তা পেলে আবার তারা ঘুরে দাঁড়িয়ে অর্থনীতির চাকা সচল করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রণোদনার বরাদ্দও এসেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মহসিন জানান, এবারের বন্যায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, গাবতলী উপজেলায় ২১ হাজার ৯০৩ মেট্রিক টন আউস, বিভিন্ন সবজি, পাট, আমনের চারা, মরিচ, ভুট্টা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
বন্যা কবলিত অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ ৪৯ হাজার ৩৭৮ জন কৃষক সরকারি সহায়তা পেলে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারবে এমনটাই আশা সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্নিবাড়ি চরের কাসেম আলীর।
জেলা কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি প্রণোদনা পাবেন কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ আরও জানায়, বন্যায় বগুড়ার ৫টি উপজেলায় রোপা আমনের চারার ক্ষতি হয়েছে ৪৪ হাজার ২৫৪ পন, আউস ২৮১৯ হেক্টর, সবজি ১১৭ হেক্টর, পাট নষ্ট হয়েছে ৪ হাজার ২৭৯ হেক্টর, ১০৯ হেক্টর জমির আমনের চারা, ৫ হাজার হেক্টর জমির মরিচ, ৩৩ হেক্টর জমির ভূট্টা নষ্ট হয়েছে।
বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ ফসল ও বাড়িঘরের চিহ্ন ক্ষত চিহ্ন মেরামত করে তাতে ওঠার চেষ্টা করছেন। যাদের বাড়িঘর বন্যার তোড়ে ভেসে গেছে, তাদের সহায়তা দেয়ার জন্য রোববার জেলা পর্যায়ে এক সভায় ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রণয়ন করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী মন্ডল।
কৃষি বিভাগ ইতোমধ্যে ফসলে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করেছে। প্রায় দেড় মাসের বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে বলে জানান জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক।
তিনি বলেন, কৃষকরা বন্যা ক্ষতি কাটিয়ে কৃষি অর্থনীতির চাকা সচল করতে পারে।
-এমএ/এমএ