For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

নৌপথে যাচ্ছে তরমুজ আসছে মানুষ

Published : Saturday, 11 April, 2020 at 12:14 PM Count : 495

গণ পরিবহণ বন্ধ। তাই মালবাহী যানবাহনে রাজধানী ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে প্রতিদিন আসছেন অসংখ্য নারী পুরুষ। সড়ক পথে বাঁধা এড়াতে এবার নৌপথ বেছে নিয়েছেন মানুষ।

বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলে তরমুজের পিক মৌসুম চলছে। প্রতিদিন পাকা তরমুজ নিয়ে নৌপথে অসংখ্য ট্রলার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে। ওই নৌযানগুলো যাত্রী বোঝাই করে আবার ফিরে আসছে। আর এতেই এলাকাবাসী ধারনা করছেন করোনা ভাইরাস বহন করে নিয়ে আসছেন সবাই। তবে অনেকেই আবার ভিন্নমত পোষণ করে বলেছেন যারা এসেছেন তারা যেন বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (৯এপ্রিল) পটুয়াখালীর দুমকিতে এক যুবক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গত ৪ এপ্রিল জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে ওই যুবক নারায়নগঞ্জ থেকে এলাকায় আসে। এরপর স্বাস্থ্য কর্মীরা তার নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর’এ পাঠায়। বৃহস্পতিবার বিকালে ওই যুবকের করোনা ভাইরাস আক্রান্তের পজিটিভ রিপোর্ট আসে।

একই দিন দুমকির মৌকরণ এলাকার বুদ্ধিজীবী বাজারে নারায়নগঞ্জ থেকে যাত্রী বোঝাই করে আসা একটি ট্রলার আটক করে এলাকাবাসী। ওই ট্রলারে বরগুনার আমতলী এলাকার অধিকাংশ শ্রমজীবী মানুষ ছিলেন। দুমকি নেমে তারা সড়কপথে আমতলীর উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। পরে পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধারের পর হোম কোয়ারেন্টিন নির্দেশনা দিয়ে এলাকায় পাঠিয়ে দেয়।

এদিকে একটি সূত্র জানায়, গত কয়েকদিনে অসংখ্য নারী পুরুষ নারায়নগঞ্জ থেকে পটুয়াখালীর বাউফল ও দুমকি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এসেছেন। তারা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে গ্রামের হাটবাজারে ও চায়ের দোকানে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছেন।  

আইইডিসিআর নারায়নগঞ্জ জেলাকে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের হটস্পট হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। প্রশাসন গোটা নারায়নগঞ্জকে লকডাউন ঘোষণা করেছে। এরপরও নারায়নগঞ্জ থেকে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের গ্রামের বাড়ি ফেরার ঢল নামে। ওদিকে দুমকিতে নারায়নগঞ্জ ফেরত যুবক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রশাসনকে উদ্দেশ্যে করে নারায়নগঞ্জ থেকে আসা মানুষ ঠেকানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। বিশেষ করে মালবাহী গাড়ি ও নৌযান ঠেকানোর জন্য জোড় দাবী উঠেছে।

শুক্রবার বাউফলের সাঈদ আহমেদ নামের এক ব্যাক্তি তার ফেসবুক পেইজে অনুরোধ করে লিখেন, ‘ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে যারা প্রবেশ করছেন তাদের হোম আইসোলেশন নিশ্চিত করলেই করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করা সম্ভব।’  

দুমকির আমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, সম্মানিত দুমকি উপজেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিক বৃন্দ আপনাদের দৃষ্টি আর্কষন করছি যে, ৫নং শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৫ন ওয়ার্ডের ২ ব্যাক্তি আজ সকালে ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে সকলের সাথে মিলে মিশে বসবাস শুরু করছে। তাই আমরা তার বাড়ির আশপাশের লোকজন খুবই আতংকিত জীবন যাপন করছি। এজন্য প্রশাসনের প্রতি বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি অতি দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহন করেন।

যদিও দুমকিতে করোনায় একজন মারা যাওয়ার পর শুক্রবার থেকে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন পুরো উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করেছে।

সোয়েব মামুন নামের এক ছাত্রলীগ নেতা তার ফেসবুক পোষ্টে লিখেছেন, তেঁতুলিয়া নদী লকডাউন করা হোক।

শামিম খান নামের অপর একজন লিখেছেন, ট্রলারে প্রতিদিন ঢাকায় যাচ্ছে তরমুজ আর ফিরে আসছে করোনা।

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য কালাইয়া নৌ পুলিশের একটি টিম শুক্রবার তেঁতুলিয়া নদীতে টহল দেয়া শুরু করেছেন। কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সোহাগ ফকির সাংবাদিকদের বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে জনসাধারণকে রক্ষার জন্য সরকার নারায়নগঞ্জ, গাজিপুর, নরসিংদীসহ ঢাকার অনেকাংশ লকডাউন করেছেন। ওই সকল এলাকায় করোনার প্রভাব বেশি পরিলক্ষিত হওয়ায় সেখানে থাকা পটুয়াখালী জেলার মানুষ হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে ভয়ে পালিয়ে নৌকা, ট্রলার, স্পিড বোড, ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স এমনকি অটো বাইকে করেও গ্রামের বাড়ি চলে আসছে। ভয়ে পালিয়ে আসা মানুষজন নারায়নগঞ্জ, চাঁদপুর ও নোয়াখালী থেকে নদী পথে বাউফল, দুমকি, বাকেরগঞ্জ সহ দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে পড়ছে। এর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মধ্যে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মূলত একারনেই বাউফলের জলসীমানায় পাহারা জোরদার করা হয়েছে। আশা করি এখন আর কোন বহিরাগত তেঁতুলিয়া নদী হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশ পারবে না।
 
বিষয়টি নিয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, যেসব এলাকায় এধরনের নৌ-যান ভিড়তে পারে সেসব স্থানের পুলিশকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে।’ এছাড়া কোথাও নৌযানে পরিবহন করা হচ্ছে এমন তথ্য থাকলে তা জেলা প্রশাসন কিংবা উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

এএস/এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,