বখাটের উত্ত্যক্তে বাসা বদল: ক্ষিপ্ত হয়ে মা-ছেলেকে কুপিয়ে জখম
Published : Sunday, 22 March, 2020 at 8:20 PM Count : 196
রাজশাহীতে একই বাসায় থাকতেন শারমিন নাহার (২৬) ও এক কলেজ ছাত্রের পরিবার। শারমিন তার সাত বছরের ছেলে ও স্বামীসহ থাকতেন নিচতলায়। আর ওই কলেজ ছাত্রের পরিবার থাকতো বাসার তৃতীয় তলায়। কলেজছাত্র রনি প্রায়ই শারমিন নাহারকে উত্ত্যক্ত করতেন। তার হাত থেকে বাঁচার জন্য বাসা বদল করে তারা গত শুক্রবার নতুন ঠিকানায় এসেছিলেন।
তবে গত শনিবার সেই বাসায় গিয়ে কলেজছাত্র শারমিন নাহারকে কুপিয়ে জখম করেছে। মাকে বাঁচাতে এলে ছেলেকেও একইভাবে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলাকারী কলেজছাত্রের নাম রনি আহাম্মেদ (২৩)। তিনি মহানগরীর কোর্ট কলেজের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার বাবার নাম মকবুল হোসেন। বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। বাসাটি কাশিয়াডাঙ্গা থানা এলাকায়। এই থানাতেই উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে চাকরি করেন রনির খালাতো বোন মৌসুমী বেগম। রনির ভাবীও পুলিশে চাকরি করেন।
শারমিন নাহারের স্বামী রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তারা এতদিন মহানগরীর কোর্ট কলেজপাড়া এলাকায় চারতলা একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। রনির উত্যাক্তের কারণে শুক্রবারই তারা বাসা বদল করেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই হামলা করেছে রনি।
রেজাউল করিম জানান, একই বাসায় থাকার সুবাদে কলেজছাত্রের সঙ্গে তাদের দেখা-সাক্ষাৎ হতো। এই সুযোগে রনি প্রায়ই তার স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করতেন। এই ঝামেলার জন্য তারা বাসা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেন। দু’দিন আগেই তারা কোর্ট কলেজপাড়ার ওই বাসা ছেড়ে রায়পাড়া এলাকায় নতুন একটি বাসায় উঠেছেন। নতুন বাসার ঠিকানা জোগাড় করে রনি শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে বাসায় এসে এ হামলা চালায়।
তিনি আরো জানান, বাসার পাশেই মোড়ে তিনি চা পান করছিলেন। এরইমধ্যে খবর পান তার বাসায় হামলা হয়েছে। তিনি ছুটে গিয়ে দেখেন, ধারালো একটি অস্ত্র দিয়ে রনি তার স্ত্রী-সন্তানকে কোপাচ্ছে। তিনি রক্তাক্ত স্ত্রী-সন্তানকে উদ্ধার করতে শুরু করলে এই সুযোগে রনি পালিয়ে যায়। এরপর তার স্ত্রী এবং সন্তানকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। তারা এখন হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সারাদিন তার স্ত্রীর জ্ঞান ছিলনা। সন্ধ্যার একটু আগে তার জ্ঞান ফিরে এসেছে। কিন্তু তিনি এখনো পরিষ্কার করে কথা বলতে পাচ্ছেন না। তাদের সারা গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর মাথায় রয়েছে গুরুতর জখম।
রবিবার হাসপাতলে গিয়ে দেখা যায়, শারমিন এবং তার সন্তান পাশাপাশি দুটি বেডে শুয়ে আছেন। মায়ের মতো ছেলেও নির্বিকার পড়ে রয়েছে। সেও কথা বলতে পারছে না।
জানতে চাইলে মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মশিউর রহমান জানান, এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। এখন তারা আইনি ব্যবস্থা নেবেন। তিনি স্বীকার করেন, হামলাকারী রনি আহমেদের খালাতো বোন মৌসুমী বেগম এ থানাতেই এসআই পদে চাকরি করেন। কিন্তু আইন নিজ গতিতে চলবে। কেউই মামলা প্রভাবিত করতে পারবেন না। হামলাকারী বখাটেকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আরএইচএফ/এসআর