বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল আইল্যান্ড-মহেশখালী প্রকল্পের অধীনে ডিস্টান্স লার্নিং প্রোগ্রামের সাফল্য উদযাপন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে সম্প্রতি রাজধানী বনানীর প্লাটিনাম গ্র্যান্ড হোটেলে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে জাগো ফাউন্ডেশন, যারা মহেশখালী উপজেলায় প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য সহযোগিতা করছেন। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের সুযোগ ও সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সির-এর নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতীম দেব, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পেপী সিদ্দিক, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, আই ও এম, জাহিদ মোহাম্মদ ফিরোজ, প্রকল্প পরিচালক, ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালী এবং মাসুম আল রেজা, জাতীয় প্রকল্প সমন্বয়কারী, আই ও এম।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল-২ প্রাথমিক শিক্ষায় সর্বজনীন গ্রাহ্যতা অর্জন করে। তবে এখনো বাংলাদেশ শিক্ষাব্যাবস্থা নিয়ে নানা রকম প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গুণগত মানের শিক্ষা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে ডিজিটাল আইল্যান্ড–মহেশখালী প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩ বছর পূর্বে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, আই ও এম এবং কোরিয়া টেলিকম কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় “ডিজিটাল আইল্যান্ড- মহেশখালী” প্রকল্পটি কার্যে পরিণত করা শুরু করেন।
২০১৭ সালে জাগো এই ডিস্টান্স লার্নিং মডেল প্রয়োগ করে মহেশখালীর ১০টি প্রাথমিক স্কুলে ইংরেজি শিক্ষা প্রদান করা শুরু করে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৯০০০ সরকারি প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা লাভ করে এবং সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রায় ২০০০০ মহেশখালীর অধিবাসীগণ ই-লার্নিং সম্পর্কে জানতে পারেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, জনাব পার্থপ্রতীম দেব তাঁর মূল্যবান বক্তব্যে উল্লেখ্য রাখেন। “২০০৮ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ এর কথা বলেন তখন এর অর্থ হয়তো অনেকটাই অবাস্তব ছিল। তবে আজকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, আই ও এম, কোরিয়া টেলিকম এবং জাগো ফাউন্ডেশনের অবিরত চেষ্ঠায় আমাদের একটি ডিজিটাল আইল্যান্ড আছে মহেশখালীতে। আমি সকল শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা এই কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিলেন। আরো বলতে হয়, জাগো ফাউন্ডেশনকেও ধন্যবাদ কারণ তারা আমাদের দেখিয়েছে যে খেলার ছলে, উন্নত প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কি করে ভালো ইংরেজী শিক্ষা প্রদান করা যায়।”
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি পেপী সিদ্দিক, প্রকল্প ব্যবস্থাপক -আই ও এম বলেন, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী যে এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র মহেশখালী নয়, বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলেও শুরু করার মত শক্তি রাখে। এই প্রকল্পটি ভীষণ অন্যরকম এবং বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোন উন্নয়নশীল দেশে এরকম উদাহরণ রয়েছে বলে আমার জানা নেই”।
জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান করভি রাকসান্দ বলেন, “ডিস্টান্স লার্নিং প্রোগ্রাম এর মডেলযখন আমরা শুর করলাম, অনেক রকম প্রশ্ন ছিল কারন ঢাকা থেকে অন্য কোন জেলায় ভিডিওর মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করার আইডিয়াটা পরিষ্কার ছিলনা। তবে এক পর্যায়ে এসে ইউনেস্কো থেকে পুরষ্কার পাওয়ার পর চীন সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই মডেলকে ছোট করে বিভিন্নভাবে প্রয়োগ করা শুরু করে। ৯০০০
শিশুকে শিক্ষা দেয়া, ১৫০ শিক্ষকদের ট্রেনিং দেয়া এবং সমাজে ২০০০০ জন মানুষকে এই বিষয়ে জ্ঞান দেয়া- এই ছোট প্রকল্পটির মাধ্যমে আমরা এর সবই করতে সক্ষম হয়েছি।”
এই আয়োজনের সমাপ্তি হয় একটি পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যেখানে সরকারী এবং বেসরকারি অনলাইন শিক্ষকদের তাদের ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করা হয়।
এইচএস