For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

মানুষ আমাদের চাইছেন: শেখ হাসিনা

Published : Thursday, 27 December, 2018 at 3:11 PM Count : 228

ফাইল ফটোবাংলাদেশের জনগণের উপর আমার বিপুল আস্থা। মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। জনগনের ভোটেই আমরা নির্বাচিত হব বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা

আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
নির্বাচন একেবারে দোড়গোড়ায়। হাতে রয়েছে মাত্র তিনটে দিন। ভোটের সেই উত্তেজনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন বড় নিশ্চিন্ত! নির্বাচনের প্রাক্‌ মুহূর্তে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, তাঁর দল আওয়ামি লিগ ফের জিতছে।

আগামী রবিবার বাংলাদেশে ১১তম সংসদ নির্বাচন। তার আগে বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার ধানমন্ডির সুধাসদনে হাসিনাকে অন্য মেজাজে পাওয়া গেল। সেই হাসিনার মুখে দেখা গেল তৃপ্তির হাসি। বড় নিশ্চিন্ত ভাবে বললেন,‘‘বাংলাদেশের জনগণের উপর আমার বিপুল আস্থা। মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। জনগনের ভোটেই আমরা নির্বাচিত হব।’’

এতটা নিশ্চিত কী ভাবে হচ্ছেন? হাসিনার যুক্তি, ২০১৩-র নির্বাচনে প্রায় ছ’শো স্কুল পোড়ানোর কথা বাংলাদেশের মানুষ ভুলে যায়নি। মুছে যায়নি প্রিসাইডিং অফিসার-সহ অজস্র নাগরিককে হত্যার স্মৃতি। রাস্তা কেটে মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, সেই সময়ে জনগণই রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। ভোটও দিয়েছিলেন তাঁরা। সেই জনগণ ফের তাঁকেই ভোট দেবেন বলে বিশ্বাস হাসিনার।

একই সঙ্গে হাসিনা মনে করিয়ে দিলেন, নির্বাচনের পরে বাংলাদেশে একের পর এক সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ সে সব ভোলেননি। আর ভোলেননি বলেই ওই সব ঘটনা যে রাজনৈতিক দল ঘটিয়েছিল, তারা জনসমর্থনহীন হয়ে পড়েছে। আর সেই জোরের জায়গা থেকেই ফের সরকার গঠনের ব্যাপারে আশাবাদী আওয়ামি লিগ।

কিন্তু, নির্বাচনের আগে বিরোধীরা তো তাঁর দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলছে। কথাটা বলতেই যেন একটু বিরক্ত হলেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, ‘‘নালিশ করার পাশাপাশি বিভ্রান্তি ছড়াতে এবং মিথ্যা কথা বলতে ওরা ভীষণ পারদর্শী।’’ হাসিনার পাল্টা দাবি, নির্বাচনে বিরোধীদের হয়ে যাঁরা প্রার্থী হতে চেয়েছেন, তাঁদেরই ওরা নমিনেশন দিয়েছে। কিন্তু, দলীয় প্রতীক পেয়েছেন এক জন। এর পর নিজেদের মধ্যেই সঙ্ঘাত শুরু হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘দলের পুরনো বা জিতবেন এমন নেতাদের  নমিনেশন দেয়নি ওরা। যে কারণে বঞ্চিতদের কাছে ওদের আক্রান্ত হতে হচ্ছে।’’ কয়েক জন নেতা-কর্মীকে খুনের ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি। নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে শেষ হওয়ার পর সে বিষয়ে তদন্ত হবে বলেও জানালেন হাসিনা।

বাংলাদেশের যুব সম্প্রদায় আওয়ামি লিগ সম্পর্কে খুবই উৎসাহী বলে মনে করেন হাসিনা। তাঁর মতে, বাংলাদেশে মানুষের মন থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসটাই মুছে ফেলা হয়েছিল। এখনকার নতুন প্রজন্মের মধ্যে সত্যকে জানার একটা আগ্রহ রয়েছে। ইন্টারনেটে খুঁজলেই একাত্তরের অনেক তথ্য এখন জানা যায়। ফলে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার বিষয়টি এখন অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। হাসিনার কথায়, ‘‘এর জেরে আওয়ামি লিগের প্রতি যুব সম্প্রদায়ের মতটাই পাল্টে গিয়েছে।’’

নির্বাচন উপলক্ষে হাসিনা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সফর করেছেন। সেই সফরে তিনি মানুষের কাছ থেকে ভালই সাড়া পেয়েছেন বলে এ দিন দাবি করেন হাসিনা। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের মধ্যে সেই ভালবাসাটা দেখতে পেলাম জানেন! তাঁরা অন্তর থেকে চাইছেন, আওয়ামি লিগ আবার ক্ষমতায় আসুক। জনগণ এটা জানেন, আওয়ামি লিগের মাধ্যমেই তাঁদের ভাগ্য পরিবর্তিত হবে।’’

মহিলাদের থেকে তো বটেই, আওয়ামি লিগ তরুণ সমাজের কাছ থেকেও অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছে বলে এ দিন দাবি করেন হাসিনা। তিনি বলেন, ‘‘এ বারের নির্বাচনটা আগের মতো অত চ্যালেঞ্জিং নয়। বৈরীতার পরিবেশও নেই।  বরং আমাদের স্বপক্ষে একটা পরিবেশ তৈরি  হয়েছে।  এর আগের নির্বাচনগুলোয় একটা বিভেদ লক্ষ করতাম। এ বার কিন্তু একচেটিয়া ভাবে সকলের সমর্থনটা আমাদের সঙ্গে রয়েছে। সেটা টেরও পাচ্ছি।’’

পাকিস্তান প্রসঙ্গেও এ দিন মুখ খুলেছেন হাসিনা। তাঁর দাবি, বাংলাদেশে কিছু পাকিস্তানপ্রেমী মানুষ আছেন। ‘‘যুদ্ধাপরাধীদের মন পড়ে আছে পাকিস্তানে,’’—এমন মন্তব্যও করলেন তিনি। পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন, তাঁরা সতর্ক আছেন। কারও সঙ্গে বৈরীতা করতে না চাইলেও, দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে কাউকে যে কোনও ভাবেই নাক গলাতে দেবে না বাংলাদেশ, সে কথাও এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন হাসিনা।

বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যে আসামিরা লন্ডনে বসে রয়েছে, তাদের সম্পর্কে আওয়ামি লিগের মনোভাব এ দিন স্পষ্ট হয়েছে হাসিনার কথায়। তাঁর মতে, ওই সব আসামিরা সব সময় বিদেশে বসে দেশের ভিতর একটা অশান্ত পরিবেশ তৈরি করতে চায়। অস্ত্র পাচার, চোরা কারবার এবং দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ওই সব মানুষের অঢেল টাকা বলে হাসিনার অভিযোগ। তাঁর দাবি, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাতে যারা সুযোগসুবিধা পেয়েছে, সেই সব ব্যবসায়ীরাও ওই দলকে টাকাপয়সা দেয়।  তাঁর কথায়, ‘‘ক্ষমতায় ছিল যখন, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ না করলেও নিজেদেও আখের ওরা গুছিয়ে নিয়েছে। ওই টাকা তো ওরা এখন ব্যয় করে দেশের ভেতরে অশান্ত পরিবেশ তৈরি করতে।’’ পাশাপাশি তাঁর প্রতিশ্রুতি, ব্রিটেনের সঙ্গে কথা বলে ওই আসামীদের দেশে ফেরত এনে রায় কার্যকর করা হবে।

এ বারের নির্বাচনে জামাতে ইসলাম কী ভাবে ধানের শীষ প্রতীক পেল তা নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন হাসিনা। তাঁর প্রশ্ন, যাদের নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল করল, তাদের কী ভাবে নমিনেশন দেওয়া হয়? তিনি বলেন, ‘‘জামাত তো গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। বুদ্ধিজীবি হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। মেয়েদেরকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া থেকে ঘরবাড়ি দখল করেছিল। ওদের নমিনেশন দেওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ শঙ্কিত!’’

এ দিন কামাল হোসেনের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাসিনা। কামাল হোসেনকে দেশের সংবিধান রচয়িতা বলা হয়। তিনি আওয়ামি লিগ থেকে চলে গিয়ে নিজে দল করেন। ধানমন্ডি থেকে দাঁড়িয়েছিলেন এক বার। ওই নির্বাচনে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। হাসিনার কথায়, ‘‘সেই তিনি কিনা গেলেন জামাত-বিএনপিকে সঙ্গে  নিয়ে!’’ এর পরেই একগাল হাসি-সহ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি অবাক হইনি। কারণ কী জানেন? ওঁর শ্বশুরবাড়ি পাকিস্তানে। ছেলেদের একটু শ্বশুরবাড়ির প্রতি টানটা বেশি থাকে।’’

ঘণ্টাখানেক কথার পর সুধাসদনে তখন সন্ধ্যা বেশ গাঢ় হয়ে নেমে এসেছে। বিদায় পর্বে ফের জিজ্ঞেস করা গেল, ভোটের ফল কেমন হবে? হাসিনা জানালেন, ‘‘ওই যে প্রথমেই বলেছিলাম, আমরাই আসছি। কারণ, মানুষ আমাদেরই চাইছেন।’’


এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,