For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

প্রচারণায় আ’লীগ, অভিযোগেই সময় পার করছে বিএনপি

Published : Wednesday, 26 December, 2018 at 12:38 PM Count : 354


সিরাজগঞ্জ- ৩ ও ৫ দুটি আসনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রচারণার মাঠে রয়েছে আ’লীগ। এদিকে, প্রচারণায় বাধা প্রদান, পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলা, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা-হামলাসহ নানা অভিযোগেই ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপি ও তাদের নেতাকর্মীরা।

তবে প্রার্থী মনোনয়ন আশানুরুপ না হওয়ার কারণে অন্তত এ দু’টি আসনে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী অনেকটা নিস্ক্রিয় বলে জানা গেছে। আর আওয়ামী লীগ সকল কোন্দল ভুলে তাদের নিজেদের প্রার্থীর বিজয়ে একট্টা হয়ে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা।
অপরদিকে, বাধা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হলে দুটি আসনেই শতভাগ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বিএনপির নেতাকর্মীরা।

সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনে সর্বাধিক ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে প্রার্থীর সংখ্যা যাই হোক মূলত প্রতিদ্বন্দিতা হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আব্দুল আজিজ এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদারের মধ্যে। তাই নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে দিন-রাত মাঠ চষে বেড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিলেও তা উপেক্ষা করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপি প্রার্থী ও নেতাকর্মীরা এমন অভিযোগ তাদের।

তবে, নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকলে পাশাপাশি ভোটাররাও তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলে ধানের শীষ বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবে বলে আশা করছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদার।

এর আগে বিএনপি থেকে ৪ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে নানা অভিযোগে স্থানীয় প্রেস ক্লাবে দু'বার সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি।

এদিকে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী সম্পূর্ণ নতুন মুখ এলাকার মানুষের কাছে। তারপরও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

ধানঘড়ার রিকশাচালক মো. সোবাহান বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী সম্পূর্ণ নতুন মুখ হলেও তিনি শিক্ষিত মানুষ। ইতোমধ্যে ভোটারদেও মন জয় করতে পেরেছেন তারপরে মার্কা রয়েছে নৌকা যার কারণে তিনিই জয়ী হবেন।

একই এলাকার মো. বারিক শেখ বলেন, আব্দুল মান্নান তালুকদার প্রবীণ রাজনীতিবিদ। তিনি এমপি থাকতে এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছেন। তাই তিনিই নির্বাচিত হবেন।

আব্দুল মান্নান তালুকদার বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে তিনি নিজে দু'বার হামলার শিকার হয়েছেন। প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন বলে দাবি করেন।

বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করে আ'লীগের প্রার্থী আব্দুল আজিজ বলেন, তারাও তো প্রচারণা চালাচ্ছেন। আসলে বিএনপির কাজই হলো শুধু অভিযোগ করা। তিনি প্রথম বারেরমত প্রার্থী হলেও মার্কা নৌকা এবং আওয়ামী লীগের ১০ বছরের উন্নয়নের সুফল জনগণ পাওয়ায় ভোটাররা তাকেই বিজয়ী করবে বলে তিনি আত্মবিশ্বাসী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৩ আসন। এ আসনে ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৩ জন ভোটারের বিপরীতে ৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও তাদের মতো করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পরস্পর বিরোধী অভিযোগ থাকলেও প্রচরণা থেমে নেই দুই প্রার্থীর। বয়সে নবীন এবং তরুণ হওয়ায় সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মন্ডল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মমিন মন্ডল। অন্যজন বিএনপি মনোনীত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক  ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান।

এই আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ছাড়াও বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাকের পার্টি এবং স্বতন্ত্রসহ মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জেলায় ডান্ডি এলাকা হিসেবে পরিচিত গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটিতে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে। এবারই প্রথম বড় দুটি রাজনৈতিক দলের দুই প্রার্থীই বয়সে তরুণ ও ক্লীন ইমেজের হওয়ায় উভয় দলের নেতাকর্মীরা বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

তবে, এ আসনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জামায়াতের জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও বেলকুচি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আপেল মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

অপরদিকে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোক্তার হোসেন। এই আসনে জাতীয় পার্টির অবস্থান প্রায় নেই বললেই চলে। এই আসনটিতে জামায়াতের একটি শক্ত অবস্থান রয়েছে। তাই এই আসনের ভোট বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে ভাগ হলে লাভবান হবে আওয়ামী লীগ। যার কারণে বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল মমিন মন্ডল।

তাঁত সমৃদ্ধ বেলকুচি উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন এবং যমুনা নদী ভাঙ্গন কবলীত চৌহালী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত আসনটিতে মোট ভোটার প্রায় ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৮৯২ জন।

এই আসনের প্রার্থী নির্বাচনে বিএনপির মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। এই আসনে মো. আমিরুল ইসলাম খানসহ সাবেক এমপি মেজর (অব:) এম. মঞ্জুর কাদের, ব্যবসায়ী রকিবুল করিম খান পাপ্পু ও চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব:) আবদুল্লাহ আল মামুন বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে ছিলেন। বিএনপির স্থানীয় অনেকেই আশা করেছিলেন মেজর (অব:) এম. মঞ্জুর কাদের অথবা ব্যবসায়ী রকিবুল করিম খান পাপ্পুকে মনোনয়ন দেয়া হবে। কিন্ত তা না দেয়ায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। যার কারণে প্রচারণায় অনেকেই নিস্ক্রিয় ভাবে রয়েছেন।

এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে মো. আমিরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি বড় দল অনেকেই মনোনয়ন চাইতে পারেন। দল যাকে দেবে সেটাই চূড়ান্ত।

এখানে দলীয় কোন কোন্দল নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের নেতাকর্মীদের বের হতেই দিচ্ছে না। পোষ্টার লাগাতে পারি নাই। কর্মীদের মামলা দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

জামায়াতের প্রার্থী বিষয়ে আমিরুল ইসলাম বলেন, মানুষ ভোট দেবে ধানের শীষে। ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে ধানের শীষ বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে কোন প্রার্থীই বাধা হবে না।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আব্দুল মমিন মন্ডল পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কখনই বন্ধ করতে পারবে না। কেননা তাদের স্বভাবই হলো অভিযোগ দেয়া আর সন্ত্রাস করা। বিএনপি প্রার্থীও তাদের প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে বিএনপির সন্ত্রাসীরা ৪ দিন আগে এনায়েতপুর আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাংচুর করে নেতাকর্মীদের পিটিয়ে জখম করেছে। আমার বাবা এখানে এমপি আছেন তার পরিস্কার ইমেজ আমার চেষ্টা এবং আওয়ামী লীগের উন্নয়ন সব মিলে নৌকা এখানে বিজয়ী হবে।

জাতীয় পার্টির মোক্তার হোসেনও সীমিত পরিসরে এখানে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, মানুষ ধানের শীষ আর নৌকায় বিরক্ত। তারা এই দুই প্রতীক আর চায় না তাই লাঙ্গল এখানে বিজয়ী হবে।

-এবি/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,