জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) আব্দুল জলিল বলেছেন, এখানে (ডিমের বাজারে) যেহেতু চাঁদাবাজি নেই তাই ডিমের মূল্য হ্রাস পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তেমনটা বাজারে দেখা যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার সকালে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাকক্ষে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীবৃন্দের অংশগ্রহণে সচেতনতামূলক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ভোক্তা অধিদপ্তরের এই পরিচালক বলেন, আমরা সবাই ভোক্তা। আপনারা ব্যবসায়ীগণও ভোক্তা। কেননা আপনারা একটা পণ্য বিক্রয় করলেও অন্য আরেকটি পণ্য ক্রয় করে থাকেন। ব্যবসায়ীদের মানবিক আচরণ করার পাশাপাশি যৌক্তিক পর্যায়ে লাভ করার অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, এখানে যেহেতু চাঁদাবাজি নেই তাই ডিমের মূল্য হ্রাস পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু তেমনটা বাজারে দেখা যাচ্ছে না। তিনি মধ্যসত্ত্বভোগী হ্রাস করে ডিমের বাজার উন্মুক্ত করার কথা বলেন।
অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস বলেন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্যকলাপ প্রতিরোধে নিয়মিত বাজার তদারকি/অভিযান করা হয়ে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশীয় বাজারে হঠাৎ ডিমের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিম, সোনালি মুরগি ও ব্রয়লার মুরগির যৌক্তিক বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে বাজারে মূল্য নির্ধারণের প্রভাব পড়েনি।
অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকআব্দুল জব্বার মন্ডল অভিযান পরিচালনা কালে ডিম বিক্রির ক্ষেত্রে প্রাপ্ত অসংগতি যথা বিভিন্ন ফার্মের ক্যাশমেমোতে ডিমের দর এবং মোট টাকার কথা উল্লেখ না থাকা, ক্যাশ মেমোতে দর উল্লেখ না থাকা, ডিম ক্রয়ের ক্যাশমেমো না থাকা, পাইকারী আড়তে ডিম বিক্রিতে ক্যাশমেমোতে কার্বন কপি না থাকা, খুচরা ডিম বিক্রয়ে ক্যাশ মেমো না দেওয়া, মুল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, সাদা ক্যাশমেমো প্রদান করা, ১ টি আড়তে তদারকি করতে গেলে অন্য সব আড়ত বন্ধ করে দেয়াসহ বিভিন্ন বিষয় সভায় তুলে ধরেন।
এসময় তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমানতউল্লাহ বলেন, আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিম ক্রয় করতে পারলে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রয় করতে পারব।
তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, ডিম উৎপাদক থেকে আড়ত পর্যায়ে আসা পর্যন্ত তদারকি করতে হবে। এছাড়া আমরা যৌক্তিক মুনাফা পেলে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রয় করতে পারব।
সাধারণ সম্পাদক হানিফ মিয়া জানান, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান হতে তাদের পর্যাপ্ত ডিম সরবরাহ করা হয় না। আমরাও চাই ডিম ও ব্রয়লার মুরগির মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকুক। এ লক্ষ্যে সমিতি অধিদপ্তরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন বলেন, সুস্থ্য ধারায় ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে থাকে। বাজার ব্যবস্থাপনা উন্মুক্ত ও স্বাধীন হওয়ার সুযোগ নিচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীদের পরিমিতিবোধ বজায় রেখে গ্রহণযোগ্য লাভ রেখে ব্যবসা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন,ব্যবসায়ীদের মধ্যসত্ত্বভোগী এড়িয়ে ডিমের উন্মুক্ত বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে সরাসরি ফার্ম হতে সরবরাহ করা গেলে ডিমের মূল্য হ্রাস পেতে পারে। ব্যবসায়ীদের এসএমএস’র মাধ্যমে ডিমের মূল্য নির্ধারণে জড়িতদের তথ্য প্রদানের অনুরোধ জানান।
যে কোন পরিস্থিতিতে সরকার নির্ধারিত ডিমের মূল্য বাস্তবায়ন করতে হবে বলেও জানান তিনি।
এসআর