আন্দোলনের মুখে ইউনিয়ন ভুমি উপসহকারী কর্মকর্তার ইস্তফা
Published : Thursday, 22 August, 2024 at 3:09 PM Count : 694
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে এলাকাবাসীর আন্দোলনের মুখে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ইউনিয়ন ভুমি উপসহকারী কর্মকর্তা হুসাইন মোহাম্মদ রাসেল। তিনি উপজেলার কেদার ইউনিয়ন ভুমি উপসহকারী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বুধবার এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, ওই কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে সেবাগ্রহীতাদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে আসছেন। দিতে না পারলে বা অস্বীকৃতি জানালে কোনো সেবা মিলত না তার কাছ থেকে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার জনৈক মাসুদ জমির খাজনা দিতে গেলে অফিস সহায়ক হুমায়ুন কবীর তার নিকট এক হাজার টাকার বিপরীতে ১৩ হাজার টাকা নেন। দীর্ঘদিনের ঘুষকাণ্ড ও সর্বশেষ ঘটনা থেকে দানা বাঁধা ক্ষোভ জনরোষে রুপ নেয় বুধবার।
এদিন সকাল থেকে ছাত্র-জনতা ঘুষের টাকা ফেরত ও তার শাস্তির দাবিতে অফিস ঘেরাও করে বিক্ষেভ শুরু করে। পরে জনৈক মাসুদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হুমায়ুন কবীর ও ইউনিয়ন ভুমি উপসহকারী কর্মকর্তা হুসাইন মোহাম্মদ রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এর সত্যতা পাওয়া যায়। একপর্যায়ে ফেরত দেন ঘুষের ১৩ হাজার টাকা।
এরপর ওই কর্মকর্তার ইস্তফার দাবিতে শতাধিক মানুষ অফিস ঘিরে রেখে বিক্ষোভ করতে থাকে। দুপুরের পরে বাড়তে থাকে বিক্ষোভের মাত্রা। পরে চাপের মুখে দোষ স্বীকার করে চাকরি থেকে ইস্তেফা দেন তিনি। অফিসের ছাদে উঠে উপস্থিত বিক্ষোভকারী জনতার কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চান। এ সময় জনতার চাপে তার গলায় জুতার মালা পড়ানো হয়।
অফিস সহায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, মঙ্গলবার জনৈক মাসুদ জমির খাজনা দিতে এলে তার নিকট ১৩ হাজার টাকা নেয়া হয়। এর মধ্যে এক হাজার ৪০ টাকা সরকারি ফি। বাকি টাকা উপরি বাবদ। মঙ্গলবার স্যার অফিসে না থাকায় তার সাথে ফোনে কথা বলে এই টাকা নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলাম। এখান থেকে স্যার পেতেন সাড়ে সাত হাজার টাকা। বাকি টাকা আমি নেই। বিক্ষোভের মুখে সেবা গ্রহিতাকে সব টাকা ফেরত দিয়েছি।
ইউনিয়ন ভুমি উপসকারী কর্মকর্তা হুসাইন মোহাম্মদ সকল অনিয়ম ও ঘুষ নেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, তিনি নিজ অপরাধের জন্য চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিব্বির আহম্মেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের কথা শোনেন। এ সময় ভুমি উপসহকারী কর্মকর্তার ইস্তেফাপত্র তার নিকট জমা দেন আন্দোলনকারীরা। পরে ইউএনও অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি ও ঘুষের টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাকে নিজ জিম্মায় নেন।
ইউএনও সিব্বির আহমেদ জানান, ভূমি উপসহকারী রাসেলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে। তার দেয়া ইস্তেফাপত্র পাঠানো হবে জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়ে। আর সেবা প্রত্যাশীরা ঘুষের টাকা লেনদেনের যথাযথ প্রমাণ দিলে ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
-কেএস/এমএ