For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

রাবার বুলেটে চোখের প্রদীপ নিভে যাচ্ছে যুবকের

Published : Tuesday, 20 August, 2024 at 10:13 PM Count : 108

গাইবান্ধার খোলাহাটী ইউনিয়নের মিয়াপাড়া বাসিন্দা সনজু মিয়া (২২)। পেশায় স্থানীয় ফকিরপাড়াস্থ হিরো স্টীল নামের একটি ওয়ার্কশপের শ্রমিক। এই কর্মের উপার্জন থেকে বাবা-মায়ের অভাবের সংসারের হাল ধরেন। এরই মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে উত্তাল দেশ। সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়েন সনজুও। এসময় পুলিশে ছোড়া রাবার বুলেট ঢুকে তার চোখে। এখন অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে না পারায় চোখের আলো নিভে যেতে বেসেছে এই যুবকের।
 
আহত সনজু মিয়া গাইবান্ধা সদর উপজেলার মিয়াপাড়ার ইয়াসিন মিয়া ও মনজুরানী বেগম দম্পতির ছেলে।
 
সম্প্রতি খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিয়াপাড়ার ইয়াসিন মিয়া ও মনজুরানী বেগম দম্পতির তিন ছেলের মধ্যে সুজন মিয়াই বড়। তাদের পাঁচ সদস্যের সংসার। ইয়াসিন মিয়া শারীরিক অক্ষমতার কারণে রোজগার করতে পারেন না। জীবিকার তাগিদে মনজুরানী বেগম গাইবান্ধা শহরের আইডিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ছোট কর্মচারি হিসেবে চাকরি নেন। আর এ প্রতিষ্ঠানের সামান্য বেতন দিয়ে চলছিল না সংসার। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অভাব-অনটনের এই সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করেন। শুরু করেন হিরো স্টীল নামের একটি ওয়ার্কশপের শ্রমিকের কাজ। এ অবস্থায় ভালোই চলছিল তাদের সংসার। এরই মধ্যে সারাদেশ যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে উত্তাল, তখন সনজু মিয়াও এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। গত ৪ আগস্ট গাইবান্ধার আন্দোলনের একটি মিছিলে অংশগ্রহণ করেন সনজু মিয়া। এসময় পুলিশের রাবার বুলেট তার হাতে এবং বাম চোখে তিনটি রাবার বুলেট ঢোকে। এতে মারাত্মক আহত হয় সনজু। সহপাঠীরা দ্রুত গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সনজুকে রংপুরের গ্লোবাল আই অ্যান্ড হেলথ কেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে কয়েক দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সনজুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার বাংলাদেশ আই হসপিটালে ভর্তি করান স্বজনরা। এখানে সনজুর বাম চোখ থেকে একটি রাবার বুলেট অপসারণ করা হয়। তবে আরও দুইটি বুলেট এখনও চোখের ভেতরে রয়েছে। তখন চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এমতাবস্থায় অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় বাধ্য হয়ে গত শনিবার সনজুকে রিলিজ করে নিজ বাড়ি নিয়ে আসেন। বর্তমানে টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে সনজুর।
      
এ বিষয়ে আহত সনজু মিয়া কান্নজড়িত কন্ঠে বলেন, কাঙ্খিত দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের রাবার বুলেটের শিকার হই। বর্তমানে বাম চোখটি নষ্ট হতে চলছে। এমন পরিস্থিতির শিকার হলেও আমার পাশে দাঁড়ায়নি কেউ। 

সনজু মিয়া মা মনজুরানী বেগম বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশে হতাহতদের পাশে অনেকে দাঁড়িছে। কিন্তু স্থানীয় সোহেল নামের এক ব্যক্তির ৫ হাজার টাকা ছাড়া আর কারও সহযোগিতা আমার কপালে জোটেনি। ইতোমধ্যে ছেলেকে সুস্থ করার চেষ্টায় ধারদেনা করে প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ করেছি। কিন্তু টাকার অভাবে সুস্থ করতে পারিনি। এখন বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাসেবা।
 
গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুম হক্কানী বলেন, সুজন মিয়ার নামের এক যুবক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনাটি লোকমুখে শুনেছি। খোঁজ নিয়ে পরিবারটির সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে। 
   
টিএইচজে/ এসআর



« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,