ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনায় টানা তিন দিন পর আজ থেকে নিজ নিজ ইউনিটের দায়িত্বে ফিরছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে সব ইউনিটের সদস্যকে কাজে যোগদান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে।
সেই নির্দেশনায় সাড়া দিয়ে যেসব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তাদেরকে আসার পথে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী এবং আপামর জনসাধারণ যাতে পুলিশ সদস্যরা নিরাপদে কর্মস্থলে আসতে পারেন সে জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক বার্তায় জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক দলের নেতারা, ছাত্র-ছাত্রী এবং আপামর জনসাধারণ যাতে পুলিশ সদস্যরা নিরাপদে কর্মস্থলে আসতে পারেন সে জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন। পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে আসার পথে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন মর্মে যে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে সেগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। সুতরাং গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ করা হলো।
নির্দেশনায় বলা হয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স, পিওএম, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএনস), সব মেট্রোপলিটন এবং জেলা পুলিশ লাইন্স, অন্যান্য পুলিশ স্থাপনাসহ বিশেষায়িত সব পুলিশ ইউনিটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ফোর্সের শৃঙ্খলা ও চেইন অব কমান্ড পুনরুদ্ধার এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পিওএম, এপিবিএন, সব মেট্রোপলিটন এবং জেলা পুলিশ লাইন্স, সব প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, বিশেষায়িত সব পুলিশ ইউনিটের সব অফিসার এবং ফোর্সকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
এতে আরও বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে সব মেট্রোপলিটন, জেলা, নৌ, রেলওয়ে ও হাইওয়ে থানার অফিসার ও ফোর্সকে স্ব স্ব ইউনিটের পুলিশ লাইন্সে যোগদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের অপারেশনস কন্ট্রোল রুম সক্রিয় করা, দায়িত্ব বণ্টন করা এবং সারাদেশের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ফোর্সের মনোবল বৃদ্ধি এবং কল্যাণ নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের দাফন/সৎকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে।
সরকার পতনের পর সোমবার বিকেল থেকে দেশের অনেক থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে থাকে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় থানা-পুলিশের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি। অনেক জায়গায় অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নথি লুট হয়। এরপর রাজধানীসহ সারাদেশে পুলিশি ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ে। থানা চালু না থাকায় ডাকাতি, চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধের ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ বা মামলা এবং জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা।
এমন পরিস্থিতিতে ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে পুলিশের ভূমিকার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম।
-এমএ