ভোক্তা অধিকারের অভিযান
প্রতি ডিমে পাইকারী বিক্রেতার লাভ ১.০৫ টাকা
Published : Wednesday, 3 July, 2024 at 5:10 PM Count : 481
প্রতিটি ডিমের ক্রয় মূল্য ৯টাকা ৬০ পয়সা। এর সঙ্গে প্রতি ডিমে যুক্ত হয় পরিবহণ খরচ ৩৫ পয়সা। সে হিসেবে প্রতিটা ডিমের দাম পড়লো ৯টাকা ৯৫ পয়সা। পাইকারী পর্যায়ে প্রতিটি ডিম বিক্রি করা হয় ১১ টাকা। সে হিসেবে প্রতিটা ডিমে একজন পাইকারী বিক্রেতা লাভ করছেন এক টাকা পাঁচ পয়সা। তবে কোনো কোনো পাইকারী বিক্রেতা আরও বেশি দরে ডিম বিক্রি করছে।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাপ্তান বাজারে ডিমের পাইকারী আড়তে অভিযান চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানের নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মন।
অভিযানে কাপ্তান বাজারের মুস্তাফিজ ট্রেডার্স নামের ডিমের আড়তে ডিম ক্রয় এবং বিক্রয়ের চালান বা পাকা রশিদ দেখতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে ডিমের মজুত সম্পর্কে জানতে চান ভোক্তা কর্মকর্তারা। তবে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরণের বিভ্রান্তমূলত তথ্য দিতে থাকে। কোনো প্রকার চালান বা পাকা রশিদ দেখাতে পারেননি। এমনকি কত ডিম মজুত আছে তার সঠিক কোনো তথ্য দেখাতে পারেনি।
এসময় প্রতিষ্ঠানটির একটি চালান জব্দ করেন ভোক্তা অধিদপ্তর। চালানে দেখা যায়, ৮৮ হাজার ২০০ ডিম ক্রয় করেছে মুস্তাফিজ ট্রেডার্স। সে চালান অনুসারে প্রতিটা ডিমের ক্রয় মূল্য ৯.৬০ টাকা এবং প্রতি ডিমে পরিবহন খরচ ৩৫ পয়সা। দোকানে টনানো বিক্রয় মূল্যে লেখা আছে বিক্রয় মূল্য ১১ টাকা। সে হিসেবে প্রতিটা ডিমে লাভ করছে এক টাকা ৫ পয়সা। এক চালানের ৮৮ হাজার ২০০ ডিমে একজন পাইকারী বিক্রেতার লাভ ৯২ হাজার ৬১০ টাকা।
তবে অনেক পাইকারী ব্যবসায়ী ১১ টাকার থেকেও বেশি দরে পাইকারী ডিম বিক্রি করছে। সেই ডিম খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১৫ টাকায়।
ক্রয় এবং বিক্রয়ের পাকা রশিদ না থাকা, দোকানে মজুতের সঠিক হিসেব উপস্থাপন না করে কারসাজির আশ্রয় নেওয়াসহ ভোক্তা স্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন অপরাধে মুস্তাফিজ ট্রেডার্সকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার। একই সঙ্গে সতর্ক করে দেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে মুস্তাফিজ ট্রেডার্সের মালিক মাসুদুর রহমান নিজের অপরাধ স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার ভুল হয়েছে। পরবর্তীতে এমন ভুল আর করবো না। সব ডকুমেন্টস আপডেট রাখবো এবং ক্রেতাদের ক্রয় ভাউচার দিব।
এর আগে একই অপরাধে জহির এন্টার প্রাইজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে মূল্য তালিকা না থাকা, ক্রয় এবং বিক্রয় রশিদ না থাকা, একই সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স না থাকার অপরাধে খুচরা এক ডিম ব্যবসায়ীকে ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার।
অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে আজ রাজধানীর কাপ্তান বাজারে ডিমের আড়তে তদারকি করা হলো। গতকাল ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে ডিম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ডিম ক্রয় এবং বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই পাকা ভাউচার বা ক্যাশ ম্যামো দিতে হবে এবং নিতে হবে। কিন্তু এখানে এসে কয়েকটি ডিমের দোকান তদারকি করে দেখলাম, পাকা রশিদ নেই। ডিম কি দামে ক্রয় করেছে এবং কি দামে বিক্রি করছে তার রশিদ দেখাতে পারছেন না। বিভ্রান্তমূলক তথ্য দিচ্ছেন। যা গ্রহণযোগ্য নয়। ভোক্তা স্বার্থ বিরোধী অপরাধে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ অনুসারে তিন প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরবর্তীতে এমন অপরাধ করলে এসব প্রতিষ্ঠানকে আরও কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এসআর