For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

পাকা ভাউচার ছাড়া ডিমের কোন লেনদেন হবে না: ভোক্তা অধিকার

Published : Tuesday, 2 July, 2024 at 7:03 PM Count : 126



পাকা ভাউচার ছাড়া ডিমের কোন লেনদেন হবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান।

তিনি বলেন, পাকা ভাউচার পাওয়া গেলে আমরা ট্র্যাকিং করতে পারবো ডিমের ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল্য কত এবং কত লাভ করা হয়েছে। এখন অভিযান পরিচালনাকালে পাকা ভাউচার না পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে ডিমের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী, ডিম ব্যবসায়ী সমিতি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সুযোগ সন্ধ্যানী ব্যবসায়ীরা ডিমের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের মতে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০.৮৮ টাকা হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকা। প্রতি ডিমে ব্যবসায়ীদের লাভ প্রায় ৪ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে জরুরী সভার আয়োজন করে ভোক্তা অধিকার।

সভায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত অভিযানের ফলে ডিমের অস্বাভাবিক মূল্য হ্রাস পেয়েছে কিন্তু এটা স্বাভাবিক আচরণ নয়। ডিম সেক্টরকে সুসংগত করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। ডিম বিক্রয়ের কারসাজির ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবসা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

মহাপরিচালক বলেন, ডিমের বাজার অস্থিরতার বিষয়ে গত বছরও এই সময় আমরা মিটিং করেছিলাম। এ বছরও একই সময়ে আয়োজিত এই মিটিং এর বিষয়বস্তু আমার কাছে নতুন মনে হয়নি। আবারো পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এই সেক্টরে বিশৃঙ্খলা রোধ করতে প্রয়োজন ডিম ক্রয়-বিক্রয়ের পাকা ভাউচার প্রদান। 

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের গবেষণায় দেখা যায় একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০.৮৮ টাকা। ডিমের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির সাথে বিপণন সংশ্লিষ্ট লোকজন জড়িত। অধিদপ্তরের অভিযানে দেখা যায় একই ট্রাকে ডিম রেখে তিন বার হাত বদলের মাধ্যমে বিক্রয় করে প্রতিটি ডিম মূল্য গড়ে প্রায় ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়। 

অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন বলেন, বাজার অর্থনীতির মূল সঞ্জীবনী শক্তি হচ্ছে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা। এসএমএস এর মাধ্যমে ডিমের দর ঠিক করা, মনোপলি বাজার ব্যবস্থার পরিচায়ক। এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে মর্মে জানান তিনি।  

ডিমের বাজার পরিস্থিতি এবং ব্যবসায়ীদের কারসাজি সম্পর্কে অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, অভিযান পরিচালনা কালে ডিম বিক্রির ক্ষেত্রে প্রাপ্ত অসংগতি যথা বিভিন্ন ফার্মের ক্যাশমেমোতে ডিমের দর এবং মোট টাকার কথা উল্লখ না থাকা, ক্যাশ মেমোতে দর উল্লেখ না থাকা, ডিম ক্রয়ের ক্যাশমেমো না থাকা, হাত বদলের মাধ্যমে ডিমের মূল্য বৃদ্ধি করা, পাইকারী আড়তে ডিম বিক্রিতে ক্যাশমেমোতে কার্বন কপি না থাকা, খুচরা ডিম বিক্রিতে ক্যাশ মেমো না দেয়া, মুল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, সাদা ক্যাশমেমো প্রদান করা, একটি আড়তে তদারকি করতে গেলে অন্য সব আড়ত বন্ধ করে দেয়া ইত্যাদি বিষয় পরিলক্ষিত হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিবমোঃ আরমান হায়দার বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সাধারণ মানুষের প্রাণিজ পুষ্টি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কাজ করে থাকে। বাংলাদেশে বছরে ডিমের চাহিদা প্রায় ১৮০৬ কোটি এবং ডিম উৎপাদন হয় প্রায় ২৩০৬ কোটি। অর্থাৎ প্রতি বছর ৫০০ কোটি ডিম উদ্বৃত থাকে। 

তিনি আরও বলেন, ডিমের উৎপাদন খরচ হ্রাস করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের উপপ্রধান মাহমুদুল হাসান বলেন, প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিমের দাম বেশি। দেশে পোল্ট্রি ফিডের উপাদান ও মেডিসিন আমদানি শুল্কমুক্ত করা আছে এবং ফিড উৎপাদন সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি আমাদনিতে শুল্ক রেয়াত প্রদান করা হয়েছে। তথাপি আমাদের দেশে পোল্ট্রি ফিডের মূল্য বেশি। পোল্ট্রি ফিডের পাশাপাশি ডিমের সরবরাহ চ্যানেল নিয়ে স্টাডি করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, প্রান্তিক খামারিদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ডিম উৎপাদন করেন। অপর দিকে খামারিগণ জীবিকা নির্বাহের উদ্দেশ্যে ডিম উৎপাদন করেন। উৎপাদন বাড়ানো গেলে ভোক্তাগণ কম মূল্যে ডিম পাবে। তাঁর মতে ডিমের উৎপাদন খরচ ১০.২৯ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে এর যৌক্তিকমূল্য ১২.৫০ টাকা। 

এসএমএস-এর মাধ্যমে ডিমের মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া বন্ধ করার পাশাপাশি খামার হতে ডিমের মূল্য নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান তিনি। 

এফবিসিসিআই’র পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, এফবিসিসিআই যেমন ব্যবসায়ীদের সাথে আছে তেমনি ভোক্তা সাধারণের পাশেও আছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের ছাড় না দিয়ে আরো কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করার জন্য অনুরোধ জানান এবং এক্ষেত্রে এফবিসিসিআই সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।

সভায় ক্যাবের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আহমেদ একরামুল্লাহ বলেন, ডিমের যৌক্তিকমূল্য বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। ডিমের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির সাথে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের অনুরোধ জানান তিনি। 

এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,