সিলেট নগরের মেজরটিলা এলাকায় একটি বসতঘরের উপর টিলা ধসে চাপা পড়ে। এ ঘটনায় তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিটের দিকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- আগা করিম উদ্দিন (৩১), তার স্ত্রী শাম্মী আক্তার রুজি (২৫) ও ছেলে নাফজি তানিম (২)।
এ ঘটনায় উদ্ধার করা ছয় জনের মধ্যে রয়েছেন, নিহত করিম উদ্দিনের বড় ভাই রহিম উদ্দিন, তার স্ত্রী, তাদের ছেলে অমিত (১৬), মেয়ে তাসনিয়া (১২), তাহসিনা (৬), তানিয়া (৪ মাস)।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর এ তথ্য জানান।
সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফারুক আহমেদ জানান, বেলা ১২টার দিকে উদ্ধার কাজে যোগ দেয় সেনাবাহিনী।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম জানান, সকাল ৬টার দিকে বিকট শব্দে টিলা ধসে পড়ে। এ সময় একই পরিবারের ১০ জন চাপা পড়েন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে উদ্ধার কাজে যুক্ত হয় সেনাবাহিনী। এর মধ্যে এক পরিবারের দু'জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। মরদেহগুলো এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. জাকির হোসাইন বলেন, সকাল ৭টার দিকে বিকট শব্দ হয়। এরপর পার্শ্ববর্তী একটি টিলা ধসে পড়ে করিম উদ্দিনের ঘরে। এতে একই পরিবারের ১০ জন মাটির নিচে আটকা পড়েন। তাদের মধ্যে সাত জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তিন জনকে কোনো ভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার (০৮ জুন) থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ হচ্ছিল। এ অবস্থায় টিলার মাটি নরম হয়ে যায়। সোমবার ভোরে মেজরটিলা চামেলীবাগের একটি টিলা ধসে পার্শ্ববর্তী বাড়ির ওপর পড়ে। এতে একই পরিবারের ১০ জন মাটি চাপা পড়লে তাৎক্ষণিক ভাবে স্থানীয়রা পাঁচ জনকে অক্ষত ও দু'জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের তথ্যমতে, গত তিন দিন ধরে সিলেটে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। শনিবার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। রোববার ভোর ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এতে সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া নগরের উপকণ্ঠে টিলা ধসের শঙ্কা তৈরি হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক বার্তা কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
-এমএ