For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

রামেকে চিকিৎসকের নির্দেশে স্বজনকে মারধর, ভয়ে হাসপাতাল ছাড়েন রোগী

Published : Monday, 13 May, 2024 at 9:22 PM Count : 103

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে হৃদরোগ বিভাগে এক রোগীর স্বজনকে দায়িত্বরত চিকিৎসকের নির্দেশে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে ওই স্বজনের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর ভয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর স্ত্রী স্বামীকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যান। পরে কেড়ে নেওয়া মোবাইল ফোন থেকে এক সাংবাদিককে কল দিয়ে হুমকি প্রদান ও গালিগালাজ করেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।

গত রোববার সন্ধ্যায় রামেক হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

রোগীর স্বজনেরা জানান, বুকে তীব্র ব্যথা নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বাবু নামে এক রোগী নওগাঁর আত্রাই থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁকে রামেকে আনেন ভাগনে দেলোয়ার। ভর্তির পর ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে নেওয়া হয়।
ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বে নিয়োজিত চিকিৎসক ডা. সিনথিয়া ইসিজি করে বলেন, রোগীর বুকের ডান পাশের রক্তনালীতে ব্লক পাওয়া গেছে। জরুরিভিত্তিতে ইনজেকশন দিতে হবে। ইনজেকশনের দাম পড়বে ৪৫ হাজার টাকা। রাজি থাকলে ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন তিনি।

দেলোয়ার বিষয়টি নিয়ে তাঁর পরিচিত সাংবাদিক বুলবুল হাবিবের সঙ্গে ফোনে আলাপ করেন। বুলবুল হাবিব বিষয়টি জানার জন্য হাসপাতালের কার্ডিয়াক বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুস সাঈদকে ফোন কল করেন। ডা. জাহিদুস সাঈদ তাঁকে বলেন, এরকম ক্ষেত্রে আমাদের হাসপাতাল থেকেও বিনামূল্যে ইনজেকশন সরবরাহ করা হয়। যেটার কার্যকারিতা ৯০ শতাংশ। আর বাইরের ইনজেকশনটা আরেকটু আপগ্রেডেড। সেটার কার্যকারিতা ৯৫ শতাংশ। তবে যে যেটা পছন্দ করে তাকে সে–ই ইনজেকশন দেওয়া হয়।

পরে ডা. জাহিদুস সাঈদ ডা. সিনথিয়াকে হাসপাতালের ইনজেকশন দেওয়ার জন্য বলেন। এতে খেপে যান ডা. সিনথিয়া। বিভাগীয় প্রধানের অভিযোগ কেন দিয়েছেন- এই কারণে দেলোয়ারের ওপর চড়াও হন, তাঁকে মারধর করেন। পরে দেলোয়ারের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে সাংবাদিক বুলবুল হাবিবকে কল করে গালিগালাজ ও হুমকি দেন ডা. সিনথিয়া। মার খেয়ে ভয়ে হাসপাতাল ছেড়ে যান দেলোয়ার।

এ বিষয়ে বুলবুল হাবিব বলেন, ডা. জাহিদুস সাঈদের সঙ্গে কথা বলার পরে দেলোয়ারকে ফোন দিই। হাসপাতালের ইনজেকশনটিই যেন দেওয়া হয়- এটি তাকে বলতে বলি। একটু পর দেলোয়ার ফোন দিয়ে আমাকে বলতে থাকে, ভাই, আমাকে ধরে মারছে, আমাকে বাঁচান! তারপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। খানিক পর দেলোয়ারের ফোন নম্বর থেকে ডা. সিনথিয়া আমাকে ফোন দিয়ে গালিগালাজ ও হুমকি দেন। সিনথিয়া আমাকে ফোনে বলতে থাকেন, তুই কত বড় সাংবাদিক হয়েছিস, পাওয়ার দেখাস, আমার বিভাগীয় প্রধানের কাছে কমপ্লেইন করিস, তুই হাসপাতালে আয়, তারপর চিকিৎসা হবে। আমি বারবার তাঁকে গালিগালাজ না করার অনুরোধ করি। তারপরও তিনি গালিগালাজ করতে থাকেন। পরে ফোন কেটে দেন। তখন আমি হাসপাতালের পরিচালক ও বিভাগীয় প্রধানকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই।

বুলবুল হাবিব আরও বলেন,  ঘটনার পর দেড় ঘণ্টা পর আর রোগী ও রোগীর স্বজনকে হাসপাতালে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফোনেও পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের নার্স, স্টাফ ও আনসার সদস্যরা কেউ তাদের ওয়ার্ডে খুঁজে পায় নাই। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে রোগীর জামাতা ফোন দিয়ে জানান যে, তাঁরা হাসপাতাল থেকে ভয়ে বেরিয়ে এসে রাজশাহীর ভদ্রা বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করছেন নাটোর যাওয়ার জন্য। নাটোর হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন।

পরে হাসপাতালের পরিচালকের আশ্বাসে আবার তাঁদের ফিরিয়ে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। দেলোয়ারের মোবাইল ফোনটি ফেরত দিয়েছেন আনসার সদস্য লিটন।

বুলবুল হাবিব বলেন, এই ঘটনার ঘণ্টাখানেক পর দেলোয়ার রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে ফোন দিয়ে জানায়, সে হাসপাতাল থেকে ভয়ে পালিয়ে রেলস্টেশনে গেছে। তাকে ডা. সিনথিয়ার স্টাফরা ধরে মারধর করেছে।

এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. শামীম আহম্মেদ বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই রোগীকে আবার হাসপাতালে ফিরিয়ে এনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে ঘটনা কি ঘটছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের পর কেউ দোষী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

আরএফ/এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,