প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, উপজেলা ভোট নিয়ে আমরা কোনো ধরনের বেকায়দায় নেই।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে উপজেলা ভোট উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়রা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এ জন্য নির্বাচন কমিশন বেকায়দায় আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘বেকায়দায় থাকার তো প্রশ্নই ওঠে না। আমরা কোনো ধরনের বেকায়দায় নেই। এটা একটা ভালো দিক-রাজনৈতিক সদিচ্ছা যখন বিকশিত হয়েছে স্পষ্ট হয়েছে, সেটা নির্বাচনকে অবাধ নিরপেক্ষ করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। তারপরও বলে থাকে, কোনো সংসদ সদস্য প্রভাব বিস্তার করছে কি না। যদি করে থাকেন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করি। ভোটের দিন আমরা সতর্ক থাকবো, কেন্দ্রীয় ভাবে মনিটরিং করবো।’
স্থানীয় ভোটে প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, মন্ত্রী-এমপিদের নিবৃত্ত করা হয়েছে, প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এবং সেখানে যেন অনিয়ম না হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।
সিইসি বলেন, এ নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। যাতে নির্বাচনটা অবাধ, নিরপেক্ষ হয়। যাতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয় সে লক্ষ্যে বিভাগ, জেলা পর্যায়ে কমিশন মতবিনিময়ও করেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ও টহলের সুবিধার্থে ধাপে ধাপে ভোটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে আমরা সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। সংশ্লিষ্টরা নিয়মকানুন প্রতিপালন করলে নির্বাচনটা সহজ হবে। তারা যদি বিশৃঙ্খলা তৈরি করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা দুরূহ হবে। এবার কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং প্রার্থীসহ সবার সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। নির্বাচনটাকে স্বচ্ছ করার চেষ্টা করছি। প্রত্যেকটা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে কারো কারো প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন যাতে প্রভাবিত না হয়, সে জন্য ইসির তরফ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী অনেককে নিবৃত্ত করতে পেরেছি। হয়ত বা অনেকে এলাকায় আছেন। সরকারের তরফ থেকে যতদূর দেখেছি, দলীয় ভাবে হোক বা সরকারের পক্ষ থেকে হোক- যাতে নির্বাচনটা অবাধ, নিরপেক্ষ হয় কেউ যেন প্রভাব বিস্তার না করেন সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। দেখা যাক, কতটুকু হয়। প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু অ্যাকশন নিয়েছি। বিভিন্ন ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করা হয়, এ জন্য একজনকে ডেকে এনে বক্তব্য নিয়েছি, প্রার্থিতা বাতিলও করেছি। এছাড়া মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি সবসময় খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কথা হচ্ছে।
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, কে কোন দল করে আমরা জানি না। নির্বাচন আয়োজন করা আমাদের কাজ। কে দাঁড়ালো, কে দাঁড়ালো না, আমাদের কাছে সবাই প্রার্থী। আমরা দেখছি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। কেউ এলো কি, কেউ এলো না, তা নয়। প্রতিটি উপজেলায় অন্তত চার জন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে যাচ্ছি না, প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।
বুধবার দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে প্রথম ধাপে ১৪০টি উপজেলায় ভোট হচ্ছে। এর মধ্যে ২২টি উপজেলায় ইভিএমে ভোট হবে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে। প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলার তফসিল ঘোষণার পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা, স্থগিত ও ধাপ পরিবর্তনের কারণে কিছু বাদ দেওয়ার পর বুধবার ১৪০টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে।
-এমএ