বড়াল নদ সংস্কারের দাবি কৃষকদের
Published : Wednesday, 24 April, 2024 at 9:58 PM Count : 86
বড়াল নদের বুকে পলি জমে নালায় পরিণত হয়েছে। দু’পাড় চেপে গেছে এবং নদের পাড়ে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। নদের চর ভূমিগ্রাসীরা দখল করে নিয়েছে। পানি না থাকায় বড়ালের দু’ধারে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দিতে পারছে না। ফলে কৃষকরা সময় মতো ফসল উৎপাদনে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ কারণে বড়াল নদ সংস্করণের দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
জানা যায়, রাজশাহীর চারঘাট থেকে পদ্মার শাখা হিসেবে বড়াল নদের উৎপত্তি হয়। নদটি রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট, নাটোরের বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বাঘাবাড়ী হয়ে হুড়া সাগরের বুকে মিশে নাকালিয়া নামকস্থানে যমুনায় পড়েছে। এক সময় যোগাযোগের সুবিধার কারনে নদের দুই পাড়ে আড়ানী বাজার, রুস্তমপুর পশুহাট, পাঁকা বাজার, জামনগর বাজার, বাশবাড়িয়া বাজার, তমালতলা বাজার, বাগাতিপাড়া থানা, দয়ারামপুর সেনানিবাসসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৮১-৮২ অর্থ বছরে নদের তীরবর্তী উপজেলাগুলোকে বন্যামুক্ত করার জন্য উৎসমুখ চারঘাটে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানির স্বাভাবিক গতি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়।
আড়ানী গোচর গ্রামের স্কুল শিক্ষক মজবুল হোসেন লাল্টু বলেন, বড়াল নদের বিভিন্ন স্থানে স্লইসগেট ও বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানির স্বাভাবিক গতি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে ক্রমান্বয়ে বড়াল নদ শুকিয়ে শীর্ণ নালায় পরিণত হয়েছে। বড়াল সংস্করণ করা হলে কৃষকরা দু’ধারের জমিতে সেচ দিয়ে ফসল উৎপাদনে সুবিধা হতো।
এ বিষয়ে জোতরঘু গ্রামের কৃষক সুলতান আহমেদ বলেন, বড়ালের পূর্ব দিকে আমার তিন বিঘা জমি রয়েছে। বড়াল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে জমিতে সেচ দিতে পারছি না। তাই বড়াল সংস্কার করে পানির ব্যবস্থা করা হলে জমিতে সেচ দেয়া সুবিধা হতো। বর্তমানে অধিকাংশ টিউবয়েলে পানি উঠছে না। এলাকার মানুষ পানির সংকটে রয়েছি।
বড়ালে পানি না থাকায় এলাকার কৃষকরা নদের বুক জুড়ে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করছেন। নদের ধারে গড়ে ওঠা ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্রগুলো তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করে পুনঃখনন করা না হলে বড়াল তার ঐতিহ্য হারিয়ে মরুকরন প্রক্রিয়া তরান্বিত হতে পারে।
বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লা সুলতান বলেন, শুষ্ক মৌসুমের বড়ালে পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে বড়ালের দু’ধারে ফসলের ক্ষেতে পানি দিতে অসুবিধা হয় কৃষকদের। এ কারণে দ্রুত খনন করা প্রয়োজন বলে মত দেন ওই কৃষি কর্মকর্তা।
আরএইচএফ/এসআর