For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ট্রাকচালক আল-আমিন হত্যা

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ছিনতাইকৃত রড উদ্ধার

Published : Wednesday, 24 April, 2024 at 11:03 AM Count : 361

পটুয়াখালীবাউফলে ট্রাকচালক আল-আমিন (৩৩) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছিনতাইকৃত নয় মেট্রিক টন রড উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

মঙ্গলবার রাতে উপজেলার দাসপাড়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে একতা এন্টারপ্রাইজের গোডাউন থেকে রডগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। 

আত্মগোপনে থাকা একতা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মাসুদ রানা রডগুলো ট্রাকের হেলপার হাসানের কাছ থেকে ক্রয় করেছিলেন বলে জানা যায়। ছিনতাইকৃত রড ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যস্থতা করেন দশমিনার মজিবর নামের এক ঠিকাদার। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের আবুল খায়ের ইন্ডাট্রিজের কারাখানা থেকে ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-৫১৩৮ নম্বরের ট্রাকটি ১৩ মেট্রিক টন রড নিয়ে বাউফলের কালিশুরী বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পরের দিন ১৮ এপ্রিল কালিশুরীর খান এন্টারপ্রাইজে রডগুলো আনলোড করার কথা। কিন্তু ১৮ এপ্রিল ট্রাকচালক আল-আমিনকে ফোন করে বন্ধ পান তার মামা মো. সবুজ। ২০ এপ্রিল দশমিনার নদীতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। 
পরে মামা সবুজ খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন ওই লাশ তার ভাগ্নে আল-আমিনের। ময়নাতদন্ত শেষে আল-আমিনের লাশ পরের দিন চাঁদপুরে নিয়ে দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে দশমিনা থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন আল-আমিনের মামা সবুজ। এরপরই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশের একাধিক টিম।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দশমিনা নৌ পুলিশের এসআই আল মামুন বলেন, ট্রাকচালক আল-আমিনকে খুন করে ঘাতকরা রডগুলো কালাইয়া বাজারের একতা এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদ রানার কাছে নগদ টাকায় বিক্রি করে দেয়। মাসুদ রানা ওই রডগুলো গুদামে রেখে দেন। তদন্তের একপর্যায়ে নিশ্চিত হয়েই রডগুলো মঙ্গলবার রাতে ওই গুদাম থেকে জব্দ করা হয়। আর আল-আমিন হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক আত্মগোপনে থাকা ট্রাকচালকের সহকারী হাসানকে আটকের জন্য অভিযান চলছে। 

এদিকে, রড পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ট্রাকটি পুলিশ বাকেরগঞ্জের বোয়ালিয়া বাহাদুরপুর এলাকা থেকে জব্দ করেছে। 

আল-আমিনের মামা সবুজ জানান, ছোটবেলায় আল আমিনের বাবা-মা মারা যান। এরপর থেকে তার কাছেই বড় হয় আল-আমিন। মামা সবুজের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব থানার লামছড়ি গ্রামে। বর্তমানে তিনি থাকেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা বউবাজার এলাকায়। সবুজ তার ভাগ্নেকে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ দিয়ে একটি ট্রাক কিনে দেন। মামার ট্রাক চালিয়ে আল-আমিন আয়-রোজগার করতেন। ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজার রনজিৎ মজুমদারের সঙ্গে চুক্তি করে রডগুলো বাউফলের কালিশুরী বন্দরে পৌঁছে দেয়ার জন্য আবুল খায়ের ইন্ডাট্রিজের ফ্যাক্টরী থেকে রওনা দেয় আল-আমিন। সঙ্গে ছিলেন সহকারী হাসান । হাসানের বাড়ি পটুয়াখালী হওয়ায় এই রুট তার চেনা ছিল। আল-আমিন প্রথম এই রুটে ট্রাক নিয়ে আসেন। 

তিনি জানান, আমার এতিম ভাগ্নেকে নির্মম ভাবে খুন করা হলো। আমি খুনিদের উপযুক্ত বিচার চাই। 

এদিকে, কালাইয়া গুদাম থেকে ছিনতাই হওয়া রড জব্দ করা হলেও রহস্যজনক কারণে একতা এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদ রানাকে আটক করেনি পুলিশ। 

ছিনতাইকৃত রড ক্রয়ের ব্যাপারে মাসুদ রানা সাংবাদিকদের বলেন, আমি মজিবর নামের এক ঠিকাদারের কাছ থেকে রডগুলো ক্রয় করেছি। তিনি (মজিবর) আমার পূর্ব পরিচিত। রডগুলো ছিনতাইকৃত কি না তা আমার জানা ছিল না। আল-আমিন হত্যাকাণ্ডের বিষয় আমি কিছুই জানি না। আমি নির্দোষ। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আল-আমিনকে পরিকল্পিত ভাবে খুনের পর রড ছিনতাই করা হয়েছে। আর ছিনতাইকৃত রড পাওয়া গেছে একতা এন্টারপ্রাইজে। সুতরাং একতা এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদ রানা কোনো ভাবেই দায় এড়াতে পারেন না।  

বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, বিষয়টি দশমিনা থানার। রড উদ্ধারের সময় আমরা সহযোগীতা করেছি মাত্র। এর বাইরে আর কিছুই বলতে পারছি না। 

এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি। তদন্তে যারা অপরাধী প্রমাণিত হবে তাদের প্রত্যেকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

-এএস/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,