ধর্ষণ-পর্ণোগ্রাফি মামলার আসামি গ্রেপ্তার
Published : Tuesday, 23 April, 2024 at 1:47 PM Count : 232
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি মামলার অন্যতম আসামি কানন মিয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ১৪ জামালপুরের আভিধানিক দল। মঙ্গলবার সকালে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার সকালে র্যাব সদস্যরা ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন উত্তরা ব্যাংকের সামনে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তারের পর নালিতাবাড়ী থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেন।
গ্রেপ্তারকৃত কানন মিয়া উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়নের মরিচপুরান মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
র্যাব সূত্র জানায়, ভিকটিমের বাবা পেশায় একজন রিকশাচালক। জীবিকার তাগিদে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে গাজিপুর চৌরাস্তায় বসবাস করেন। তার ছোট মেয়ে ভিকটিমকে একই এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে রাসেল মিয়ার সাথে বিবাহ দেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে শামীম নামের এক ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করে।
এদিকে নয় মাস পূর্বে ভিকটিমের স্বামী জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়া যান। স্বামী বিদেশে যাওয়ার পর থেকে ভিকটিম তার সন্তানকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। এমতাবস্থায় আসামি রাজিবের সাথে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর জের ধরে আসামি রাজিব অপর আসামি কানন মিয়ার সাথে পরামর্শ করে ভিকটিমের শ্বশুর বাড়িতে দেখা করতে আসেন। গত বছরের ১১ অগাস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে আসামি রাজিব ভিকটিমকে তার শ্বশুর বাড়িতে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। সে সময় অপর আসামি কানন মিয়া সুকৌশলে ঘরে ঢুকে তাদের ভিডিও চিত্র মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। ওই ভিডিও আসামি কানন মিয়া প্রধান আসামি রাব্বির মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে আসামি রাব্বি ও কানন মিয়া দু'জনেই ভিকটিমকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদানসহ কু-প্রস্তাব দিতে থাকেন। তাদের কু-প্রস্তাবে রাজি না হয়ে ভিকটিম তার সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। গত বছরের ১০ নভেম্বর ছেলে সন্তানটি হঠাৎ মারা গেলে ভিকটিমসহ সকলেই তাদের গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে থাকাবস্থায় আসামি রাব্বি ও কানন মিয়া ভিকটিমকে পূর্বের ধারণকৃত ভিডিও দেখিয়ে কু-প্রস্তাব দিতে থাকেন।
ঘটনার দিন গত বছরের ০৯ ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে আসামি কানন মিয়া ফোন করে বলেন, তাদের মোবাইলে থাকা ধারণকৃত ভিডিও ভিকটিমের সামনে ডিলিট করে দেওয়া হবে। তাই তাকে আসামি রাব্বির বাড়িতে আসতে হবে। সরল বিশ্বাসে কানন মিয়ার কথামতো রাব্বির বসতঘরে গেলে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দু'জনেই পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করেন। এই দৃশ্য আবার আসামি কানন মিয়া তার মোবাইলে ধারণ করেন। এ বিষয়ে কাউকে কোনো কিছু না বলার জন্য বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়।
পরবর্তীতে ভিকটিমের ভিডিও চিত্র আসামিদ্বয় এলাকার বিভিন্ন লোকের মোবাইলে ছড়িয়ে দিলে বাদির ছোট ভাই নূরুল আমিন ওই ভিডিও চিত্রটি দেখেন। পরে ঘটনা জানালে ভিকটিমের বাবা নালিতাবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে রাব্বি গ্রেপ্তার এড়াতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর আবরার ফয়সাল সাদীর নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল সোমবার সকালে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন উত্তরা ব্যাংকের সামনে অভিযান পরিচালনা করে মামলার অন্যতম আসামি কানন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেন।
-এমএস/এমএ