For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

রাজশাহীতে চিনির চেয়ে ৪০ গুণ বেশি মিষ্টি স্টেভিয়ার চাষ

Published : Friday, 22 March, 2024 at 7:33 PM Count : 318


চিনির চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ গুণ বেশি মিষ্টি পাতা। আবার একই পাতা শুকিয়ে পাউডার তৈরি করলে মিষ্টতা বেড়ে যায় প্রায় ৫০ গুণ। অর্থাৎ চিনির চেয়ে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি-এই উদ্ভিদটির নাম স্টেভিয়া। স্টেভিয়াকে অনেকেই প্রাকৃতিক চিনি বলে থাকেন। তুলশির মত দেখতে স্টেভিয়ার পাতা ‘মধুপাতা’ বা ‘চিনিপাতা’ নামেও পরিচিত।

ডায়াবেটিকে আক্রান্ত অনেকেই খেয়ে থাকেন চিনির বিকল্প হিসেবে। বিশ্বের অনেক দেশের মানুষ চিনির পরির্বতে স্টেভিয়া ও এর নির্জাস খেয়ে থাকেন।

বেশি মিষ্টি ও ওষুধি গুণসম্পন্ন হওয়ায় স্টেভিয়া সম্ভাবনাময় শস্য হিসেবে দেখছে- বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং রাজশাহী কৃষি অফিস। তার অংশ হিসেবে রাজশাহীর পবা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় স্টেভিয়ার চাষ শুরু হয়েছে কৃষক পর্যায়ে।
স্টিভিয়া সাধারণত কফি বা চায়ের সঙ্গে বেশি মিষ্টি স্টিভিয়া পাউডার ব্যবহার করা যায়। লেবুর শরবত বা অন্য কোনও পানীয় প্রস্তুত করতেও চিনির বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে স্টিভিয়া গুঁড়ো। পাতার গুড়ো দিয়ে মিষ্টান্ন তৈরি করে ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারবেন। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত এই ঔষধী গাছের কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এখনোও জানা যায় নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোপণ থেকে শুরু করে সঠিকভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে উৎপাদন করা সম্ভব হলে এই ফসলটি সম্ভাবনাময়। প্রতিকেজি কাঁচা অথবা শুকনাপাতার গুড়া দুই থেকে চার হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ফলে হেক্টর প্রতি বছরে বেশি মিষ্টি স্টেভিয়া চাষ করে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। একসময় ব্রাজিলে এই বেশি মিষ্টি স্টেভিয়ার বেশি উৎপাদন হলেও বর্তমানে চিন বেশি উৎপাদন করছে।

তবে চিনির চেয়ে বেশি মিষ্টি হলেও স্টেভিয়া মেশানো খাবারে একটা তিতা স্বাদ থাকে। তাই স্টেভিয়া দেশি চিনির স্থান দখল করতে পারেনি। সংশ্লিষ্টরা চেষ্টা করছেন- তিতা ছাড়া চিনির মত স্বাদ আনতে।

জানা গেছে, পরীক্ষামূলক চাষে সফলতার পর কৃষক পর্যায়ে স্টেভিয়া চাষ ছড়িয়ে দিতে চারা উৎপাদন শুরু করে সুগার ক্রপস গবেষণা ইনস্টিটিউট। প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় কৃষকদের। রাজশাহীর পবা উপজেলার কাশিয়াঙ্গায় কয়েকজন কৃষক।

এই স্টেভিয়া চাষের আওতায় এসেছেন। টিস্যুকাল পদ্ধতিতে এর চারা উৎপাদন করা হয়েছে। স্টেভিয়া সারা বছরই জমিতে রোপণ করা সম্ভব। তাই কৃষক চাইলে বছরের যে কোনো সময় এর চারা জমিতে রোপণ করতে পারবেন।

পবার কৃষক আতাউর রহমান রেন্টু বলেন, এটি বিনা খরচের ফসল। বর্তমান সময়ে কচু চাষ করলেও কিটনাশক ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু বেশি মিষ্টি স্টেভিয়া চাষে কোনো ধরনের কিটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। তবে নিয়মিত সেচ দিতে হয়। তিনি স্টেভিয়ার চারা উৎপাদন করেছেন। সেই চারা কৃষকদের মাঝে বিক্রি করবেন।

তিনি আরও বলেন, এটি একটি সম্ভাবনাময় ফসল। কারণ এটিতে কোনো ধরনের খরচ নেই। চলতি বছরে এক একর জমিতে বেশি মিষ্টি স্টেভিয়ার চাষ করবেন তিনি। তার দাবি- যেহেতু নতুন ফসল এটি। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি জেনে তার কাছে সম্ভাবনাময় মনে হয়েছে। স্টেভিয়ার চাষ হলে রাজশাহীতেও বাজার তৈরি হবে বলে তিনি আশা করেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার ফারজানা তাসনিম বলেন, এখন সেইভাবে রাজশাহীতে স্টেভিয়ার চাষ শুরু হয়নি। একজন চাষি শুরু করেছেন। কিছুদিন আগে স্টেভিয়া চাষে কৃষকদের আগ্রহী করতে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই) কৃষকদের মাঝে দিয়েছে। চিনির থেকে বেশি মিষ্টি। চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তাই সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে উৎপাদন করা গেলে এই ফসলটি সম্ভাবনাময় হতে পারে।

বাংলাদেশ সুগার-ক্রপ-গবেষণা-ইনস্টিটিউট (ঈশ্বরদী ও পাবনা জোন) এর মহা-পরিচালক ড. মো. ওমর আলী বলেন, স্টেভিয়া একটি গুল্ম জাতীয় গাছ। এই পাতা চিনির চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ গুণ বেশি মিষ্টি। আবার এটি পাউডার তৈরি করলে ৫০ থেকে ৬০ গুণ চিনির চেয়ে বেশি মিষ্টি হয়। এটি একটি সম্ভাবনাময় ফসল। কৃষক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে কাজ করা হচ্ছে।

আরএইচ/এমবি

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,