কুলাউড়ায় মানবপাচারকারী চক্রের মূল হোতাসহ গ্রেপ্তার ২
Published : Wednesday, 13 March, 2024 at 11:20 PM Count : 242
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মানবপাচারকারী চক্রের মূল হোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ৭ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
বুধবার (১৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের কানেহাত গ্রাম থেকে তাদেরকে করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কানেহাত গ্রামের মাসুক মিয়া লেচুর ছেলে মো. শাহীন আলম (৪০) ও সাইদুর রহমান (৪৪)।
এপিবিএন সূত্র জানায়, মধ্যপ্রচ্যের সাধারণ প্রবাসী ও দেশের সহজ-সরল মানুষদের টার্গেট করে তাদের কাছ থেকে এক শ্রেণির দালাল এবং মানবপাচার চক্র দীর্ঘদিন থেকে ইউরোপের স্বপ্ন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন এক চক্রের মূল হোতা শাহীন আলম। সহযোগী হিসেবে রয়েছেন তার ভাই সাইদুর রহমান। তাদের খপ্পরে পড়ে নিস্ব হয়েছেন জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ডহর গ্রামের এলাইচ মিয়ার ছেলে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী ইসলাম উদ্দিনসহ কয়েকজন।
এ ঘটনার পর ইসলাম উদ্দিনের ভাই মাওলানা সালাহ উদ্দিন বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে ৭ এপিবিএন। একপর্যায়ে বুধবার সকালে অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারী দুই ভাই শাহীন ও সাইদুরকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার বাদী মাওলানা সালাহ উদ্দিন জানান, তার ভাই ইসলাম উদ্দিন ও শাহীন উদ্দিন নামে আরেক ভাই সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রমিকের কাজ করেন। মানবপাচারকারী শাহীন আলমও সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করার সুবাদে তার ভাইদের সাথে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে ইসলাম উদ্দিনসহ আরঈ ২০/২৫ জন প্রবাসীকে সেখান থেকে আমেরিকায় পাঠানো প্রলোভন দেখান শাহীন। তার প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে ইসলাম উদ্দিন আমেরিকায় যাওয়ার জন্য ১৮ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি করেন শাহীন আলমের সঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসে শাহীন আলমকে নগদ ৫ লাখ টাকা প্রদান করেন তিনি। টাকা পেয়ে শাহীন আলম জানায়, ইসলাম উদ্দিন যে মালিকের কাছে আছে তার কাছ থেকে আমেরিকা পাঠানো যাবে না। তাই ইসলাম উদ্দিনকে গত বছরের ১২ এপ্রিল দেশে পাঠিয়ে দেয় শাহীন। দেশে আসার পর শাহীনের সহযোগী তার ভাই সাইদুর রহমানের কাছে ইসলাম উদ্দিন জমি বিক্রি করে নগদ ৮ লাখ টাকা দেন।
একপর্যায়ে ইসলাম উদ্দিনকে সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে আমেরিকা নেওয়ার কথা বলে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়ে যায় শাহীন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তার চক্রের সদস্যদের কাছে ইসলাম উদ্দিনসহ আরও কয়েকজনকে জিম্মি করে রাখে। তাদের আমেরিকায় না পাঠিয়ে উল্টো তাদের পরিবারের কাছে আরও টাকা দাবি করে চক্রটি। গত বছরের ১০ নভেম্বর ইসলাম উদ্দিনকে ফের দেশে পাঠিয়ে দেয় তারা। ইসলাম উদ্দিনসহ বিভিন্নজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমেরিকার বদলে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ দেয় চক্রটি। অনেকেই লাখ লাখ টাকা খুইয়ে এখন পথে বসেছেন।
এপিবিএন’র মিডিয়া সেল কর্মকর্তা এএসআই পাবেল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তারের পর শাহীন ও সাইদুরকে কুলাউড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এসআরসি/এসআর