For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

শেকল বন্দি জীবন এসএসসি পরীক্ষার্থীর

Published : Monday, 4 March, 2024 at 4:13 PM Count : 128

দু’পায়ে শেকল বেঁধে তালা লাগিয়ে পরীক্ষা হলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। পরীক্ষা শেষে আবার দু’পা বেঁধে তালা লাগিয়ে বাড়িতে নেয়া হয়। এভাবে বন্দী জীবন নিয়ে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর নেহাল উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে আলম মিয়া (১৬)। 

সে তিলাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। অথচ কিছু দিনই আগেও সে ছিলো একজন উচ্ছল স্বাভাবিক কিশোর। নিয়মিত স্কুলে যেত অবসরে বাপের আটো রিকসা চালিয়ে বাবাকে সহযোগিতা করতো এবং নিজের পকেট খরচের টাকা যোগাতো। 

আলম মিয়া উপজলার তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিমছাট গোপালপুর গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে। তার দাদু জসীম উদ্দিন জানান, এসএসসি পরীক্ষার সপ্তাহ খানেক আগে তার পিতা অটোচালক আব্দুল আলিম আটো চালিয়ে দুপুরে খাবারের জন্য বাড়িতে এলে আলম মিয়া ধামের হাট বাজার থেকে যাত্রী নিয়ে ভূরুঙ্গামারী বাসষ্ট্যান্ডে যায়। 

সেখানে যাত্রী নামিয়ে অন্য যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করার সময় অপরিচিত ৪ ব্যক্তি এসে সোনাহাট স্থলবন্দর যাবার জন্য ৪’শত টাকায় ভাড়া চুক্তি করে। এসময় ঐ ৪ ব্যক্তি কৌশলে অটোচালক আলম মিয়াকে একটি ছমুচা খেতে দেয় । ছমুচা খাবার একটু পরেই সে অসংলগ্ন আচরণ করতে থাকে। এ অবস্থা দেখে অন্যান্য আটোচালকরা সাহায্যে জন্য এগিয়ে এলে চক্রটি কৌশলে কেটে পরে। পরে একজন অটো চালক অটোসহ আলমকে বাড়িতে পৌছে দেয়। ওই অটো চালকের কাছে তিনি ঘটনা শুনেছেন বলে জানান। ধারণা করা হচ্ছে, অটো চোর চক্রের সদস্যরা অটোটি চুরি করার জন্য ছমুচার মধ্যে অজ্ঞান করার কোন কেমিকেল মিশিয়ে খাওয়ায় ছিলো। কিন্তু কেমিকেলের পরিমাণ মাত্রতিরিক্ত হওয়ায় এ আবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, এ ঘটনার পর থেকে আলমের মস্তিস্ক বিকৃতি দেখা দেয়। মাঝে মাঝে স্মৃতি শক্তি ফিরে পেলেও এবং স্বাভাবিক আচরণ করলেও অধিকাংশ সময় সে পাগলামী করে। বাড়ির জিনিস পত্র ভাঙ্গচুর করে। বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়িতে ফেরেনা। বিভিন্ন জায়গায় রাত্রি যাপন করে। 

এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে তার পায়ে শেকল বেঁধে আটকে রাখা হয়েছে। তার পিতা আব্দুল আলিম  জানান, দিনের বেলা এক পায়ে শেকল বেঁধে রাখা হয়। রাতে হাতে ও পায়ে শেকল বেঁধে বিছানায় শুয়ে রাখা হয়। তিনি জানান, এর মধ্যে একবার রংপুরে নিয়েছি ডাক্তারের দেয়া ঔষধ খাচ্ছে। কিন্তু তারপরও পাগলামী কমছেনা।  অর্থভাবে  উন্নত চিকিৎসা দিতে পারছিনা। তিনি বলেন, আমাকে ও ওর মাকে আলম কোনভাবেই সহ্য করতে পারেনা। তাই সবসময় দাদুকেই তার সঙ্গ দিতে হয়। পরীক্ষ কেন্দ্রের সচিব হারুন উর রশীদ জানান, ছেলেটি অসুস্থ হবার কারণে তাকে একটি আলাদা কক্ষে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। খাতায় লিখলেও মাঝে মাঝে চিল্লাচিল্লি করে, অশান্ত হয়ে যায় এবং লিখতে চায়না। 

এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ এএসএম সায়েম জানান, ছেলেটির সাথে কথা বলেছি, আমার মনে হয়ে সে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। দীর্ঘ মেয়াদি চিকিৎসায় সে ভালো হতে পারে।


এএইচ/এমবি   
  


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,