শীতের বিদায় বেলায় রাজশাহী মহানগরসহ উপজেলা পর্যায়ে সর্দি-কাশি ও জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। এতে একই পরিবারের অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। যেখানে শিশু ও বয়স্করাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ভুগছেন অন্য বয়সীরাও।
বিশেষ করে করোনা পরবর্তী সময়ে সামান্য ঠাণ্ডা-জ্বরেও বেশ ভুগাচ্ছে মানুষকে। একারণে শিশু ও বয়স্কদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি যত্ন নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, শীতের বিদায় বেলায় দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান বাড়ছে। এরমধ্যে হঠাৎ বৃষ্টিও ঝরছে। একারণে ভাইরাসজনিত জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। এই জ্বর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনে ছড়াচ্ছে। সাধারণত তিন থেকে সাতদিন জ্বর, সর্দি ও কাশির তীব্রতা থাকছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের তথ্যমতে, গত ১৫ দিন আগে হাসপাতালে মোট রোগী ছিলো ২ হাজার ২০০ জন। যেখানে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী ছিলো ৪৪৫ জন এবং মেডিসিন ওয়ার্ডে ৬২৯ জন। যা গতকাল বৃহস্পতিবার যখাক্রমে শিশু ওয়ার্ডে ছিলো ৫২৬ জন এবং মেডিসিন ওয়ার্ডে ৬৮৪ জন। এদিন মোট রোগী ছিলো ২ হাজার ৭৪৩ জন।
সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, আবহওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসছেন। একারণে সপ্তাহখানেক ধরে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বুধবার মারা গেছেন পবা উপজেলার সোনাকান্দি এলাকার বাসিন্দা মন্টু ইসলাম (৭৫)। তার স্বজনরা জানান, মূলত ঠাণ্ডা-জ্বর নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলেন। সঙ্গে বয়সজনিত শারীরিক সমস্যাও ছিলো। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি মারা গেছেন।
পবার আরেক বাসিন্দা চম্বা বেগম বলেন, তার নাতনি গত কয়েকদিন ধরেই সর্দি-জ্বরে ভুগছে। বাসার অন্য সদস্যরাও সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত। স্থানীয় ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনেই খাওয়ানো হচ্ছে। কমছে আবার বাড়ছে। আবহওয়ার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে জানিয়েছে ডাক্তার।
রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, আবহওয়ার পরিবর্তনের সময় ফ্লু এর প্রকোপ বাড়ে। এবারও বেড়েছে। আর রাজশাহীতে স্বল্প দিনের ব্যবধানে দুইবার বৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রকোপ বৃদ্ধির শঙ্কা বেড়ে যায়। সুতরাং সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে।
বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং যাদের অ্যাজমা, হাঁপানি, ব্রংকিওলাইটিস ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তাদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে। এসময়টাই ফলমূলসহ গরম খাবার বেশি খেতে হবে। শরীরে শক্তি যোগায় এমন খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। আর জটিলতা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, উপজেলা পর্যায়ে সর্দি-জ্বর মহামারী আকার ধারণ না করলেও প্রকোপ বেড়েছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। শিশুদের বিষয়ে যন্ত্রবান হতে বলা হচ্ছে। এছাড়া ওষুধসহ পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা আছে।
এফএ/এমিব