গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ইদিলপুর টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ খাজা মন্ডলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তার এই অনিয়মের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে শিক্ষ-কর্মচারী ও স্থানীয়রা।
সম্প্রতি ওই অধ্যক্ষ খাজা মন্ডলের বিরুদ্ধে সাদুল্লাপুর ইউএনও বরাবরে অভিযোগপত্রও দাখিল করা হয়েছে।
জানা যায়, ইতিপূর্বে ইদিলপুর টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সেতারা বেগম।
একই সঙ্গে তিনি লক্ষীপুর রহিমা খাতুন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। বর্তমানে নিয়োগ ছাড়া অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারই স্বামী খাজা মিয়া। আর এই খাজা মন্ডল স্থানীয় মহিপুর বাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
এরই মধ্যে খাজা মন্ডল তার পিতাকে সভাপতি বানিয়ে একটি ভুয়া কমিটি গঠন করেন। এরপর সেই সভাপতি মারা গেলেও এখনো গঠন করা হয়নি এডহক কমিটি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই কলেজটি গত ২০১৯ সালে এমপিওভুক্ত হয়। প্যাট্যান্ট অনুযায়ী শিক্ষক রয়েছে প্রতিষ্ঠানে। তা সত্বেও এমপিও হওয়ার পর অধ্যক্ষ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে একই পদে পুনরায় অপর দুই প্রার্থীকে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ নিয়ে মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে মামলা রুজু করলে বাদি পক্ষে আদেশ জারি হয়। কিন্ত খাজা মন্ডল নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করলেও কাম্য যোগ্যতা ও মাষ্টার্স পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাসনদ না থাকায় অধ্যক্ষ নিয়োগ নেয়া সম্ভব হয়নি বলে জানা যায়।
এছাড়াও খাজা মন্ডল মহিপুর বাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক হিসেবে বিল ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তার স্ত্রী সেতারা বেগমকে অনেক সময়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়।
অথচ সেতারা বেগম স্থানীয় লক্ষীপুর রহিমা খাতুন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এমপিও ভুক্ত নিয়মিত শিক্ষক।
অপরদিকে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্তির ৫ বছর অতিবাহিত হলেও শুধুমাত্র একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী বেতন-ভাতার সুবিধা পাচ্ছে। কলেজের আর কোন শিক্ষক-কর্মচারী বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
নামকাওয়াস্তে অধ্যক্ষ খাজা মন্ডল সকল স্টাফদের মুল নিয়োগ রেজুলেশনসহ যাবতীয় কাগজপত্র তার কব্জায় রেখে শিক্ষকদের হয়রানি করে গা ঢাকা দিয়ে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি সময়ে সভাপতির মৃত্যু হওয়ায় পুনরায় তার মদদ পুষ্ট কমিটি গঠন করার জন্য গোপনে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া খাজা মন্ডলের বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রমের জন্য কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ন সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ স্বাক্ষরিত একটি পত্র ড. রেজা হাসান মাহমুদকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কলেজের অভিযুক্ত খাজা মন্ডল বলেন, কলেজ কমিটির মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি। এ কমিটির সভাপতির মৃত্যুতে শূন্য পদপূরণে বোর্ডের অনুমোদন নেওয়া হবে। এছাড়া আগে যে স্কুলে শিক্ষক ছিলাম সেখানে ২০১৯ সাল থেকে বেতন উত্তোলন করছি না।
আর কলেজটির অধ্যক্ষ আমি নিজেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, ওই কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা বিচারধীন রয়েছে। সেটি সংশ্লিষ্টকে জানানো হয়েছে।
সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাওছার হাবীব বলেন, ওই কলেজের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টিএইচ/এমবি