For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

২৪ বছরেও জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের দাবি পূরণ হয়নি

Published : Wednesday, 14 February, 2024 at 1:40 PM Count : 1284

পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন ও বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অতুলনীয় ও অসাধারণ জীব-বৈচিত্র্য ভরপুর এখানে। এটি শুধু বাংলাদেশের মানুষের কাছে নয়, বিশ্বের প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান। সুন্দরবন প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলীর অন্যতম। সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কোর ২১তম অধিবেশনে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রয়ারিকে  ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়। এ বনের জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতি বছর ১৪ ফেব্রয়ারি পালিত হয়ে আসছে সুন্দরবন দিবস। এরই ধারাবাহিকতায় আজ পালিত হচ্ছে ২৪তম সুন্দরবন দিবস। উপকূলীয় এলাকায় দিবসটি পালিত হয়ে আসছে গেল ২৩ বছর ধরে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেষ্ট এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. ওয়াসিউল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানিতে দিনে দুইবার প্লাবিত হয় সুন্দরবন। এই বনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগই হচ্ছে জলাভূমি। সুন্দরবনের মোট আয়তনের ৫২ ভাগই এখন ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইট (বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা)। বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই জলাভূমি ‘রামসার’ এলাকা হিসেবে স্বীকৃত। 

তিনি বলেন, সুন্দরবনে রয়েছে পাঁচ হাজার প্রজাতির সম্পূরক উদ্ভিদ, ১৯৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১২৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি, ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ও ৩০ প্রজাতির চিংড়ি মাছ। সুন্দরীসহ এই বনে রয়েছে ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল ও ১৩ প্রজাতির অর্কিড। বাঘ, হরিণ, কুমির, শুকর, গোখরো, বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিনসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও ২১০ প্রজাতির মৎস্য সম্পদ। বিশ্বের অন্যান্য ম্যানগ্রোভ বনের তুলনায় সুন্দরবন জীব-বৈচিত্র্য অধিকতর সমৃদ্ধ। তাই সুন্দরবনকে বলা হয় জীব-বৈচিত্র্যের পাঠশালা। সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি। তাই সরকারি ভাবে দিবসটি পালন করা ও স্বীকৃত হওয়া উচিত। যাতে সুন্দরবন সংরক্ষণে আরও বেশি সচেতন করা যায়। তবে এর সঙ্গে জড়িতরা সংরক্ষণের অংশ হতে পারেন। এর ফলে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মানুষের অর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি করতে পারবে।
সুন্দরবন রক্ষায় 'আমরা' নামক সংগঠনের সমন্বয়কারী মো. নুর আলম শেখ বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হচ্ছে সুন্দরবন। প্রাণ-বৈচিত্র্যে ভরপুর এই বন লাখো মানুষের জীবিকার সংস্থান করে চলেছে। ঝড়-জ্বলোচ্ছাসে এখনও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে বাঁচাতে সুন্দরবনের ভূমিকা অপরিসীম। বনের প্রতি অতি-নির্ভরতা এবং মানুষের নির্বিচার আচরণে দিন দিন বিপন্ন হচ্ছে এর পরিবেশ ও প্রতিবেশ। প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মায়ের মত উপকূলের কোটি-কোটি মানুষকে নিরাপদে আগলে রাখে। জলবায়ু পরিবর্তনে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি ও পরিবেশ দূষণসহ নানা কারণে সুন্দরবন এখন নিজেই ভালো নেই। তাই সুন্দরবনকে ভালোবেসে প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস ঘোষণা করার দাবি জানাচ্ছি আবারও।

তিনি বলেন, সরকারি ভাবে এ দিবসটি পালিত হলে সুন্দরবনের প্রতি সবার ভালো বাসা বাড়বে। সচেতন হবে সবাই।

প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসেন বলেন, সরকারি ভাবে ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস ঘোষণা করা হয়নি এখনো।  

বিভিন্ন সংগঠনের এ দাবি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি পাঠাইনি। এর আগে কেউ পাঠিয়েছে কি না জানিনা। যেহেতু সরকারি ভাবে দিবসটি ঘোষণা করা হয়নি, তাই বন বিভাগ এটি পালন করছে না।

-জেইউ/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,