For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

দাদনের টাকা পরিশোধের দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন জেলেরা

Published : Saturday, 27 January, 2024 at 4:20 PM Count : 205


উপকূলীয় অঞ্চল বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের সাগরে মাছ ধরা জেলেরা দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন। একদিকে  সাগরে মিলছেনা ইলিশসহ অনন্য প্রজাতীর মাছ, অন্যদিকে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অগ্রিম নেওয়া টাকা ফেরতের দুশ্চিন্তা।  

শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুটিখালী, বারইখালী, বলইবুনিয়া, পঞ্চকরণ, চিংড়াখালী, খাউলিয়া ও সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে নিবন্ধিত প্রায় সাড়ে ৮ হাজার জেলে পরিবার সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল। অনেকে পৈত্রিক সূত্রে এ পেশায় নিয়োজিত। বাপ দাদারাও সাগরে মাছ ধরেছেন।  জীবন-জীবিকার তাগিদে এখন সেখানে ছেলে বা তার নাতি মাছ ধরছে।

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক পেশার মানুষের জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন হলেও জেলে পল্লীদের জীবনযাত্রার কোনো পরিবর্তন হয়নি। পরিবার পরিজন নিয়ে কোনমতে খেয়ে পরে বেঁচে আছেন। শিক্ষার ক্ষেত্রেও ছেলেমেয়েদের তেমন একটা লেখাপড়া করাতে পারছেন না। সংসারের চাকা ঘুরাতে সন্তানেরা একটু বেড়ে ওঠার সাথে সাথেই পিতার সাথে যাচ্ছে সাগরে মাছ ধরতে। 
এ মৌসুমে তারা ছোট বড় একাধিক ট্রলার ও নৌকা যোগে এক একটি গ্রুপে ৫০ থেকে ১০০ জেলে শ্রমিক নিয়ে শরণখোলা রেঞ্জের অধিনে সমুদ্র তীরে শেওলা, নারিকেল বাড়িয়া, মাজের কেল্লা, দুবলা, মেহের আলী ও আলোর কোল চর অঞ্চলে মাছ ধরে  আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। 

নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এ চারমাসে শীতকালিন শুটকি ব্যবসার সাথে জড়িত এসব ব্যবসায়ীরা খুলনা, শরিয়তপুর ও চট্রগ্রামের বিভিন্ন মহাজনদের কাছ থেকে অগ্রিম ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত দাদন নিয়ে মাছ ধরতে যায় সাগরে। 

জেলেরা শীতকালিন এ মৌসুমে ছুরি, লঠিয়া, বৈরাগী, চিংড়ি, ফ্যাসা ও পোমা ভোল মাছ সংগ্রহ করে। এসব মাছ শুকিয়ে দাদন নেওয়া ব্যবসায়ী আড়ৎদারদের কাছে বিক্রি করতে হয় তাদের। প্রাকৃতিক দুর্যোগ জলোচ্ছ্বাস সহ বিভিন্ন কারনে  ব্যবসায় লোকসান  দিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয় বাড়িতে। দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অগ্রিম নেওয়া টাকা কীভাবে পরিশোধ করবে দুশ্চিন্তায় পড়েছে এসব জেলে পরিবারের সদস্যরা। এদের মধ্যে অনেক জেলেই আবার বাদ পড়ছেন চালের তালিকা থেকেও।

তবে এ পেশায় নিয়োজিত সকল জেলেকে  সরকারিভাবে বিনা সুদে অথবা স্বল্প সুদে ব্যাংক থেকে ঋণের ব্যবস্থা করা হলে  দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে দেনার দায়ে আর জিম্মি হতে হবে না এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

কথা হয়, জেলে পল্লীর ফারুক মোল্লা, মনির মৃধা, খালেক সরদারসহ অনেকেই বলেন, এ বছর সাগরের অবস্থা খুবই নাজুক, জালে ইলিশ সহ অন্যান্য মাছ তেমন একটা ধরা পড়ছে না। বড় নৌকার মাছ সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা বিক্রি হয়েছে। অথচ দাদন নেওয়া হয়েছে দেড় লাখ টাকা। মহাজনের কাছে ৫০ হাজার টাকা দেনাগ্রস্ত হয়ে আছি। সরকারিভাবে বছরে ৪ মাস ১৬০ কেজি করে চাল পেলেও তা আবার ভাগ বাটোয়ারা দিতে হয়। টাকা দিতে না পারলে তালিকায় নাম যাচ্ছে না অনেকের। স্থানীয় নির্বাচনের গ্রুপিংয়ের জের ও তুলছেন অনেক জেলেদের ওপর। এসব কেউ দেখেও না দেখার ভান করে।আমাদের কস্টের কথা কাকে বলব।


এ সম্পর্কে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, এ উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৪০০ জন। এর মধ্যে চালের সুবিধা পাচ্ছেন ৫০ ভাগ জেলেরা। সবাইকে এর আওতায় আনা যাচ্ছে না। তবে পর্যায়ক্রমে সকল জেলে এ সুবিধার আওতায় আসবে। তালিকা তৈরি করার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই। তবে স্থানীয় পর্যায়ে কেউ যদি কোন অনিয়মের সাথে জড়িত থাকে আমরা খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

একে/এমবি

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,