For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

নদীর চরে ফসলের সমারোহ

Published : Saturday, 27 January, 2024 at 2:23 PM Count : 296

লালমনিরহাটেপাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নদীর বিস্তৃত চরে নানা ফসলের সমারোহ। এ উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের সানিয়াজান, কুচলিবাড়ী ইউনিয়নের সিংগীমারী দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা, পাটগ্রাম পৌরসভা, জগতবেড় ও জোংড়া ইউনিয়নের ধরলা নদীতে চর জেগে উঠেছে প্রায় ১৩০ হেক্টর জমি। এসব চরাঞ্চলে চলছে চাষাবাদ। 

গত কয়েক বছরের চেয়ে এবারে দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরে সর্বাধিক আবাদ হচ্ছে। এ চাষাবাদে দেড় হাজারেরও অধিক মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র মতে, তিস্তা ও ধরলা নদী বাংলাদেশ-ভারতের আন্তঃসীমান্ত নদী। এ নদী দুটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলা হয়ে প্রবাহিত। গতিপথ পরিবর্তন করে লালমনিরহাটের দহগ্রাম ইউনিয়নের বৃহৎ অংশ জুড়ে বয়ে চলেছে তিস্তা। অপরদিকে ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ধরলা নদী। পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অংশ জুড়ে প্রবাহিত হয়ে আবারও ভারতে ঢুকেছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নানা ভাবে এ নদীগুলোর পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। আবার প্রতি বছরে বর্ষায় অতিবৃষ্টি, পাহাড়ী ঢলের পানি ছেড়ে দেয়। এতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে নানা ক্ষয়ক্ষতি হয়ে ভোগান্তিতে পড়ে অসংখ্য মানুষ। গত বছরের ০৪ অক্টোবরে ছেড়ে দেওয়া তিস্তা নদীর পানিতে দহগ্রামে প্রবল বন্যা দেখা দেয়। প্রতি বছর দহগ্রামের জমি ভেঙে বিলীন হয় তিস্তায়। জেগে ওঠে মাইলের পর মাইল বালুর চর। এসব বালুর চরে এবারে অধিক পলি পড়েছে। জমি ও বালুর চরের দাবিদার স্থানীয় গ্রামবাসীরা এ বছরে অনেক বেশি চাষাবাদ করছে। 
স্থানীয়রা জানান, দহগ্রামের তিস্তা নদীর দৈর্ঘ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার ও প্রস্থে ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার চর জুড়ে চলছে চাষাবাদ। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একরের পর একর আবাদ করা হয়েছে ভুট্টা, চরিষা, গম, পেঁয়াজ, বাদাম, আলু, মরিচ, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন শাক-সবজি। এসব ফসলের ক্ষেতে কাজ করছেন কৃষক পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও অন্য কয়েকশত কৃষি শ্রমজীবীরা। কেউ সাময়িক ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র (শ্যালো মেশিন) দিয়ে ক্ষেতে পানি দিচ্ছেন। কেউ খেতে নিড়ানি করছেন। আবার কেউ আগাছা তুলছেন এভাবে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কৃষি কাজ। ক্ষেতের পরিচর্যায় সকালে মাঠে যান, সঙ্গে নিয়ে যান খাবার ও পানি। ক্ষেতের আইলেই খেয়ে কাজে ফেরেন চরের কৃষকরা। 

তিস্তা নদীর অববাহিকা সীমান্তে রয়েছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের (বিএসএফ) বেশ কয়েকটি ক্যাম্প। সবসময় এসব ক্যাম্পের একাধিক টহল দলের সৈনিকরা পালাবদল করে চরে বাংলাদেশিদের আবাদ করা ক্ষেতের পাশেই ভারতীয় অংশে সর্তক প্রহরায় থাকতে দেখা গেছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাটগ্রাম উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, এবারে উপজেলার দহগ্রাম তিস্তার চর ও জগতবেড় এবং জোংড়া ইউনিয়নের ধরলা নদীর চরাঞ্চলে ভুট্টা আবাদ হচ্ছে ৬৫ হেক্টর জমিতে। একইসঙ্গে গম ২৫ হেক্টর, আলু ১৫ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া আট হেক্টর, মরিচ ছয় হেক্টর, চিনাবাদাম পাঁচ হেক্টর ও মিষ্টি আলু চার হেক্টরসহ বিভিন্ন জমিতে নানা ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। এতে এক হাজার ৬৫৩ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন হবে। 

বাউরা ইউনিয়নের কৃষক মতিয়ার রহমান ও হাবিবুল হক বলেন, ‘সানিয়াজান নদীর চরে আমরা এ বছর ধান, সরিষা, ভুট্টা ও পেঁয়াজ আবাদ করেছি। চড়ে পলি পড়ায় ফসল ভালো  হয়েছে। আমরা খুব খুশি।’

দহগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক এরশাদ বলেন, ‘তিস্তা নদী দীর্ঘদিন ধরে ভাঙছে। এবারে পলি বেশি পড়েছে। সবাই বিভিন্ন ফসল আবাদ করেছে, ক্ষেতও ভালো হয়েছে। ফলন ভালো হবে আশা করছি।’

এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল গাফ্ফার বলেন, ‘চলতি মৌসুমে নদীর চরগুলোতে পলি মাটি বেশি পড়েছে। এতে কৃষকরা বিভিন্ন প্রকার চাষাবাদ করছেন। ফসলও বেশ ভালো হয়েছে। ফলনও ভালো হবে। আমরা অনুমান করছি এসব চরে উৎপাদিত ফসলের মূল্য প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা হবে। উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে চরাঞ্চলে চাষাবাদে কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’   

-এমএইচ/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,