কুঠার দিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়েছে স্বামী
Published : Sunday, 21 January, 2024 at 3:16 PM Count : 723
শনিবার দিবাগত রাতে পৌরসভার হেলিপ্যাড এলাকায় নাপিতটারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত লতা রানী ওই এলাকার সত্য শীলের স্ত্রী। তাদের ঘরে রয়েছে দুই ছেলে সোহাগ (২৫) ও সাগর (১৮)।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বকুল চন্দ্র শীল বাদি হয়ে রোববার সকালে নাগেশ্বরী থানায় ঘাতক সত্য শীলের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ২৯ বছর আগে সত্য শীলের সঙ্গে চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ এর শচীন্দ্র শীলের মেয়ে লতা রানীর বিয়ে হয়।
নিহতের ছোট ছেলে সাগর জানায়, রাত আড়াইটায় বাবা-মায়ের ঘরে শব্দ শুনে ঘুম ভেঙ্গে যায় তার। বাইরে বের হতেই দেখে তার বাবার গায়ের কাপড় চোপড়ে লেগে আছে রক্তের দাগ। ঘরের বাইরে মাটিতে পড়ে চিৎকার চেচামেচি করছেন। বলছেন ২-৩ জন লোক এসে তার স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। ছেলেকেও একই কথা জানায় সে। এ কথা শুনে সাগর ঘরে গিয়ে দেখে বিছানায় পড়ে আছে তার মায়ের গলাকাটা রক্তাক্ত নিথর দেহ। খাটের নিচে রক্তমাখা কুঠার। ধারণা করা হচ্ছে- এ কুঠার দিয়ে স্ত্রী লতা রানীকে গলা কেটে হত্যা করেছে স্বামী সত্য শীল। পরে সাগরের চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসে। ততক্ষণে পরনের রক্তমাখা কাপড়-চোপড় খুলে পালিয়ে যায় ঘাতক স্বামী সত্য শীল।
সত্য শীলের মামাত ভাই প্রতিবেশি পরেশ শীল, কামিনী শীলসহ অনেকেই জানান, স্বামী-স্ত্রী সত্য ও লতা রানীর মধ্যে কোনো দিন তারা ঝগড়া হতে দেখেননি। তাদের বড় ছেলে সোহাগের বিয়ের আলাপ-আলোচনা চলছিল। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে ছেলের জন্য বউ দেখতে যাওয়ার বিষয়ে শনিবারও তারা দু'জন আলোচনা করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ কিভাবে এটি হয়ে গেল তার হিসেব তারা মিলাতে পারছেন না।
বড় ছেলে সোহাগ জানান, কিছুদিন থেকে তার বাবা মানসিক অসুস্থ্যতায় ভুগছিল। মাঝে মাঝে তিনি তাদের দুই ভাইকে বলেছে তার মাথা কাজ করে না। কিন্তু সে সমস্যা যে এতটা প্রকট হবে। যার করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে তার মাকে। এমন করুন পরিণতি নেমে আসবে তাদের সংসার তা ভাবতেই পারেনি। এ কথা বলেই হাউ-মাউ করে কেঁদে ওঠেন তিনি।
বোনের মৃত্যুর খবর শুনে ছুটে এসেছেন তার বড় ভাই অখিল শীল। বোনের মৃত্যুর শোক বুকে চেপে শোকাতুর দুই ভাগ্নেকে সামলানোর চেষ্টা করছেন তিনি। মিলাতে পারছেন না, কেন তার ভগ্নিপতি এ কাজ করলেন। তাদের মধ্যে তো কোনো ঝগড়ার কথা তিনি শোনেনি কোনো দিনও। তারপরও তিনি চান হত্যাকারী ধরা পরুক বেরিয়ে আসুক সঠিক ঘটনা।
মামলার বাদি বকুল শীল জানান, জানি বোনকে আর ফিরে পাব না। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে ঘাতক ভগ্নিপতি সত্য শীলকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
নাগেশ্বরী থানার ওসি (তদন্ত) সারওয়ার পারভেজ জানান, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামিকে ধরার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
-কেএস/এমএ