তেঁতুলিয়ায় তৃতীয় দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে
Published : Thursday, 18 January, 2024 at 11:38 AM Count : 198
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আবারও তাপমাত্রা নেমেছে ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দ্বিতীয় দফার তিন দিন পর তৃতীয় দফা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলো। শীতের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে উত্তরের সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়। শীতের কারণে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ভোর ৬টায় একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ তাপমাত্রা রেকর্ডের মধ্য দিয়ে তৃতীয় দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এ জেলায়।
সকালে তাপমাত্রা রেকর্ডের তথ্যটি জানান জেলার প্রথম শ্রেণীর তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যানুযায়ী, নতুন বছরের ০৩ জানুয়ারী থেকে ০৭ জানুয়ারী পর্যন্ত ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। তার মধ্যে ০৩ জানুয়ারী ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি, ০৪ জানুয়ারী ৮ দশমিক ৪, ০৫ জানুয়ারী ৮ দশমিক ৪, ০৬ জানুয়ারী ৯ দশমিক ৭, ০৭ জানুয়ারী ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়ে প্রথম দফায় মাঝারি ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়েছে। দ্বিতীয় দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হয়েছিল গত ১৩ জানুয়ারী ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি ও ১৪ জানুয়ারী ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ডে।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আজও ভোর থেকেই মেঘ-কুয়াশার আবরণে এ প্রান্তিক উপজেলা। কুয়াশা আর হিম বাতাসে ঝরছে বরফ শীত। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা। নিম্নআয়ের পেশাজীবীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। সময় মতো কাজে যেতে না পারায় কমে গেছে দৈনন্দিন রোজগার। অভাব-অনটনে পড়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। শহরের মানুষজন প্রয়োজনের বাইরে ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে নিম্নআয়ের মানুষগুলো শীত উপেক্ষা করেই কাজে বেরিয়েছেন। শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষদের মিলছে না প্রয়োজনীয় গরম কাপড় কাপড়। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে তাদের।
বিপাকে পড়েছেন চাষিরাও। তারা জানান, ঠান্ডার প্রকোপের কারণে ক্ষেত-খামারে কাজ করতে পারছেন না। বীজতলা কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। চরম বিপাকে পড়েছেন আলু চাষিরা। তীব্র শীতের কারণে ক্ষেতের আলুতে ছত্রাকের আক্রমণ বেড়েছে। পাতা কুকড়ে যাচ্ছে। অতিমাত্রায় শীতের কারণে গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর্লি ব্লাইট দেখা দেয়ায় ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সমস্যা মোকাবেলা করতে গিয়ে ২-১ দিন অন্তর অন্তর ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে।
এদিকে, শীতের কারণে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগ। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন এ জনপদ। ঘন কুয়াশার কারণে গতকালও দেখা মিলেনি সূর্য। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে যে বায়ু প্রবাহিত হওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি এ জনপদের সব বয়সী মানুষজন শীত দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
-এসকে/এমএ